কোনও বাড়িতে মোর্চার পতাকা টাঙানো হয়েছে। আবার লাগোয়া এলাকার বাড়িগুলিতে উড়ছে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের পতাকা। ‘গোর্খাল্যাণ্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এ তরাই ও ডুয়ার্সের অর্ন্তভুক্তির দাবি বিবেচনা করতে সমীক্ষক দল আসতে পারেন, এমন খবর চাউর হতেই শুরু হয়েছে পতাকার লড়াই। কোন এলাকায় সংখ্যায় কারা বেশি, তা বোঝাতে তরাইয়ের শালবাড়ি থেকে ডুয়ার্সের জয়গাঁও, নাগরাকাটা, ওদলাবাড়ি, মহাবাড়ি সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে পতাকা তোলার নির্দেশ জারি করেছে মোর্চা ও আদিবাসী বিকাশ পরিষদ। মালবাজারে কোনও বাড়িতে মোর্চার পতাকা তোলা হলে রাস্তায় নেমে তার বিরোধিতা করা হবে বলে ঘোষণা করছে জনজাগরণ মাল নামে একটি সংগঠন। দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলা প্রাশাসনের কর্তাদের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জলপাইগুড়ির ডিভিশনাল কমিশনার অমরেন্দ্র কুমার সিংহ। তিনি নিজেও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ডুয়ার্সে যাবেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। কমনিশনার বলেন, “সরকারি জায়গায় কোনও দলের পতাকা টাঙানো হলে তা খুলে নেওয়া হবে। আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।” মোর্চা ও পরিষদের কর্মীদের অনেকেই জানান, তাঁরা খবর পেয়েছেন, শীঘ্রই ‘জিটিএ’-তে তরাই ও ডুয়ার্সের কিছু মৌজার অর্ন্তভূক্তির দাবি নিয়ে সমীক্ষায় নামবে একটি কমিটি। মোর্চার দাবির মধ্যে থাকা অধিকাংশ মৌজা যাতে ‘জিটিএ’-তে অন্তর্ভূক্ত হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে পতাকা তোলার নির্দেশ দিয়েছে সংগঠনের নের্তৃত্ব। পাল্টা হিসেবে, তরাই ও ডুয়ার্সের মৌজা চেয়ে মোর্চার দাবি সঠিক নয়, তা বোঝাতেই আদিবাসী বিকাশ পরিষদও তাদের সমর্থকদের পতাকা তোলার নির্দেশ দিয়েছেন। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শঙ্কর অধিকারী বলেন, “গোর্খা জনজাতির লোক কোথায় কোথায় আছেন তা জানাতেই বাড়িতে বাড়িতে পতাকা তুলতে বলা হয়েছে। যাতে সমীক্ষক দল গ্রামে ঢুকে তা বুঝতে পারেন। তা নিয়ে কোথাও উত্তেজনা ছড়ালে সমর্থকদের পতাকা নামাতে বলা হবে।” আদিবাসী বিকাশ পরিষদ সভাপতি বিরসা তিরকি বলেন, “তরাই ও ডুয়ার্স নিয়ে মোর্চা যে বক্তব্য তুলে ধরছে তা ঠিক নয়। কোথাও মোর্চা সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়। এটা আদিবাসীদের ভূমি। তাই প্রত্যেকের বাড়িতে পতাকা তুলতে বলা হয়েছে।” পরিষদের সঙ্গেই তাল মিলিয়ে মোর্চার দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন ডুয়ার্স-তরাই নাগরিক মঞ্চের কার্যকারি সভাপতি ল্যারি বসু। তিনি বলেন, “ভূমিপুত্রদের বঞ্চিত করা হলে কিছুতেই মানা হবে না। তাই বৈঠক করে বাড়িতে বাড়িতে পতাকা তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তরাই ও ডুয়ার্সে মোর্চা সংখ্যা গরিষ্ঠ নয়। তাদের দাবি ঠিক নয়।” মালবাজারে মোর্চা সমর্থকরা বাড়িতে পতাকা টাঙালে আন্দোলনে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জনজাগরণ মালের সম্পাদক নীলাদ্রি চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “মালবাজারে কোনও পতাকা টাঙাতে দেওয়া হবে না। সেরকম হলে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করা হবে।” জলপাইগুড়ি পুলিশের এক কর্তা বলেন, “পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।” |