মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়ের নির্দেশে রবিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কালিয়াচকের গ্রামে ঘুরে শিশুদের পালস পোলিও খাওয়ানোর ব্যবস্থা করলেন রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। পালস পোলিও খাওয়ানোর চরম বিরোধী পরিবারদের পোলিও বুথে টানতে এদিন কালিয়াচকে একাধিক মসজিদের ইমামদের দ্বারস্থ হন তিনি। শুধু তাই নয়, মসজিদে গিয়ে মাইকে পালস পোলিও বিমুখদের ডেকে তাঁদের ছেলেমেয়েদের পোলিও খাওয়ানোর আর্জি জানান তিনি। কালিয়াচকের তিনটি ব্লকে পোলিও অভিযান সফল করতে সারাদিন গ্রামে, মসজিদে যেভাবে তিনি ঘুরলেন, নিজের হাতে পোলিও খাওয়ালেন তাতে এবার এই অভিযানে একশো শতাংশ সাফল্য মিলবে আশাবাদী জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ বলেন, “রবিবার পূর্ব নির্ধারিত একটি কমর্সূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য জেলার বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। মুখমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন আমি যেন দাঁড়িয়ে থেকে জেলায় পালস পোলিও কমর্সূচি সফল করতে উদ্যোগী হই। মুখমন্ত্রীর নির্দেশে দফতরের সমস্ত কমর্সূচি বাতিল করে সকাল থেকে কালিয়াচকের গ্রামে ঘুরে শিশুদের পোলিও খাইয়েছি।” কুসংস্কারে জেরে কালিয়াচকের বেশ কিছু পরিবার কোনও দিন তাঁদের শিশুদের পোলিও খাওয়ায়নি। সাবিত্রী দেবী বলেন, “আমি মসজিদে গিয়ে ইমামদের বুঝিয়ে পরিবারের শিশুদের পোলিও খাওয়ানোর ব্যাপারে রাজি করাই। আশা করছি এবার কালিয়াচকে তিনটি ব্লক, ইংরেজবাজার ও দুই পুরসভার সমস্ত শিশুই পোলিও খেয়েছে।” মন্ত্রী ময়দানে নামায় পোলিও কমর্সূচি একশো শতাংশ সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন জেলার পালস পোলিওর দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক অতিরিক্ত জেলাশাসক নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র যে ভাবে আজ ঘুরে শিশুদের পালস পোলিও খাইয়েছেন তাতে এ বার একশো শতাংশ সাফল্য মিলবে বলে আশাবাদী। জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাশের জেলা মুর্শিদাবাদে পালস পোলিওতে আক্রান্ত রোগীর হদিস মেলার পরে মুর্শিদাবাদ জেলা লাগোয়া মালদহের চারটি ব্লক কালিয়াচক-১, ২, ৩, ইরেজবাজার ব্লক, পুর এলাকা, পুরাতন মালদহ পুরসভায় পালস পোলিও’র বিশেষ অভিযান ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতর। গত একমাস আগে ওই বিশেষ অভিযানে ১ লক্ষ ৮৮৬৫৯ শিশুকে পালস পোলিও খাওয়ানোর টার্গেট থাকলেও কালিয়াচক-১ নম্বর ব্লক ও ২ নম্বর ব্লকের বাঙ্গিটোলার ৩০২টি শিশু পালস পোলিও খায়নি। সমস্ত শিশু পালস পোলিও না খাওয়ায় ফের রবিবার ২৮ অগষ্ট জেলার ওই চারটি ব্লক ও দুইটি পুরসভায় পালস পোলিও কমর্সূচি হাতে নেওয়া হয়। এবার টার্গেট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৯২ হাজার ৮৫০টি শিশু। আর সেই টার্গেট ১০০ শতাংশ করতে মুখমন্ত্রীর নির্দেশে ময়দানে নেমেছিলেন জেলার মন্ত্রী। পাশাপাশি শিশুদের টানতে প্রতি বুথে খিচুরি আর ডিমের ব্যবস্থা ছিল। |