এক তরুণীকে অপহরণের মামলায় গ্রেফতার হলেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক দম্পতি।
যাঁকে অপহণের অভিযোগ, হাওড়ার সাঁকরাইলের বাসিন্দা সেই তরুণী অবশ্য আগেই শিলচর থানার পুলিশের হেফাজতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আজ তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যদিও চব্বিশ বছরের তরুণীটির দাবি, তিনি অপহৃত হননি, তবে পরিচারিকা হিসেবে ওই দম্পতির বাড়ি এসে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অন্য দিকে, অপহরণ ও নিগ্রহের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিক্ষক দম্পতি। মামলার তদন্তকারী অফিসার জগাছা থানার এসআই মাধব চক্রবর্তী জানান, গত ৯ জুন সাঁকরাইল থানায় মিনতি নন্দী নামে এক মহিলা নিখোঁজ ডায়েরি করে বলেছিলেন, ৭ জুন জগাছার এক শ্রাদ্ধবাড়িতে নেমন্তন্ন খেতে গিয়ে তাঁর মেয়ে টিনা বাড়ি ফেরেননি। ২৪ জুন মিনতিদেবী জগাছা থানায় অভিযোগ জানান, তাঁর মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে টিনা বাড়িতে ফোন করে ‘শারীরিক নিগ্রহের’ কথা জানান বলে পুলিশের দাবি। |
শিলচরের আদালতে শিক্ষক দম্পতি। নিজস্ব চিত্র |
পুলিশ-সূত্রের খবর: শনিবার টিনা শিলচর সদর থানায় এসে আশ্রয় নেন। তাঁর অভিযোগ, জুন মাসে তিনি আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক প্রণবেশ চক্রবর্তীর শিলচরের বাড়িতে পরিচারিকার কাজে লেগেছিলেন। প্রণবেশবাবুর স্ত্রী শ্রাবণী মাইতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরাসি বিভাগের শিক্ষিকা, এবং তাঁর বাড়ি জগাছায়। তিনিই টিনাকে শিলচরের ভাড়াবাড়িতে নিয়ে আসেন। টিনার অভিযোগ, ক’দিন পরেই তাঁর উপরে শারীরিক অত্যাচার শুরু হয়। তরুণীটির দাবি, কখনও শ্রাবণী তাঁর গায়ে গরম খুন্তি ঠেকিয়েছেন, কখনও বা প্রণবেশ দিয়েছেন জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা।
শিলচর থানা-সূত্রের খবর: টিনা চলে আসার পরে শিক্ষক দম্পতি থানায় এসেছিলেন নিখোঁজ ডায়েরি করতে। পুলিশ তা নেয়নি। বরং জগাছার তদন্তকারী দল কাল রাতে শিলচর পৌঁছলে প্রণবেশ-শ্রাবণীকে বাড়ি থেকে তুলে আনা হয়। পুলিশ জানায়, তাঁদের প্রাথমিক ভাবে অপহরণ-মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তিন জনকে শিলচরের সিজেএম আদালতে পেশ করা হলে আদালত শিক্ষক দম্পতির জামিন মঞ্জুর করে টিনাকে মায়ের হাতে তুলে দিতে বলে।
প্রণবেশ-শ্রাবণীর বক্তব্য: টিনাকে যে মহিলা তাঁদের কাছে নিয়ে এসেছিলেন, তিনি টিনার উপস্থিতিতেই নিজেকে তাঁর কাকিমা হিসেবে পরিচয় দেন। ফলে মেয়েটিকে অপহরণের প্রশ্ন ওঠে না বলে তাঁদের দাবি। এমনকী, পুজোর ছুটিতে টিনাকে নিয়ে জগাছায় আসার জন্য তাঁরা বিমানের টিকিটও কেটে ফেলেছিলেন। |