|
|
|
|
না পড়িয়েই বেতন নেওয়ার অভিযোগ মালদহ মেডিক্যালে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মালদহ |
মাসের পয়লা তারিখে সকালে তাঁরা মালদহে আসছেন। বেতন তুলছেন। আবার ওই রাতেই ট্রেনে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। মালদহ মেডিক্যাল কলেজের ১৩ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠার পরে তাঁদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হল। রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রীর মিত্রের পরামর্শে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে সুপারিশ পাঠাচ্ছে।
ওই ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩-৪ মাস ধরেই কোনও কাজ না-করে ওই শিক্ষকেরা বেতন তুলছেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নজরে আসতেই রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী তথা মালদহ মেডিকাল কলেজের পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান সাবিত্রী মিত্র ওই শিক্ষকদের রাজ্যের অন্য কোনও মেডিক্যাল কলেজে কিংবা অন্য কোনও কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন। রবিবার মালদহ মেডিক্যাল কলেজের পরিচালন কমিটির জরুরি বৈঠকে মন্ত্রী নিজেই ওই প্রসঙ্গ তোলায় অস্বস্তি পড়ে যান মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস ভটাচার্য, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের যুগ্ম স্বাস্থ্য অধির্কতা মৃণাল বিশ্বাস-সহ কমিটি অন্যান্য সদস্যরা।
মন্ত্রী বলেন, “মালদহ মেডিক্যাল কলেজের ১৩ জন শিক্ষক কেবলমাত্র বেতন নিতে মালদহে আসছেন। বেতন নিয়ে ওইদিনই বাড়ি চলে যাচ্ছেন। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ বলছেন, দ্বিতীয় বর্ষ, তৃতীয় বর্ষের কোনও ছাত্র নেই। ক্লাস নেই বলে ওই শিক্ষকরা মালদহে থাকছেন না। ছাত্র নেই বলে মেডিক্যাল কলেজে থাকবেন না, অথচ প্রতি মাসে পয়লা তারিখে বেতন তুলে যাবেন এটা চলতে পারে না। অধ্যক্ষকে বলেছি যে সমস্ত শিক্ষক বসে বসে বেতন নিচ্ছেন তাঁদের রাজ্যের অন্য কোনও মেডিক্যাল কলেজ কিংবা অন্য কোথাও স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজে লাগানো হোক।”
মন্ত্রীর এই পরামর্শ পাওয়ার পরই ওই ১৩ জন শিক্ষককে অন্য কোনও মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র পড়ানোর আর্জি জানিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালদহ মেডিকাল কলেজ কতৃর্পক্ষ। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, পয়লা অগস্ট থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজের পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। ১০০ আসন বিশিষ্ট কলেজে ১৫টি আসন সর্বভারতীয় স্তরের জন্য সংরক্ষিত। ৮৫ টি আসনের মধ্যে প্রথম বর্ষে ৮৩ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছেন। মেডিক্যাল কলেজ পঠনপাঠন শুরুর ৩-৪ মাস আগেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ২২ জন শিক্ষককে নিয়োগ করে। ওই ২২ জন শিক্ষকের মধ্যে এখন মাত্র ৯ জন কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিচ্ছেন। বাকি ১৩ জনের কোনও কাজ নেই। সেই সুযোগেই ওই ১৩ জন শিক্ষক কলেজে না-থেকে বাড়িতে বসে দিন কাটাচ্ছেন। বেতন তুলছেন বলে অভিযোগ।
মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, “কলেজে ২২ জন শিক্ষক। প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের অ্যানাটমি, ফিজিওলজি ও বায়ো-কেমিস্ট্রি পড়ানোর জন্য ৯ জন শিক্ষক ক্লাশ নিচ্ছেন। প্রথম বর্ষে যেহেতু তাঁদের কোনও ক্লাশ নেই, তাই বাকি ১৩ জন বেতন নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। মন্ত্রীর নির্দেশে বাকি ১৩ জন শিক্ষককে অন্য কোনও মেডিক্যাল কলেজে কাজে লাগানোর জন্য চিঠি পাঠানো হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|