|
|
|
|
সারান্ডায় কোবরাদের
আতঙ্ক মশক বাহিনী |
ঋজু বসু • রাঁচি |
মাওবাদী-দমনে মাঠে নেমে মশার সঙ্গে মোকাবিলা। জঙ্গি-দমন অভিযানের ছক ভেঙে চলতি বর্ষায় তথাকথিত ‘অসময়ে’ মাওবাদীদের বেকায়দায় ফেলার চেষ্টায় নেমে জঙ্গলের মশককুলই হয়ে উঠেছে কোবরাদের মাথাব্যথা। ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশায় সারান্ডার জঙ্গলে অভিযান চলাকালীন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কোবরা বাহিনীর এক জওয়ান মারা গিয়েছেন
বলে পুলিশকর্তারা স্বীকার করে নিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা জানাচ্ছেন,
১৫০-২০০ জন জওয়ান এখন ম্যালেরিয়ায় কাবু হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। চাইবাসা, মনোহরপুর, জামশেদপুর ও রাঁচির হাসপাতালে এই জওয়ানদের চিকিৎসা চলছে।
বর্ষার এই সময়টা বৃষ্টির দরুন জঙ্গল কার্যত অগম্য। তা-ই যৌথ বাহিনীরও সাধারণত এ সময়ে রণে ভঙ্গ দেওয়াই দস্তুর। জঙ্গলে মাওবাদী-জঙ্গিরাও এ সময়টা একটু ‘বিশ্রাম’ পেয়ে নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ পায় বলে অভিমত পুলিশকর্তাদের। এটা বুঝেই এ বছর ঝাড়খণ্ড-ওড়িশায় কৌশল পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এশিয়ার বৃহত্তম শালগাছের অরণ্য সারান্ডার জঙ্গলে তাই দিন পনেরো আগেই শুরু হয়েছে ‘অপারেশন মনসুন’। কিন্তু অভিযানের সঙ্গে-সঙ্গে মাওবাদীদের কাছ থেকে তেমন বাধা না-এলেও তীব্র হামলা শুরু করছে মশক-বাহিনী। আপাতত জঙ্গিদের থেকেও মশার হামলা ঠেকাতেই জওয়ানেরা কাবু বলে চাইবাসা তথা কোলহান অঞ্চলের ডিআইজি নবীনকুমার সিংহ স্বীকার করে নিচ্ছেন।
ডিআইজি বলেন, “এই সময়টা সাধারণত জঙ্গিরা প্রস্তুত থাকে না-দেখেই এ বার বর্ষায় অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সারান্ডা সাধারাণত জঙ্গিদের ‘মুক্তাঞ্চল’ বলে মনে করা হলেও জঙ্গলের মধ্যে অনায়াসে বিনা বাধায় অনেকটা ঢুকেও যায় যৌথ বাহিনী। গত কয়েক দিনে কোনও ল্যান্ডমাইনের ফাঁদের সামনেও পড়তে হয়নি। কিন্তু মশার জ্বালায় অতিষ্ঠ হতে হচ্ছে।” সিআরপি-র ডিআইজি ভানুপ্রতাপ সিংহ অপারেশন চলাকালীন অসুস্থ জওয়ানদের বিষয়টি দেখভাল করতে রাঁচি আসতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি বলেন, “কোবরা ২০৯ নম্বর ব্যাটালিয়ানের জওয়ান বীরেন্দ্র সাইনিকে প্রথমে কপ্টারে করে চাইবাসার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে জামশেদপুরে টাটা মেন্য হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জামশেদপুরের পথে কাল রাতে ওই জওয়ান মারা যান।” রাঁচির রিমসেও বেশ কয়েক জন জওয়ান এখন ভর্তি। কোলহানের ডিআইজি বলেন, “ম্যালেরিয়ার মোকাবিলা সারান্ডায় নতুন কিছু নয়। এ বার জওয়ানদের আগেই প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। ২০ লক্ষ টাকার ওষুধ, ম্যালেরিয়া নির্ণয়ের কিট ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে নিয়েই অভিযান চলছে। তা-ও কিছু ঘটনা ঘটছে। কিন্তু সংক্রমণের বিপদ নিয়ে সরকার উদাসীন নয়।” |
|
|
|
|
|