ঝামা কয়লার বণ্টন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উদ্যোগ
ঝামা কয়লার বণ্টন ও পরিবহণ এ বার থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে চলেছে জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি প্রশাসনিক পর্যায়ে একটি বিশেষ বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক বিশ্বজিৎ দত্ত জানিয়েছেন, বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রশাসন জানতে পেরেছে, ঝামা কয়লার বণ্টন ও পরিবহণকে কেন্দ্র করেও এলাকার কয়লা মাফিয়ারা ইদানীং সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই কয়লা পরিবহণের অন্তরালে মাফিয়ারা অবৈধ খাদান থেকে তোলা উন্নত মানের কয়লাও পাচার করছে। শুধু তাই নয়, ওই বণ্টন ও পরিবহণের সময় মাফিয়ারা নিজেদের মধ্যেও সংঘর্ষে জড়িয়ে যাচ্ছে। এর ফলে এলাকার আইন শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক বিশ্বজিৎ দত্ত বলেন, “রানিগঞ্জ আসানসোল খনি এলাকায় কয়লা সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যবসা ও লেনদেন কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে উদ্যোগী হয়েছি আমরা। বিভিন্ন বেসরকারি খনি সংস্থা, ইসিএল ও পুলিশকে নিয়ে বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। গোপনে মজুত করে রাখা অবৈধ কয়লা বাজেয়াপ্ত, মাফিয়াদের গ্রেফতার এবং ঝামা কয়লার বণ্টন ও পরিবহণ নিয়ন্ত্রিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
কী এই ঝামা কয়লা? অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, এই কয়লা খনি এলাকায় ন্যাচারাল নামেই পরিচিত। শক্ত পাথর মিশ্রিত অনুন্নত মানের এই কয়লা সাধারণত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বা উন্নত ইস্পাত কারখানায় ব্যবহৃত হয় না। ফলে বহু বেসরকারি সংস্থাই ভূগর্ভস্থ এই কয়লা খুব কম দামে বা বিনা পয়সাতেও এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়। এই কয়লা পুরোপুরি কেটে তোলা না হলে উন্নত কয়লার স্তর মেলে না। তাই বেসরকারি খনি মালিকেরা যত দ্রুত সম্ভব এগুলি তুলে বণ্টনের ব্যবস্থা করে। অন্য দিকে, এই কয়লায় জ্বালানির পরিমাণ খুবই কম। এত দিন এ সবের বণ্টন ও পরিবহণে প্রশাসনিক পর্যায়ে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি।
কিন্তু প্রশাসনের নজরে আসে, এই অঞ্চলের কয়লা মাফিয়ারা অবৈধ খাদান থেকে তোলা উন্নত মানের কয়লার সঙ্গে এই ঝামা কয়লা মিশিয়ে বিভিন্ন গুল কারখানা ও ছোট ইস্পাত কারখানা, রিফ্র্যাক্টরি শিল্পে বা স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় সরবরাহ করছে। এগুলি পরিবহণের সময় লরির উপরের অংশে থাকছে ঝামা কয়লা। ভিতরে দিকে থাকছে উন্নত মানের কয়লা। এ ভাবেই প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে চলছে অবৈধ কারবার। অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, ন্যাচারাল পরিবহণে আইনি বৈধতা আনা হলে প্রশাসন এগুলির উপরে সরাসরি নিয়ন্ত্রণে আনবে। অন্য দিকে, সরকারের রাজস্বও আদায় হবে।
ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, রানিগঞ্জ আসানসোল খনি এলাকার বিভিন্ন জায়গায় মজুত করে রাখা অবৈধ কয়লা বাজেয়াপ্ত করা হবে। রাজ্য পুলিশ ও ইসিএলের শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে এ সব বাজেয়াপ্ত করবে। যে কয়লা বাজেয়াপ্ত হবে সেগুলি ইসিএল কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ হবে।
জেলা প্রশাসনের বৈঠক শেষেই সিআইএসএফ ও রাজ্য পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে প্রায় আড়াই হাজার টন মজুত করে রাখা চোরাই কয়লা বাজেয়াপ্ত করে। অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন, সালানপুরের মোহনপুর জঙ্গল, খয়রাসোল, রসুনপুর, সংগ্রামগড় এলাকা থেকে এ সব কয়লা পাকড়াও হয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে এ গুলি বিভিন্ন ছোট ইস্পাত কারখানা, স্পঞ্জ আয়রন ও গুল কারখানায় পাচার করত দুষ্কৃতীরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.