নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
অবশেষে নিবেদিতা বাস টার্মিনাসের দায়িত্বভার দেওয়া হচ্ছে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থাকে।
শহরকে যানজট মুক্ত করতে ২০০৮ সালে তৈরি করা হয়েছিল নিবেদিতা বাস টার্মিনাস। তবে উদ্বোধনের পরে এক দিনের জন্যও সেখানে চালু হয়নি বাস পরিষেবা। আসানসোলের সেনর্যালে রোডের এই টার্মিনাসটি মূল শহর থেকে কিছুটা দুরে হওয়ায় বাসচালকেরা এখানে প্রায় আসেনই না। অগত্যা এই বাস টার্মিনাসের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে এসবিএসটিসি-কে।
এক মাসের মধ্যেই দায়িত্ব হস্তান্তরের কাজ সেরে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজোর পর থেকেই এই টার্মিনাসে পরিষেবা চালু করা যাবে বলে জানিয়েছেন এসবিএসটিসি ও আসানসোলের পুর কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মন্ত্রী পর্যায়েও কথা বার্তা পাকা হয়ে গিয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার এমডি ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, টার্মিনাসটির দায়িত্ব হস্তান্তরের চিঠি না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা পরিষেবা শুরু করতে পারছেন না। সেকথা তাঁরা পুর কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছেন। পুরসভার কমিশনার তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক বিশ্বজিৎ দত্ত জানিয়েছেন, তাঁরা এই চিঠি পেয়েছেন। মেয়র দায়িত্ব হস্তান্তরের চিঠি পাঠাবার ব্যবস্থাও করেছেন। কিছু প্রশাসনিক প্রক্রিয়া পালন করতে গিয়েই দেরি হয়ে গিয়েছে।
এসবিএসটিসির এমডি ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই টার্মিনাসটি তাঁদের হাতে এলে আসানসোলের পরিবহণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হবে। শহরের রাস্তার যেখানে-সেখানে বাস দাঁড়ানোও বন্ধ হবে। এসবিএসটিসির তরফে ঝাঁ চকচকে বাস নামানো হবে। শহরবাসী উন্নত মানের পরিষেবা পাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মাস দুই আগে বিধানসভার স্থায়ী কমিটি ও রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী এই বাস টার্মিনাসটি দেখে গিয়েছেন। এর পরই টার্মিনাসটি এসবিএসটিসির হাতে তুলে দেওয়ার জন্য প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা শুরু হয়। তাপসবাবু বলেন, “পুজোর পরেই এটি পুরোমাত্রায় চালুর জন্য এসবিএসটিসিকে বলেছি।”
তাপসবাবু ও ধ্রুবজ্যোতিবাবু জানিয়েছেন, আসানসোলে আন্তঃরাজ্য পরিবহণ ব্যবস্থা রয়েছে। একই সঙ্গে আসানসোলকে পৃথক জেলা ও কমিশনারেট করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে রাজ্য সরকার। সে সব মনে রেখে উন্নত টার্মিনাস বানানো হবে। তৈরি করা হবে পেট্রোল পাম্প, ধাবা, শপিং কমপ্লেক্স ও যাত্রী নিবাস। শহর ছুঁয়ে যাওয়া আন্তঃজেলা ও আন্তঃরাজ্য দূরপাল্লার বাস ও স্বল্প দূরত্বের অনেক বাস এখানে দাঁড়াবে। এই টার্মিনাস থেকে দূরপাল্লার বাস ধরতেও পারবেন যাত্রীরা।
২০০৮ সালের ১৯ এপ্রিল এই টার্মিনাসের উদ্বোধন হয়। তবে একদিনের জন্যও বাস পরিষেবা চালু হয়নি। আসানসোলের সেন র্যালে রোডের এই টার্মিনাসটি তৎকালীন আসানসোল পুর কর্তৃপক্ষও এটি চালু করতে পারেননি। ফলে শহরের যানজট রুখতে তৈরি বাস টার্মিনাসটি বস্তুত পুরসভার বাতিল গাড়ির গ্যারাজে পরিণত হয়েছে। আগাছায় ভরেছে চার দিক। অগত্যা এর দায়িত্বভার এসবিএসটিসিকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ দিকে এই টার্মিনাসকে উন্নত ও আধুনিক ভাবে সাজাতে হলে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু এসবিএসটিসির ভাঁড়ার কার্যত শূন্য। এমডি ধ্রুবজ্যোতিবাবু বলেন, “আমাদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। সরকারের কাছে টাকার জন্য আবেদন করেছি। জানি না কী হবে।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, এডিডিএ আর্থিক সাহায্য করলে শহরের উন্নয়নে টার্মিনাসটি ঢেলে সাজানো সম্ভব হবে। |