জমির দাম বাড়ানোর দাবিতে অন্ডালে বিমাননগরী নির্মাণে বাধা দিয়েই চলেছেন কিছু জমিমালিক। শুক্রবার এঁদের দু’টি সংগঠনের তরফে বর্ধমানের অন্ডাল ব্লক অফিসে বিক্ষোভ দেখানো হয়। যা পরিস্থিতি, তাতে সিঙ্গাপুরের সংস্থা চাঙ্গি এই প্রকল্প ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
এ দিন ব্লক অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে বিডিও-র হাতে দাবিপত্র দেয় জমিমালিকদের দু’টি সংগঠন ‘অন্ডাল ব্লক কৃষক ও খেতমজুর সংগ্রাম কমিটি’ এবং ‘দুবচুড়ুরিয়া কৃষক স্বার্থরক্ষা কমিটি’। তাদের আপত্তি মূলত অধিগ্রহণের জন্য চিহ্নিত ১৯২ একর জমি নিয়ে। দুই সংগঠনের অভিযোগ, জাতীয় সড়কের বেশ কাছে থাকা ওই জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া প্রায় সম্পূর্ণ। কিন্তু রাজ্য সরকারের ধার্য করা দাম নিয়ে আপত্তি থাকায় জমিমালিকেরা এখনও চেক নেননি। |
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বছরখানেক আগে জমির দর ঠিক করতে সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেছিল রাজ্য সরকার। সেখানে জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা মত দেন, জমির দাম আরও বাড়ানো যেতে পারে। অন্যথায় অধিগ্রহণে সমস্যা হতে পারে। ব্লক কংগ্রেস নেতা রবীন মিত্রের দাবি, “রাজ্য যে দাম বেঁধে দিয়েছে, জেলার অফিসারেরা তার বিরোধিতা করেছিলেন। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা হতে পারে বলেও তাঁরা সতর্ক করেন।”
এসইউসি নেতা তথা ‘অন্ডাল ব্লক কৃষক ও খেতমজুর সংগ্রাম কমিটি’র আহ্বায়ক দোনা গোস্বামীর অভিযোগ, প্রায় ১৯২ একর জমির মালিক চেক না নেওয়া সত্ত্বেও তাঁদের জমি রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমকে হস্তান্তরিত করা হয়েছে। অধিগৃহীত ১১টি মৌজার ক্ষেতমজুর এবং বর্গাদারেরাও কোনও টাকা পাননি। খেতমজুরদের ৫ বছরের মজুরি ও বর্গাদারদের জমির দামের ৫০ শতাংশ টাকা দেওয়ার দাবিও তুলেছেন তাঁরা। দোনাবাবু বলেন, “আমরা দাম বাড়ানোর দাবি থেকে সরছি না। তাতে প্রকল্প বানচাল হয়ে গেলেও কিছু করার নেই।”
পরে অন্ডালের বিডিও অনিন্দিতা দে বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সব জানিয়েছি।” অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি অধিগ্রহণ) শ্যামলচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “যে সব জমির অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে, তার মধ্যে সামান্য পরিমাণের মালিকানা ও বর্গাদারি নিয়ে বিবাদ থাকায় চেক দেওয়া হয়নি। বাকি সব জমির
মালিক চেক নিয়েছেন। তবে এখনও চেক বিলি করে ১৯২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি।”
বিমাননগরী নির্মাণকারী সংস্থা বেঙ্গল এরোট্রোপলিসের সিইও সুব্রত পাল বলেন, “ওই ১৯২ একর জমির অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে বলেই আমরা জেনেছি। শুধু জেলা প্রশাসন এখনও চেক বিলি করেনি।” বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বলেন, “গোটা পরিস্থিতি এবং চাষিদের বক্তব্য আমরা বিভিন্ন সময়ে রাজ্য সরকারকে জানিয়েছি। এ দিন যা ঘটেছে, বিডিও-র রিপোর্টের ভিত্তিতে তা-ও জানানো হবে।” |