জেলের সেলে মাটিতে শুতে তাঁর অসুবিধা হচ্ছে। তাই সেলে তাঁকে একটি খাট দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন কঙ্কাল-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত প্রাক্তন সিপিএম মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ। জেলে রাতের খাওয়া নিয়েও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। রাতে গরম খাবার চেয়েছেন সুশান্তবাবু। তবে রবিবার পর্যন্ত তিনি খাট বা গরম খাবার কোনওটাই পাননি। এর পাশাপাশি জামিন চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদনও করেছেন ওই সিপিএম নেতা।
গত শুক্রবারেই হাইকোর্টে সুশান্তবাবুর হয়ে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। কাল, মঙ্গলবার সুশান্তবাবুকে ফের মেদিনীপুর আদালতে হাজির করানো হবে। ওই দিন তাঁরা সেখানেও প্রাক্তন সিপিএম মন্ত্রীর জামিনের জন্য আবেদন করবেন বলে রবিবার জানান তাঁর অন্যতম আইনজীবী সঞ্জীব গঙ্গোপাধ্যায়। মেদিনীপুর আদালতই দু’বার সুশান্তবাবুর জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। এবং ওই আদালতের নির্দেশেই সুশান্তবাবু এখন আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে রয়েছেন।
ওই জেল সূত্রের খবর, নিজের সেলে মাটিতে কম্বল বিছিয়ে শুতে তাঁর অসুবিধা হচ্ছে বলে জেল-কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন সুশান্তবাবু। তিনি তাঁর সেলে একটি খাট দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। জেল-কর্তৃপক্ষ অবশ্য প্রাক্তন মন্ত্রীর ওই আবেদনে সাড়া দেননি। তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, জেলে খাট চাইলে নিয়মবিধি মেনে আদালতেই আবেদন করতে হবে অভিযুক্তকে।
রাজ্যের কারা দফতর সূত্রে বলা হয়, জেলের নিয়ম অনুযায়ী বন্দিদের শোয়ার জন্য দেওয়া হয় কম্বল। বালিশ দেওয়ার নিয়ম নেই। সেই অনুসারে তিনটি কম্বল দেওয়া হয়েছে সুশান্তবাবুকে। একটি কম্বল মেঝেয় পাতার জন্য। দ্বিতীয় কম্বলটি গায়ে দেওয়ার এবং তৃতীয় কম্বলটি ভাঁজ করে মাথা রাখা জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। সুশান্তবাবু জেল-কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন, মাটিতে শোয়ার অভ্যাস তাঁর নেই। তাঁর জন্য একটি খাটের ব্যবস্থা করা হোক।
শুধু মাটিতে শোয়ার বিষয়েই নয়, রাতের খাবার নিয়েও অভিযোগ রয়েছে সুশান্তবাবুর। রাতে তাঁকে ঠান্ডা খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তিনি রাতে গরম খাবার চেয়েছেন। জেল-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ অন্য বন্দিদের যখন রাতের খাবার দেওয়া হয়, সেই সময়েই সুশান্তবাবুকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেই খাবার তিনি দেরিতে খাচ্ছেন। সেই কারণেই তা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। তাঁর রাতের খাবারটা তাই গরম করে দিতে বলেছেন সুশান্তবাবু। জেল-কর্তৃপক্ষ এ ক্ষেত্রেও আদালতের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করছেন।
জেল সূত্রে জানানো হয়েছে, খাবারের সমস্যা মেটানোর উপায় একটা আছে। নিজের পয়সা খরচ করে সুশান্তবাবু জেল ক্যান্টিনের খাবার আনিয়ে খেতে পারবেন। সেটা তাঁকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। তিনি ক্যান্টিন থেকে মিনারেল ওয়াটার আনিয়ে খাচ্ছেন। আইনজীবী সঞ্জীববাবু বলেন, “সুশান্তবাবু শুধু প্রাক্তন মন্ত্রীই নন, তিনি বিধায়ক। জেল এখন সংশোধনাগার। তা হলে এক জন বিধায়ক শোয়ার খাট পাবেন না কেন? কেন রাতে তাঁকে গরম খাবার দেওয়া হবে না?” এ-সব প্রশ্ন তাঁরা আদালতে তুলবেন বলেও জানিয়েছেন আইনজীবী। |