ম্যাঞ্চেস্টারের আট গোলে ওয়েঙ্গারের বিদায়-ঘণ্টা |
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড-৮ (ওয়েলবেক, ইয়ং-২, রুনি হ্যাটট্রিক, নানি, পার্ক)
আর্সেনাল-২ (ওয়ালকট, পার্সি) |
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের কাছে আর্সেনালের আট গোল খাওয়ার ম্যাচটা দেখে অনেকে তাজ্জব। তোলপাড় গোটা বিশ্বফুটবল। আমি অবশ্য একদম অবাক হয়নি। শুধু একটা ব্যাপার ভেবে খুব খারাপ লাগছে। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের এই ঐতিহাসিক জয়ের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেল এ দিনই ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-র পাঁচ গোলে জেতার কৃতিত্ব। জেকো-র একারই করা চার গোলে ওরা কিন্তু অবলীলায় ৫-১ টটেনহ্যামকে তাদেরই মাঠে গিয়ে উড়িয়ে দেবে বুঝতে পারিনি।
টিভিতে পরপর দু’টো ম্যাচই দেখলাম। মনে হচ্ছে দুই ম্যাঞ্চেস্টারই এ বার শোরগোল ফেলে দেবে প্রিমিয়ার লিগে। তবে আর্সেনালকে ৮ গোল! ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে নিয়ে বেশি আলোচনা হতে বাধ্য। কবে আর্সেনাল আর ৮ গোল খেয়েছে? ওয়েঙ্গার পনেরো বছর আছেন আর্সেনালে। এই লজ্জা আগে পাননি। |
উল্টো দিকে ফার্গুসনের এই সাফল্যের পিছনে পাঁচটা কারণ দেখতে পাচ্ছি:
১) দলে নতুনত্বের ছোঁয়া। ফার্গুসনের প্রশংসা করতেই হচ্ছে। এ মরসুমে অবিশাস্য দল গড়েছেন।
২) আর্সেনাল ডিফেন্সের ছন্নছাড়া অবস্থা। কে কোথায় দাঁড়িয়ে আর তাদের ভূমিকাই বা কী, সেটা নিজেরাই জানে না।
৩) ‘স্ট্রাকচার্ড’ দল। জায়গার ফুটবলার জায়গায় খেললে কী ধ্বংসলীলা ঘটে, সেটাই দেখাল ম্যান ইউ ফুটবলাররা। তার সঙ্গে বোনাস অবশ্যই রুনির তিনটে স্পট কিক। বিপক্ষ গোলকিপারের ব্যর্থতাও এক্ষেত্রে অনস্বীকার্য। অর্ধেক কাজ তো আর্সেনালের কিপারই করে দিল।
৪) রুনিদের গ্রাউন্ড ফুটবল। ইংলিশ ফুটবলে যা সচরাচর দেখা যায় না। এটাই আজকের ম্যাচে ফার্গুসনের দলের মূলমন্ত্র ছিল। ৫) দু’টো দলের গতির মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। একটা সময় আর্সেনাল ফুটবলারদের দেখে খুব করুণ লাগছিল। ম্যাচটা কখন শেষ হবে, সেটার অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল যেন ওরা।
এক দিকে ফার্গুসন যখন ইয়ং-অ্যান্ডারসনদের মতো তরুণ ফুটবলারদের দিয়ে ঢেলে সাজিয়েছেন দলকে, তখন ওয়েঙ্গার দল গঠনেই আসল ভুল করে বসে আছেন। ফাব্রেগাস-নাসিরি টিম ছেড়ে চলে গিয়েছে। যারা এসেছে তারা পাতে দেওয়ার নয়। এই ম্যাচটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, ওয়েঙ্গারের এ বার যাওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে। এত বছর আর্সেনালকে অনেক সেবা করেছেন। এ বার বিদায়ের পালা! |