|
|
|
|
পানীয় জল, রাস্তার সমস্যায় জেরবার চাঁচলের বাসিন্দারা |
বাপি মজুমদার • চাঁচল |
দুই বছর আগে একদিনেই ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৩ মহিলা-সহ চারজনের মৃত্যু হয়েছিল। আক্রান্ত হওয়ার পর খাটিয়ায় চাপিয়ে চার জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু বেহাল রাস্তা দিয়ে তাঁদের নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছানো যায়নি।
দুই সপ্তাহ আগের ঘটনা। খাটিয়ায় চাপিয়ে জ্বরে আক্রান্ত ২৮ বছরের বাবুরাম ওঁরাওকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন বাসিন্দারা। কিন্তু হাঁটু দল কাদা পার হয়ে দেড় কিলোমিটার রাস্তা পার হতে দেড় ঘন্টা পার হয়ে যায়। রাস্তায় মৃত্যু হয় ওই যুবকের। উল্টে পা পিছলে পড়ে পা ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি হন এক খাটিয়া বাহককে। চলতি বছর নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে মঙ্গল কিসকু এবং চিকু কিসকু নামের দুই যুবক তিরবিদ্ধ হয়। বেহাল রাস্তা নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার আগেই দু’জন মারা যান। এগুলি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। মালদহের চাঁচলের কাশিমপুর গ্রামের বাসিন্দাদের যেন এটাই নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুধু রাস্তা নয়, দূষিত জল খেয়ে ডায়েরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। বাসিন্দারা জানান, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর পানীয় জলের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু লালচে ওই জল এতটাই গন্ধযুক্ত যে তা খাওয়া যায় না। তিন বছর আগে পরিশ্রুত জলের জন্য ফিল্টার বসানো হলেও তা চালু হয়নি। রাস্তা ও পানীয় জলের সমস্যায় গত লোকসভা ভোট বয়কট করেছিলেন বাসিন্দারা। তার পরেও প্রশাসন উদাসীন বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
চাঁচল-২ ব্লক প্রশাসনের অবশ্য কাশিমপুর এলাকার সমস্যার কথা অজানা নয়। বিডিও ভাস্কর মজুমদার বলেন, “ওই এলাকার রাস্তা ও পানীয় জলের সমস্যার কথা জানি। জলে প্রচুর ‘আয়রন’। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে সমস্যা মেটাতে বলা হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের তরফে দুটি নলকূপ বসানো হবে। আর অত বড় রাস্তা ব্লকের পক্ষে করা সম্ভব নয়। তবে দুটি রাস্তা সংস্কার করা হবে।” খেমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পারুল সিংহ বলেন, “পানীয় জল আর রাস্তায় সমস্যায় বাসিন্দারা জর্জরিত।
প্রশাসনের আশ্বাসে অবশ্য আশ্বস্ত হতে পারছেন না বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, কাশিমপুর থেকে সামসি, কড়িয়ালি পর্যন্ত যাওয়ার দুটি রাস্তা রয়েছে। দুটির দূরত্বই ৭ কিলোমিটার। বর্ষায় এক হাঁটু জল, কাদা আর অন্য সময় ধূলোয় ভর্তি ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। ঘুরপথে ভাদো এলাকা হয়ে চাঁচল পৌঁছানোর একটি রাস্তা রয়েছে। কিন্তু গ্রাম থেকে ওই রাস্তার দূরত্ব আড়াই কিলোমিটার। তবে রাস্তা না বলে সেটিকে চাষের জমি বলাই ভাল। এলাকার বাসিন্দো গৌতম মণ্ডল, লক্ষণ টুডুরা বলেন, “বর্ষাকালে এলাকার ছেলেমেয়েদের স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ঘরে ঘরে পেটের রোগ দেখা দেয়। অসুস্থদের হাসপাতালে পৌঁছানো যায় না। প্রশাসনকে গণস্বাক্ষর করে সমস্যার কথা জানিয়েছি।” |
|
|
|
|
|