এ বার কাজ: ঘড়ি ধরে ‘মক টেস্ট’ দেওয়া

রাহুল রেড্ডি
ডিরেক্টর, টাইম


প্রস্তুতির বিষয়টা সম্পূর্ণ নির্ভর করে ছাত্র বা ছাত্রীর ওপর। এই সময় নিজেকেই যাচাই করতে হবে যে সে কতটা প্রস্তুত। যারা কয়েক মাস আগে থেকে শুরু করেছে আশা করি তাদের এত দিনে পঁচাত্তর থেকে আশি শতাংশ প্রস্তুতিই হয়ে গিয়েছে। আর যারা এই কিছু দিন হল শুরু করেছে তাদের কিন্তু আগামী তিন-চার সপ্তাহের মধ্যে অবশ্যই পরীক্ষার যাবতীয় ‘বেসিক’ বিষয়গুলি তৈরি করে নিতে হবে। যারা ইতিমধ্যেই অনেকটা প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছ তাদের এখন কাজ হচ্ছে ঘড়ি ধরে মক টেস্ট দেওয়া। যত মক টেস্ট দেবে  কোন অংশগুলি তুমি ভাল পারছ আর কোথায় কোথায় তোমার দুর্বলতা থেকে যাচ্ছে, ততই সেটা বুঝতে পারবে। ফলে সময় থাকতেই সেই দুর্বল জায়গাগুলি শুধরে নেওয়ার সুযোগ থাকছে তোমার কাছে।
যারা কয়েকদিন হল পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছ, তারা বেসিক বিষয়গুলি পড়ার পাশাপাশি চেষ্টা করো সমান্তরাল ভাবে মক টেস্ট দিয়ে যেতে। যখন বেসিকগুলি তোমার জানা হয়ে যাবে তখন মক টেস্টটা সেকশন অনুযায়ী সময় ধরে কিছু দিন প্র্যাকটিস করো। তার পর পুরো পেপারের টেস্ট দিতে থাকো। আর পরীক্ষা দিতে গিয়ে যে জায়গাগুলি তোমার এখনও দুর্বল বলে মনে হচ্ছে সেগুলির ওপর ভাল করে জোর দাও।


ভার্বাল এবিলিটিতে প্রশ্ন থাকে প্যারাগ্রাফ কমপ্লিশন, জাম্বলড সেন্টেনসেস, সেনটেন্স কারেকশন, ফাইন্ড দি অ্যাপ্রোপ্রিয়েট সামারি ফর দি ফলোইং প্যারাগ্রাফ ইত্যাদির ওপর। তাই এই সেকশনে ভাল করতে গেলে ইংরেজি ভাষাটা ঠিক মতো জানতে হবে। এর জন্য বিভিন্ন রকমের বিষয় পড়া দরকার। দর্শন থেকে অর্থনীতি, ফিকশন থেকে আর্ট ও কালচার। সঙ্গে সংবাদপত্র, পত্রিকা, জার্নাল দেখার অভ্যেস করতে হবে। পারলে ইন্টারনেটেও এই ধরনের যে সব খবর বেরোয় সেগুলি দেখা যেতে পারে। যে বিষয়টা পড়লে সেটি এক-দু’বার পড়ার পরই একটা সার-সংক্ষেপ লিখে ফেল। এ ভাবে যত অনুশীলন করবে, তত যে কোনও বিষয়ের মূল বক্তব্যটি খুব তাড়াতাড়ি ধরে ফেলার ক্ষমতা তুমি আয়ত্ত করতে পারবে। ব্যাকরণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নিয়মাবলি এবং সাধারণ ত্রুটির ওপর নজর দাও। সঙ্গে নিজের ভোকাবুলারিও বাড়াতে থাকো। অনেক শব্দের একাধিক ব্যবহার থাকে। সেগুলি অধ্যয়ন করো। এর জন্য সংবাদপত্র, বিভিন্ন ভাল বই, ডিকশনারির সাহায্য নাও।
ডেটা ইন্টারপ্রিটেশন এবং কোয়ান্টিটেটিভ অ্যাপটিটিউড-এর জন্য অঙ্কের দিকে বেশি জোর দিতে হবে। নাম্বার সিস্টেম, জিয়োমেট্রি, পার্মুটেশন ও কম্বিনেশন, পার্সেন্টেজ, অ্যালজেব্রা, অ্যাভারেজ, ফাংশন, প্রোগ্রেশন, সিরিজ ইত্যাদি অধ্যায়গুলি মন দিয়ে পড়ো।
এগুলি অধিকাংশই আমাদের একাদশ বা দ্বাদশ শ্রেণিতে থাকে। কোয়ান্টিটেটিভ অ্যাপ্টিটিউডের ক্ষেত্রে ক্যালকুলেশনটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ডেটা ইন্টারপ্রিটেশন-এ পাই চার্ট, বার ডায়াগ্রাম, লাইন চার্ট-এর মতো ছবি দিয়ে প্রশ্ন। এখানে দ্রুত অঙ্ক করার ক্ষমতা এবং পার্সেন্টেজ-এর (শতাংশ) জ্ঞান খুব ভাল থাকতে হবে। যেখানে অঙ্কের সমীকরণ মনে রাখার দরকার সেই সব ফর্মুলাগুলোকে একেবারে কণ্ঠস্থ করে রাখো। আর লজিক্যাল রিজনিং-এ তো ক্রিটিকাল রিজনিং, স্টেটমেন্টস অ্যান্ড অ্যাসাম্পশনস, পাজলস, সিকোয়েন্সিং-এর মতো বিষয়ের ওপর প্রশ্ন থাকে। এই সেকশনটাতেও নজর দাও প্রস্তুতির সময়।
ভাল হয় যদি প্রস্তুতির জন্য কোনও ভাল কোচিং সেন্টারে যোগ দিতে পারো। তাঁরা পরীক্ষার ধাঁচগুলি সম্পর্কে তোমাদের ভাল প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন। আর যদি মনে হয় ক্লাসরুম কোচিং-এ তোমাদের সময়ে বা খরচে কুলোবে না তা হলে অন্য ভাবে প্রস্তুতি নাও। এখন এই সব সেন্টারগুলিতে অনলাইন প্র্যাকটিস পেপার পাওয়া যায়। এই পেপারগুলি তুমি দু’ভাবে সলভ্ করার সুযোগ পাবে। কিছুটা বাড়িতে বসে আর কিছুটা কোচিং সেন্টারে গিয়ে।


