মিড-ডে মিলের রান্না নিয়ে সংঘর্ষের জেরে সিপিএমের পাণ্ডবেশ্বর লোকাল কমিটির সম্পাদক মানিক রুইদাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে তাঁর সঙ্গে ধরা হয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা পবন রুইদাসকেও।
বৃহস্পতিবার বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরে বৈদ্যনাথপুর মুচিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’পক্ষে সংঘর্ষ হয়েছিল। তার জেরেই দু’জনকে ধরা হয়েছে। কিন্তু এ দিনই ফের বৈদ্যনাথপুর পঞ্চায়েতের রুইদাসপাড়ায় সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। সিপিএমের অভিযোগ, মিথ্যা অভিযোগে তাদের নেতাকে ধরা হয়েছে। পুলিশ অবশ্য তা মানতে চায়নি। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ ওই স্কুলের অদূরে সিপিএম-তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। তৃণমূলের পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সভাপতি নরেন চক্রবর্তীর অভিযোগ, সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক মানিক রুইদাস ও তাঁর ছেলে সোমনাথ রুইদাসের নেতৃত্বে এক দল সিপিএম সমর্থক তৃণমূল নেতা বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে চড়াও হয়। বাড়ি ভাঙচুরও করা হয়। খবর চাউর হতেই স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা সেখানে জড়ো হলে ফের দু’দলে বচসা শুরু হয়ে যায়।
সিপিএমের বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য তুফান মণ্ডলের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায়, পবন রুইদাসদের নেতৃত্বে এক দল তৃণমূল সমর্থক স্কুলের কাছেই রুইদাস পাড়ার একটি ক্লাব দখল করতে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনার প্রতিবাদ করলে ওই তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের মারধর করেন।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার সকালে। স্কুলে রান্নার তোড়জোড় চলছে এমন সময় হঠাৎ-ই এক দল মহিলা বৈদ্যনাথপুর প্রাথমিক স্কুলে হাজির হন। তৃণমূলের অভিযোগ, তৃণমূলের ৮ জন ও সিপিএমের ৪ জনকে দিয়ে মিড ডে মিল রান্নার কাজ করানো হবে বলে ঠিক হয়েছিল। অথচ, সেই মতো তাঁদের ৮ জন সমর্থক কাজ করতে গেলে সিপিএমের অঞ্চল সম্পাদক মানিক রুইদাসের নেতৃত্বে বেশ কিছু লোকজন তাঁদের বের করে দেয়। অভিযোগ, খবর পেয়ে তৃণমূলের কর্মীরা সেখানে প্রতিবাদ জানাতে গেলে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁদের মারধর করেন। তবে তুফানবাবুর কথায়, “মানিকবাবু কোনও ভাবেই ওই ঘটনায় যুক্ত নন। তবুও তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। রাজ্য জুড়ে এমনই চলছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ঘটনার পরে সংশ্লিষ্ট সকলের সহায়তায় একটি সর্বদল বৈঠক ডেকে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা শুরু হয়েছিল। তার আগেই ফের এই মারামারির ঘটনা। বৃহস্পতিবার দু’পক্ষই পাণ্ডবেশ্বর থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে আক্রমণের অভিযোগ দায়ের করে। তারই ভিত্তিতে দু’দলের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিকে, বৃহস্পতিবার স্কুলে মারামারির ঘটনায় মিড-ডে মিল রান্না হয়নি। পড়ুয়ারা বাড়ি চলে যায়। শুক্রবার ঘটনাটি স্কুলের বাইরে হলেও প্রধান শিক্ষক স্কুলে ছুটি ঘোষণা করে দেন। |