|
|
|
|
ময়নাগুড়িতে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই, বিপাকে পড়ুয়ারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়নাগুড়ি |
নির্মল রায়। ময়নাগুড়ি শহিদগড় হাই স্কুলের ওই ছাত্র মাধ্যমিক পাশ করে বিপাকে পড়েছে। স্কুলে-স্কুলে ঘুরেছে। কোথাও ভর্তি হতে পারেনি।
নূর মহম্মদ। সাপ্টিবাড়ি করতলি হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেছে। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ব্লকের পাঁচটি স্কুলে আবেদন করেছে। লাভ হয়নি। শুধু নির্মল বা নূর নয়। অন্তত আড়াইশো মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীর একই পরিস্থিতি। ওই পড়ুয়ারা প্রত্যেকে ময়নাগুড়ি ব্লকের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। অভিযোগ উঠেছে, বেড়ে চলা মাধ্যমিক পাশ ছাত্রছাত্রীর সংখ্যার অনুপাতে এলাকায় উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল গড়ে না-ওঠায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সমস্যা জটিল হয়েছে। সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ব্লক প্রশাসনের কর্তা থেকে বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব মনে করছেন অন্তত চারটি মাধ্যমিক স্কুলকে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নিত করা জরুরি। ময়নাগুড়ির বিডিও সম্রাট চক্রবর্তী বলেন, “একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য অন্তত চারটি মাধ্যমিক স্কুলকে উচ্চমাধ্যমিকে উন্নিত করা প্রয়োজন। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়নাগুড়ি ব্লকে মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে ১৭টি। উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল ১২টি। মাধ্যমিক স্কুলগুলি থেকে যে সংখ্যক ছাত্রছাত্রী প্রতি বছর পাশ করছেন উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলিতে তাঁদের ঠাঁই হচ্ছে না। এ বার মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ছাত্রছাত্রী। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২৫০ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তির সুযোগ পায়নি। অনেক চেষ্টার পরে ওই ছাত্রদের মধ্যে ১১৬ জনকে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া গেলেও বাকি ১৩৪ জনের ক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন। কেন? কয়েক জন প্রধান শিক্ষক জানান, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের নির্দেশ রয়েছে একাদশ শ্রেণিতে ৩৩০ জনের বেশি ভর্তি নেওয়া যাবে না। স্কুলগুলিতে পর্ষদের নিয়ম মেনে ছাত্র ভর্তির আসন সংখ্যা শেষ হয়েছে। তাই কেউ পর্ষদের বিশেষ নির্দেশ ছাড়া আসন সংখ্যা বাড়াতে রাজি হচ্ছেন না।
ওই জটিলতা কাটাতে প্রশাসনের কর্তারা উদ্যোগী হতেই পঠনপাঠনের মান রক্ষার প্রশ্নে স্কুলগুলিতে নতুন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। ময়নাগুড়ি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিবব্রত রায় বলেন, “অবশেষে ৩৬৫ জনকে ভর্তি নিয়েছি। পর্ষদের অনুমতির জন্য বারবার যোগাযোগ করছি। এখনও সাড়া পাইনি। চিন্তায় আছি।” প্রশাসনের চাপে ভোটপট্টি এইচ বি এল হাই স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮৭ জন। কিন্তু এ ভাবে াসন সংখ্যা বাড়ানো হলেও প্রতিটি মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীকে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া এখনও সম্ভব হয়নি। উদ্ভুত পরিস্থিতি দেখে ভোটপট্টি এইচ বি এল হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষক মৃনাল পাল বলেন, “ছাত্রদের পড়ার সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু স্কুলের পরিকাঠামোগত সমস্যার কথাও ভাবতে হবে।” উভয়সঙ্কটে পড়ে বর্তমান পরিকাঠামোতে সমস্ত ছাত্র ভর্তির সুযোগ পাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন শিক্ষকদেরই একাংশ। তাঁরা জানান, যে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তির সুযোগ পেয়েছে একসঙ্গে স্কুলে হাজির হলে ক্লাস করা পরের কথা। বসতে দেওয়া যাবে না। পিএসইউ-র জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সদস্য মনোজ দেবনাথ বলেন, “শিক্ষকদের আশঙ্কা অমূলক নয়। সে জন্যই অন্তত চারটি মাধ্যমিক স্কুলকে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নিত করার দাবি জানানো হয়েছে।” |
|
|
|
|
|