বর্ধমানের এক নার্সিংহোমে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল অপরিণত একটি শিশুকে। এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরল সে। শিশুটিকে কোলে নিয়ে রবিবার দুপুরে জামালপুরের মশাগ্রামে স্টেশন রোডের বাড়িতে ফেরার পথে তার বাবা চন্দন সাধুখাঁ বলেন, “আর কোনও সদ্যোজাত শিশুর সঙ্গে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, তার জন্য আমরা আদালতে যাব।” জীবিত শিশুকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করায় ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে গত ২৪ জুন অভিযোগ দায়ের করেছেন চন্দনবাবু। বর্ধমান থানাতেও নাসিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, পাচারের জন্যই তাঁদের পুত্র সন্তানকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। সিএমওএইচ তন্ময় মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “যে শিশুটিকে মৃত বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেই শিশুটি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে বলে খবর পেয়েছি। নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। যত দ্রুত সম্ভব তা শেষ করা হবে।” |
মায়ের কোলে সদ্যোজাত। নিজস্ব চিত্র। |
গত ২০ জুন চন্দনবাবুর স্ত্রী রূপাদেবী বর্ধমানের বড়বাজারে একটি নাসিংহোমে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হন। সেখানে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি। ২৩ তারিখ রাতে। নার্সিংহোম রাতে শিশুটিকে তাঁদের দেখতে দেয়নি বলে অভিযোগ রূপাদেবীদের। পর দিন সকালে নাসিংহোমের কর্মীরা তাঁদের জানিয়ে দেন, অপরিণত শিশুটি মারা গিয়েছে। রূপাদেবীকে তড়িঘড়ি ছুটিও দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মৃত শিশুটিকে রূপাদেবীর বাড়ির লোকেরা দেখতে চান। তাঁরা জোর করে লেবার রুমের দরজা খুলে দেখেন, শিশুটি মায়ের কাপড় জড়ানো অবস্থায় হাত-পা ছুঁড়ছে। এর পরে প্রথমে বর্ধমান মেডিক্যালে এবং পরে গত ২৬ জুন শিশুটিকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
সেই সময়ে ওই নার্সিংহোমের মালিক চিকিৎসক এ পি কর বলেছিলেন, “আসলে ওই শিশুটি অপরিণত ছিল। এই ধরনের শিশুরা বাঁচে না।” যাঁর তত্ত্বাবধানে রূপাদাবী ভর্তি হয়েছিলেন, সেই তপন মণ্ডল বলেছিলেন, “ওই ধরনের শিশুরা ১০টির মধ্যে ৯ জনই মারা যায়। মাত্র ৯৫০ গ্রাম ওজনের শিশুটি প্রসব হয়েছিল সাত মাস কুড়ি দিনের মাথায়।” তবে এ দিন দুই চিকিৎসকই শিশুটির সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁরা বলেছেন, “যেহেতু ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে, তাই কিছু বলা উচিত নয়।” |