|
|
|
|
সুশান্ত প্রশ্নে মত জেলার |
আলিমুদ্দিনের ‘সক্রিয়’ হওয়া উচিত ছিল আগেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সুশান্ত ঘোষের ব্যাপারে আলিমুদ্দিনের আরও আগে ‘সক্রিয়’ হওয়া উচিত ছিল বলে সিপিএমের জেলা নেতারা মনে করেন। রবিবার দলের বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠকে বিভিন্ন জেলার নেতারা
বলেন, সুশান্ত ঘোষের ব্যাপারে এখন দলের রাজ্য নেতৃত্ব যে ‘সক্রিয়তা’ দেখাচ্ছেন, তা আরও আগে দেখানো
উচিত ছিল। তাঁদের মতে, ‘আইনি লড়াই’-এ আরও সক্রিয়তা দরকার ছিল। পাশাপাশি, এখন যে ভাবে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে, তা-ও আগে করা উচিত ছিল।
কঙ্কাল-কাণ্ডে অভিযুক্ত হয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষের গ্রেফতারের পরে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব তৃণমূল জোট সরকারের বিরুদ্ধে ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’র অভিযোগ তুলেছেন। শুধু দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু নন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও সুশান্তবাবুর বিরুদ্ধে তাঁর দীর্ঘদিনের অভিমতকে শিকেয় তুলে দিয়ে প্রকাশ্যেই ‘প্রতিহিংসা রাজনীতি’-র অভিযোগের শরিক হয়েছেন। বিধানসভার বাইরে দলের ছাত্র-যুব সংগঠনের বিক্ষোভ থেকে আরম্ভ করে পাড়ায় পাড়ায় জমায়েত সব কিছুই করা হচ্ছে সুশান্তবাবু গ্রেফতার হওয়ার পর। দলের রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আগামী দিনে প্রতিবাদের মাত্রা আরও ‘তীব্র’ করা হবে।
জেলার নেতাদের মতে, দলের রাজ্য নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা সঠিক। কিন্তু তা করতে দেরি হয়ে গিয়েছে। যখন সুশান্তবাবুর বিরুদ্ধে সিআইডি নিত্য নতুন অভিযোগ তুলছে, তাঁর বাড়ি ও ফ্ল্যাটে পুলিশ হানা দিচ্ছে, প্রতিদিন তা সংবাদমাধ্যমে বড় করে দেখানো হচ্ছে, তখন এ ভাবে পাল্টা প্রচার করে জনমানসে ‘প্রভাব’ ফেলা মুশকিল। বরং কী হতে পারে, তা আগাম আঁচ করে আরও আগেই দলের পক্ষ থেকে প্রচারে নামা উচিত ছিল। আইনি লড়াইয়ে আরও ‘সক্রিয়’ হওয়া উচিত ছিল। ভাল আইনজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত ছিল। বৈঠকে না বললেও রাজ্য কমিটির বিভিন্ন সদস্য একান্তে নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতায় বলছেন, কঙ্কাল-কাণ্ডে সুশান্তের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়েছে। এই পরিস্থিতি হওয়ার আগেই আলিমুদ্দিনের নেতাদের তৎপর হওয়া উচিত ছিল।
আলিমুদ্দিন আগাম তৎপর না হওয়ার দায় গিয়ে পড়ে মূলত রাজ্য সম্পাদক বিমানবাবু ও বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের উপরে। কারণ, সুশান্তবাবু দলের দীর্ঘদিনের বিধায়ক। বৈঠকে কারও নাম করে কোনও জেলা নেতা সমালোচনা করেননি। কিন্তু একাধিক নেতা মনে করেন, যখন গ্রেফতার এড়াতে সুশান্তবাবু গা-ঢাকা দিয়েছিলেন, তখন বিষয়টি নিয়ে বিমানবাবু, সূর্যবাবুরা বিশেষ মাথা ঘামাননি। তাঁদের ধারণা হয়েছিল, সুশান্তবাবু শেষ পর্যন্ত নিম্ন আদালত থেকেও জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু এর উল্টোও যে হতে পারে, তা তাঁদের আগেই ভাবা উচিত ছিল। প্রথম দিনের বৈঠক শেষে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক প্রতিনিধি বলেন, “বিমানদা আজ, সোমবার জবাব দেবেন। দেখি তিনি কী বলেন।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সিপিএমের গোষ্ঠী রাজনীতিতে সুশান্তবাবুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীও রয়েছে।
স্বয়ং সূর্যবাবুই তার অংশ। এ দিন কিন্তু সুশান্তবাবুকে ‘ফ্রি-হ্যান্ড’ দেওয়ার প্রসঙ্গে কোনও কথা হয়নি। বরং কয়েক জন বলেন, সুশান্ত যা করেছেন দলের স্বার্থেই করেছেন। তাই শেষ পর্যন্ত সব রকম আইনি সাহায্য দিয়ে দলের তাঁর পাশে থাকা উচিত। |
|
|
|
|
|