‘পরিবর্তিত’ পরিস্থিতিতে রাজ্যে নিজেদের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসাবে গড়ে তুলতে তৎপর হলল বিজেপি। এ ক্ষেত্রে কোনও ছুঁৎমার্গ রাখতে নারাজ তারা। যে কোনও দলের নেতা-কর্মী-সমর্থককেই সাদরে গ্রহণ করতে প্রস্তুত তারা। দলের রাজ্য কমিটির কার্যকারিণী বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত গহয়েছে।
তিন দশক ধরে লড়াই চালিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র সদস্য সংখ্যা ১ লক্ষ ৬০ হাজার। এর মধ্যে সক্রিয় সদস্য মাত্র ১১ হাজার! কিন্তু এই পরিসংখ্যানের দিকে না তাকিয়ে এ বার ২ লক্ষ আবেদনপত্র ছাপানো হয়েছে। যার মধ্যে প্রথম ধাপে ১ লক্ষ আবেদনপত্র পাঠানো হবে জেলায়। তারপরেও কোনও জেলায় আবেদনপত্র লাগলে আরও পাঠানো হবে। কোন ভাবনা থেকে এত আবেদনপত্র ছাপানো হল? বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের কথায়, “এখন বহু মানুষ সিপিএম ছেড়ে আমাদের দলে যোগ দিচ্ছেন। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেও অনেকে আসছেন। অনেক বিশিষ্ট ও সাধারণ মানুষও বিজেপি-র দিকে ঝুঁকছেন। রাজ্যের এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানুষ আমাদের দিকেই আসতে চাইছেন। তাই সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নামবে দল।”
শুক্রবার থেকে খড়্গপুরে শুরু হয়েছিল বিজেপি’র রাজ্য কার্যকর্তাদের সম্মেলন। সেখানে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে জোর দেওয়ার পাশাপাশি নতুন ও পুরনো সদস্যদের নিয়ে পুজোর সময় প্রশিক্ষণ শিবির করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্যে তৃণমূল ও কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকারের কাজকর্ম নিয়ে লাগাতার প্রচার চালানো হবে। বিভিন্ন এলাকায় মিছিল, পথসভা হবে। গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ধরে কর্মসূচি গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের বক্তব্য, “বাজারে গেলেই মূল্যবৃদ্ধি কমে না। তার জন্য কিছু কাজ করতে হয়। সেটা কোথায় করছেন? বেকার সমস্যা সমাধানে, রাজ্যের উন্নয়নে স্থায়ী পরিকল্পনা কোথায়? সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে কোনও ফারাক নেই। সিপিএমও হিংসার রাজনীতি করত, তৃণমূলও করছে।”
২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে কিছুটা ঘর গোছাতে চাইছে বিজেপি। বিজেপি-র আশা, সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা বিজেপি যোগ দিলে সাফল্য মিলতেও পারে। রাহুলবাবুর কথায়, “সিপিএমের সাধারণ-সমর্থকেরা এখন দিশেহারা। তাঁদের নেতারা মোবাইল বন্ধ রাখছেন। নীচুতলার কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না।” এই সুযোগটাকে কাজে লাগাতেই নতুন করে সদস্য সংগ্রহে গুরুত্ব দিচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
কার্যকারিণী বৈঠকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রামলাল উপস্থিত ছিলেন। পর্যবেক্ষক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধার্থ সিংহ। |