এ বারের ক্যাট পরীক্ষার একটা বড় সুবিধে হল ছেলেমেয়েদের আলাদা করে বিভিন্ন সেকশনের জন্য সময় দিতে হবে না। পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ক্যাট কর্তৃপক্ষই এটা করে দিয়েছেন। দু’টি সেকশনের প্রত্যেকটার জন্যেই তোমরা পাচ্ছ ৭০ মিনিট করে। কম্পিউটার স্ক্রিনে প্রথম বিভাগটা পেয়েই এক বার সব ক’টি প্রশ্ন মন দিয়ে চোখ বুলিয়ে নেবে। চেষ্টা করো যতগুলো প্রশ্ন তুমি ঠিক ঠিক জানো, সেগুলি টিক দিয়ে ফেলার। যত তাড়াতাড়ি তুমি জানা প্রশ্নগুলি করে ফেলতে পারবে তত তুমি সময় পাবে বাকি প্রশ্নগুলি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করার। এটা নিশ্চয়ই জানো যে ক্যাট-এ নেগেটিভ মার্কিং আছে। ফলে কোনও প্রশ্ন একেবারে না জানলে বা সামান্য জানলেও অহেতুক কোনও ঝুঁকি নিতে যেও না। কোনও প্রশ্নে আটকে গেলে সেটার জন্য বেশি সময় নষ্ট না করে পরের প্রশ্নে চলে যাও। এটা মনে রাখবে পরীক্ষায় যে কোনও বিভাগের সব ক’টি প্রশ্নের উত্তর করা মুশকিল। হতেই পারে যে ডেটা ইন্টারপ্রিটেশনে কোনও একটা প্রশ্নে চারটি ভাগ রয়েছে। তার মধ্যে দুটো তুমি পারছ। সেগুলোই ঠিকঠাক উত্তর করে দাও। ছেড়ে দিলে তো নম্বর তোলার ব্যাপারে আখেরে তোমারই ক্ষতি। এই সূত্রেই বলে রাখি পরীক্ষার প্রস্তুতির সময় কোনও অধ্যায়ই ছেড়ে দিও না। হয়ত দেখলে সেই অধ্যায় থেকেই এ বার বেশ কয়েকটি প্রশ্ন এসেছে। তখন? আর প্রত্যেকটা সেকশনই নির্ধারিত সময়ের পাঁচ থেকে দশ মিনিট আগে শেষ করার চেষ্টা করবে যাতে কিছুটা রিভিশনের সুযোগ থাকে।
এ বার ক্যাটের নতুন পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রীরা সেকশনাল কাট অফ মার্কের ক্ষেত্রে কিছু বাড়তি সুবিধে পাবে। এই মার্কিং-এর ওপর ভিত্তি করে আই আই এম বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের ইন্টারভিউতে ডাকে। আগে বিভিন্ন সেকশনের জন্যেই আলাদা কাট অফ নম্বর থাকত। অর্থাৎ ডেটা ইন্টারপ্রিটেশনের জন্যে একটা কাট অফ নম্বর, ভার্বাল এবিলিটির জন্যে আর একটা। এ বার থাকছে মোট দুটো সেকশন। তাই কাট অফ মার্কও দুটোই হবে। এর ফলে কেউ যদি ডেটা ইন্টারপ্রিটেশন তেমন ভাল নাও করে থাকে তা হলেও তার চিন্তা নেই। এখন কোয়ান্টিটেটিভ এবিলিটি ও ডেটা ইন্টারপ্রিটেশন মিলিয়ে কাট অফ মার্ক তৈরি হবে। ফলে দুটো মিলিয়ে তার নম্বর কাট অফ-এর ওপরে থাকতেই পারে।


সাধারণত ছ’মাস থেকে এক বছর আগে থেকে এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। চেষ্টা করবে গ্র্যাজুয়েশনের ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েই ক্যাট দিয়ে দিতে। যদি পেয়ে যাও তা হলে আর বছর নষ্ট করতে হবে না। আমি দেখেছি অনেকেই চাকরি করতে করতে ক্যাট পরীক্ষা দেন। আমার মতে, চাকরি করতে করতে ক্যাট পরীক্ষা দেওয়াটা বেশ শক্ত। যদিও তাতেও লোকে যে পায় না তা নয়। তবে ক্যাট দেওয়ার সেরা সময় অবশ্যই স্নাতক স্তরের পর। আর, এক বার না পেলে বা পরীক্ষায় পেয়েও ভালো ইনস্টিটিউটে যোগ দিতে না পারলে পরের বার ক্যাট পরীক্ষা দিয়ে ভাল জায়গায় ঢোকা যেতেই পারে।

না জানলে সোজা বলে দাও যে, তুমি জানো না: রোহন দাস
   


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.