দ্বিতীয় ভাষা হওয়ার দৌড়ে সামিল একাধিক গোষ্ঠী
রকারি ভাষা-নীতি নিয়ে উত্তাল হতে পারে ঝাড়খণ্ডের রাজনীতি। এ রাজ্যে দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা পেতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ভাষার জন-গোষ্ঠীর মধ্যে আকচাআকচি শুরু হয়েছে। নতুন রাজ্য গঠিত হয়েছে দশ বছর হল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সাবেক বিহারের ভাষা-নীতি অনুযায়ী হিন্দি ও উর্দুই যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে গণ্য ঝাড়খণ্ডে। নতুন রাজ্যে দ্বিতীয় ভাষা হওয়ার দৌড়ে সাঁওতালি ও বাংলাই এতদিন এগিয়ে চলেছে। বর্তমান বিজেপি-ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা জোটের নেতৃত্বাধীন সরকারও সম্প্রতি সাঁওতালি ও বাংলাকে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে চিহ্নিত করতে চলেছে বলেই এতদিন দাবি করছিল রাজনৈতিক মহল। সাঁওতালি ও বাংলাকে দ্বিতীয় ভাষা করার লক্ষ্যে এ বার বিধানসভার বাদল অধিবেশনে বিল পেশ করারও সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। আর তারপর থেকেই অন্য বেশ কয়েকটি ভাষাভাষী-গোষ্ঠী এর প্রতিবাদে মাঠে নামতে শুরু করেছে। ঝাড়খণ্ড ভাষা-সাহিত্য সংস্কৃতি আখড়া নামে একটি সংস্থা সম্প্রতি অন-লাইন আবেদনের মাধ্যমে বাংলাকে দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা দেওয়ার বিরোধিতা করেছে। ওই সংস্থা সাঁওতালি ছাড়া এ রাজ্যে প্রচলিত বিভিন্ন আদিবাসী ভাষা মুন্ডারি, কুড়ুক, হো, খাড়িয়া, নাগপুরি, খোরঠা, পাঁচপরগনিয়া ও কুর্মালির হয়ে সওয়াল করছে। রাজ্যের উৎকল অ্যাসোসিয়েশনও ওড়িয়াকে দ্বিতীয় ভাষা করার লক্ষ্যে নেমে পড়েছে। আগামিকাল সোমবার তারা রাঁচিতে বিধানসভা ঘেরাও করার হুমকি দিয়েছে। বাংলা ভাষার এই ‘সঙ্কটে’ সরকারপক্ষের শরিক ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতাদের একাংশও পূর্ব সিংভূম, চাইবাসা, সাঁওতাল পরগনা এলাকার বাঙালিদের নিয়ে বড়সড় আন্দোলনের জন্য ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা, এর পরে ভোজপুরি বা মৈথিলি ভাষাও মর্যাদার দৌড়ে সামিল হলে আশ্চর্যের কিছু থাকবে না।
আদিবাসী ভাষাসমূহের হয়ে যাঁরা সওয়াল করছেন, তাঁদের বক্তব্য, বাংলা বা ওড়িয়ার প্রতিবেশী রাজ্যে সরকারি ভাষার মর্যাদা রয়েইছে। রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক ও জনজাতি ভাষা বিভাগের প্রধান গিরিধারী রাম গঞ্জু বলেন, “ঝাড়খণ্ড বহুভাষী রাজ্য। এখানে স্থানীয় আদিবাসী ভাষাগুলির পঠনপাঠন এখনও উচিত মর্যাদা পায়নি। রাজ্যে বেশির ভাগ মানুষ হয় সাঁওতালি নয় নাগপুরি বলেন। সাঁওতালি ছাড়া অন্য আদিবাসী-গোষ্ঠীর মধ্যে সংযোগের ভাষাও নাগপুরি। আদিবাসী ভাষাভাষীরাই ঝাড়খণ্ড রাজ্যের জন্য লড়েছিলেন। এই ভাষাগুলিকে বাঁচাতে রাজ্য সরকারের তৎপর হওয়া উচিত।”
আর বাংলার হয়ে যাঁরা সওয়াল করছেন, তাঁদের বক্তব্য, ২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এ রাজ্যে সাঁওতালি ও বাংলা ভাষাভাষীরা অন্য আঞ্চলিক ভাষাভাষীদের থেকে সংখ্যায় বেশি। আর বাংলা বোঝেন ও বলতে পারেন, রাজ্যের অন্তত ৩৫ শতাংশ মানুষ। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “জেএমএম সাঁওতালি ও বাংলার মর্যাদা নিয়ে লড়ছে। পূর্ব সিংভূমের ঘাটশিলা, বহরাগোড়ার মতো এলাকার বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে আমরা সরকারের উপরে বাংলার জন্য চাপ দেব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.