জামুড়িয়ায় ধৃত ১৪, দেহ নিয়ে মিছিল সিপিএমের
নিহত যুবকর্মীর মৃতদেহ নিয়ে রবিবার জামুড়িয়ার খাসকেন্দায় মিছিল করল সিপিএম। এ দিকে, শনিবারের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবারও এলাকায় উত্তেজনা ছিল। দোকানপাটও বিশেষ খোলেনি। কেন্দা ফাঁড়িতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার দুপুরে খাসকেন্দা ৩ নম্বর ক্যান্টিনপাড়ায়। তৃণমূলের অভিযোগ, সিপিএমের জামুড়িয়া ২ লোকাল কমিটির সদস্য কাজল বাউরির সঙ্গে এক মহিলার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক আছে। তাতে এলাকার পরিবেশ ‘নষ্ট’ হচ্ছে। সে দিন কাজলবাবু ওই মহিলার বাড়িতে গেলে তৃণমূলের লোকজন তাঁকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। নেতাকে চড়-থাপ্পড় মারা হয়। খানিক পরে ওই মহিলা বাড়ির সামনে দোকানে গিয়ে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে নেন। কিন্তু উপস্থিত লোকজন তাঁকে ধরে ফেলেন। এ সব নিয়ে তৃণমূল ও সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। কেন্দা ফাঁড়ি থেকে পুলিশ পৌঁছলে ভ্যানে ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিশকর্মীরা দৌড়ে পালান। এরই মধ্যে গুলিবিদ্ধ হন সিপিএমের যুবকর্মী ভীমলাল তিওয়ারি। পরে পুলিশ, র্যাফ ও কমব্যাট ফোর্সের যৌথ বাহিনী এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শনিবার সংঘর্ষের পরে। ফাইল চিত্র।
রবিবার জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর জানান, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও মহিলার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে কারও কিছু বলার থাকতে পারে না। এ নিয়ে অশান্তির সৃষ্টির জেরে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট ১৪ জনকে ধরা হয়েছে। জামুড়িয়ার পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় মোট তিনটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সিপিএমের লোকজন এলাকায় অস্ত্র মজুত করেছে বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল। নিহত ভীমলাল তিওয়ারির পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পাশাপাশি, এলাকায় অশান্তি তৈরির অভিযোগে পুলিশ নিজে একটি মামলা শুরু করেছে।
এ দিন আসানসোল মহকুমা হাসপাতাল থেকে ভীমলাল তিওয়ারির দেহ খাসকেন্দায় তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বিকেল ৩টে নাগাদ মিছিল করে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। মিছিলে ছিলেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়, জামুড়িয়ার বিধায়ক জাহানারা খান, অজয়-জামুড়িয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক গঙ্গা যাদব-সহ দলের নেতা-কর্মীরা। জামুড়িয়া শহরেও একটি ধিক্কার মিছিল করে সিপিএম। ভীমলালের ভাই অর্জুন তিওয়ারি বলেন, “যারা এমন ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
অন্য দিকে, তৃণমূলের জামুড়িয়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার জেলা পুলিশ সুপারের কাছে ফ্যাক্স বার্তায় অভিযোগ করেন, নিজের রিভলভারের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে ভীমলালের। মুকুলবাবুর দাবি, “শনিবার গণ্ডগোলের সময়ে নিজের কোমরে গোঁজা রিভলভার বের করতে যায় ওই যুবক। তখন কোনও কারণে সেটি ‘লক’ হয়ে যায়। সেটি নিয়ে কসরত গেলে আচমকা গুলি বেরিয়ে পেটে লাগে।” তৃণমূলের বর্ধমান জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “কাজল বাউরির অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন এলাকাবাসী। তার জেরেই এমন ঘটেছে। পুলিশ সুপারকে আমরা জানিয়েছি, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট দেখে উপযুক্ত তদন্ত হোক।” তাঁর আরও দাবি, “ঘটনার সময়ে তৃণমূলের কোনও নেতা এলাকায় ছিলেন না। সিপিএমের দুষ্কৃতীদের হাতে যে প্রচুর অস্ত্র যে মজুত রয়েছে, তা এই ঘটনায় ফের প্রমাণ হল।”
সিপিএমের অজয়-জামুড়িয়া জোনাল কমিটির সদস্য মনোজ দত্ত অবশ্য তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “কাজলকে বিনা কারণে মারধর করেছে ওরা। এখন আবার মিথ্যা অভিযোগ আনছে। এলাকার মানুষ জানেন, কী ঘটেছে।” জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর তৃণমূলের অভিযোগ প্রসঙ্গে শুধু বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.