না জানলে সোজা বলে দাও যে, তুমি জানো না |
কী ভাবে তৈরি হতে হবে সেই বিষয়ে প্রস্তুতি-কে জানালেন
ইউনাইটেডওয়ার্ল্ড স্কুল অব বিজনেস-এর প্রাক্তন ছাত্র |
রোহন দাস
রিটেল ম্যানেজমেন্ট ট্রেনি, স্পেনসার্স রিটেল লিমিটেড
|
|
ক্যাট পরীক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ গ্রুপ ডিসকাশসন ও পার্সোনাল ইন্টারভিউ (জিডি-পিআই)। যে সব কোচিং ইনস্টিটিউট থেকে ছাত্রছাত্রীরা ক্যাটের প্রস্তুতি নেয় সেখানে জিডি-পিআই-এর ওপর আলাদা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যেমন, টাইম, আই এম এস, টি সি সি-এ ক্যাটের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি জিডি পিআই-এর জন্য ছেলেমেয়েদের বিশেষ ভাবে তৈরি (গ্রুমিং) করা হয়। সব ছাত্রছাত্রীর স্বভাব তো এক রকমের হয় না। কেউ হয় মুখচোরা, আবার কেউ বহির্মুখী। কোচিং সেন্টারগুলি ছাত্রছাত্রীদের এই সব বিষয়গুলির ওপর নজর দিয়ে তাদের সে ভাবে তালিম দেয়।
জিডি পিআই-এর ক্ষেত্রে একটা জিনিস মনে রাখতে হবে নিজের কাছে পরিষ্কার থাকা। ইন্টারভিউ প্যানেলে কোনও প্রশ্ন তুমি যদি না জানো, তা হলে সোজাসুজি বলে দাও যে তুমি বিষয়টা জানো না। তবে ভবিষ্যতে তুমি সেটা অবশ্যই জেনে নেবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনও প্রশ্ন না পারলে বা সেটায় আটকে গেলে ছেলেমেয়েরা ভয় পেয়ে যায় এই ভেবে যে ‘এই যাঃ আমি বোধ হয় পাশ করতে পারলাম না।’ জেনে রাখো, ভয় পেলে কিন্তু জানা জিনিসও ভুলে হয়ে যায়। ইন্টারভিউ প্যানেলে যাঁরা থাকেন, তাঁরা এটাই
দেখতে চান যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতি তুমি কী ভাবে সামলাও। ইন্টারভিউতে একটা কমন প্রশ্ন থাকে ‘তুমি এই বিষয়টা নিয়ে এত দূর (যেমন বি টেক, বি এসসি) পড়ে এসেছ। তা হলে এর পর উচ্চশিক্ষা (ধরো, এম টেক) না পড়ে এম বি এ পড়তে এলে কেন?’ সেখানে সোজাসাপটা উত্তর হওয়া উচিত, ‘এম বি এ পড়ে ম্যানেজারিয়াল স্কিলস সম্পর্কে আমার যে ধারণা হবে সেটা আমি চাকরিতে কাজে লাগাতে পারব।’
জিডি-পিআই এর প্রস্তুতির ক্ষেত্রে আমি বলব প্রতি দিন খবরের কাগজটা খুঁটিয়ে পড়া উচিত। টাইমস অব ইন্ডিয়া, টেলিগ্রাফ পড়ার পাশাপাশি ইকনমিক টাইমস বা ফিনানসিয়াল এক্সপ্রেস মতো কাগজ দেখে রাখলে ভাল হয়। দেশে বিদেশে কোথায় কী হচ্ছে, বিশ্ববাজারের আর্থিক পরিস্থিতি কী রকম এই ধরনের বিষয় জানা থাকলে ইন্টারভিউ-এর সময় ‘অন স্পট’ উত্তর করতে খুব সুবিধে হয়। যেমন ধরো, ইন্টারভিউতে তোমাকে প্রশ্ন করা হল যে চিন এবং ব্রাজিলের মধ্যে এখন সম্পর্ক কেমন। তুমি হয়তো সেটা তেমন বিশদ ভাবে জানো না। কিন্তু কাগজে মোটমুটি
দুটি দেশের অর্থনীতি, তাদের দ্বিপাক্ষিক সংযোগ সম্পর্কে তুমি পড়েছ। সেই থেকেই তুমি এই
উত্তরটা বলে দিতে পারবে। আর তাতেই বোর্ডের সুনজরে তুমি চলে আসবে।
গ্রুপ ডিসকাশন-এর সময় অনেকেই মনে করে যে আগে অন্য জন বলে নিক, তার পর আমি বলব। এই করতে গিয়ে শেষমেষ সে আর কিছুই বলতে পারে না। বরং অন্যেরা বিষয়টা নিয়ে বলে বক্তব্য শেষ করে ফেলে। এটা কোরো না। চেষ্টা করবে যথার্থ বক্তব্য দিয়ে হয় বিষয়টা শুরু করতে, না হলে শেষ করতে। বা তোমার বক্তব্যকে কোনও সময়ে তুলে ধরতে। অনেক সময় জিডি-র যে বিষয়টা নিয়ে তুমি বলা শুরু করেছ হঠাৎ মাঝখান থেকে কেউ সেটা নিয়ে বলতে শুরু করল। সে ক্ষেত্রে থেমে যেয়ো না। বা তার থেকেও বেশি জোরে কথা বলতে গিয়ে জিনিসটা চেঁচামেচির পর্যায়ে নিয়ে যেও না। বরং নম্রভাবে তাকে বলো যে তোমার বক্তব্যটা শুনে নিয়ে সে তার বক্তব্য পেশ করুক। আর যখন কোনও বিষয়ের প্রসঙ্গ তোমার কাছে এসে শেষ হচ্ছে তখন চেষ্টা করবে আগের প্রসঙ্গটা যথাযথভাবে শেষ করে বিষয়টির আর একটা নতুন দিক তুলে ধরতে।
জিডি ও পিআই-তে সাবলীলভাবে ইংরেজি বলতে জানাটা খুব জরুরি। এই দক্ষতা তোমাকে কিন্তু অন্যদের তুলনায় কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখবে। আর পার্সোনাল ইন্টারভিউ-এর ক্ষেত্রে সততা, ইংরেজিতে কথা বলায় স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি সফট্ স্কিলও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
|
|