|
|
|
|
|
|
ম্যানেজমেন্ট-এর চৌকাঠে.. |
ক্যাট: হাতে ঠিক দু’মাস |
কঠিন পরীক্ষা। লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রীর প্রতিযোগিতা। নেগেটিভ মার্কিং। পাল্টেছে পরীক্ষার ধরনও।
কী ভাবে নিজেকে তৈরি করবে? কোন কোন বিষয়ে সাবধান হবে? জানাচ্ছেন সৌরজিৎ দাস |
কমন অ্যাডমিশন টেস্ট, সংক্ষেপে ক্যাট। দেশের প্রথম সারির ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটগুলিতে যোগ দেওয়ার জন্য প্রতি বছর লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রী এই সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। সম্প্রতি এই পরীক্ষার দিন ঘোষণা হয়ে গেল। পরীক্ষাটি হবে ২২ অক্টোবর থেকে ১৮ নভেম্বর, কুড়ি দিন ধরে। প্রতি দিন আনুমানিক দুটি সেশন করে। একটা সকালে যেটা শুরু হবে ১০টা থেকে আর অন্যটি দুপুরে, ৩:১৫ থেকে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে দুটি সেশনের জন্য আলাদা প্রশ্নপত্র পৌঁছোবে ছাত্রছাত্রীদের কাছে। এ বছরও আই আই এম-এর সঙ্গে যুগ্মভাবে পরীক্ষাটি পরিচালনা করবে প্রোমেট্রিক।
|
যোগ্যতা |
স্নাতক স্তরে যারা কম পক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ (তফসিলি জাতি ও জনজাতির ক্ষেত্রে ৪৫ শতাংশ) করেছে, তারা এই পরীক্ষায় বসার যোগ্য। তা ছাড়া, এ বছর যারা স্নাতক বা সমতুল স্তরের সর্বশেষ পরীক্ষা দেবে কিংবা পরীক্ষা শেষে ফলের জন্য অপেক্ষা করছে তারাও আবেদন করতে পারে।
|
আবেদনের বৃত্তান্ত |
এ বছর ১৭ অগস্ট থেকে ক্যাট পরীক্ষার ভাউচার দেওয়া শুরু হয়েছে। পাওয়া যাবে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ছাত্রছাত্রীরা অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের নির্দিষ্ট কয়েকটি শাখা থেকে ১৬০০ টাকার বিনিময়ে ভাউচারটি কিনতে পারবে। তবে তফসিলি জাতি ও জনজাতি প্রার্থীদের এটি কেনার জন্য দিতে হবে ৮০০ টাকা। পরীক্ষার্থীর আশেপাশে কোথায় কোন অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের শাখা রয়েছে, সেই সম্পর্কে জানতে পারো http://www.catiim.in/axisbank_branch.html থেকে।
ভাউচারে দেওয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী ক্যাট-এর ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রার্থীকে তার নাম রেজিস্টার করাতে হবে। অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ ১৭ অগস্ট থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই সময়েই পরীক্ষার্থী তার পরীক্ষার দিন ঠিক করে নিতে পারবে। তবে কোনও কারণে সে আগের নির্ধারিত পরীক্ষার দিনটি পাল্টাতে চাইলে রেজিস্ট্রেশনের নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই সেটা পাল্টাতে হবে। রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে প্রার্থীর অ্যাডমিট কার্ড ই-মেল-এর মাধ্যমে পাঠিয়ে দেবে কর্তৃপক্ষ। এই সূত্রে বলে রাখি, রেজিস্টার করার আগে তোমার যেন বৈধ ই-মেল আইডি অবশ্যই থাকে। না হলে ক্যাট কর্তৃপক্ষ তোমাকে অ্যাডমিট কার্ডের কপি পাঠাতে পারবেন না। বন্ধু বা অন্য কারও ই-মেল কিন্তু এ ক্ষেত্রে স্বীকৃত হবে না।
আর একটা কথা। প্রার্থী যতগুলি ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের জন্যেই আবেদন করুক না কেন, তার জন্য একটি মাত্র ক্যাটের ভাউচার কিনলেই হবে। আর স্কুল পাশ করার সময় সার্টিফিকেট-এ যে নাম নথিভুক্ত ছিল ভাউচারটি কিনতে হবে সেই নামেই। পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন ও শিডিউলিং পদ্ধতি থেকে পরীক্ষার দিনের যাবতীয় করণীয় ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার জন্য সব মিলিয়ে একটা ‘প্র্যাকটিস টেস্ট’ তৈরি করেছে প্রোমেট্রিক। www.catiim.in ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘CAT 2011 Practical Test’-এ ক্লিক করলেই এই সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে পারবে ছাত্রছাত্রীরা।
|
পরীক্ষার খুঁটিনাটি |
২০০৯ সাল থেকেই ক্যাট হয়ে গিয়েছে কম্পিউটার বেসড টেস্ট। অর্থাৎ এখন আর কাগজে কলমে কোনও পরীক্ষা হয় না। পুরোটাই হবে কম্পিউটারে। এ বছর পরীক্ষার পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে।
আগের বছর প্রশ্নপত্রে তিনটি ভাগ ছিল
১) ডেটা ইন্টারপ্রিটেশন অ্যান্ড লজিক্যাল রিজনিং
২) কোয়ান্টিটেটিভ এবিলিটি
৩) ভার্বাল এবিলিটি। কিন্তু এ বছর সেখানে থাকবে দু’টি ভাগ
ক) কোয়ান্টিটেটিভ এবিলিটি ও ডেটা ইন্টারপ্রিটেশন এবং
খ) ভার্বাল এবিলিটি ও লজিক্যাল রিজনিং।
মোট সময় থাকবে দু’ঘন্টা পঁয়ত্রিশ মিনিট। যার মধ্যে প্রথমেই থাকবে পনেরো মিনিটের একটি টিউটোরিয়াল। আর বাকি দু’ঘন্টা কুড়ি মিনিটকে দুটো ভাগে করা হয়েছে দুটি সেকশনের জন্য। প্রথম সত্তর মিনিটে কোয়ান্টিটেটিভ এবিলিটি ও ডেটা ইন্টারপ্রিটেশন সেকশনের প্রশ্নোত্তর করতে হবে। আর বাকি সময়টা দেওয়া হবে ভার্বাল এবিলিটি ও লজিক্যাল রিজনিং-এর প্রশ্নের সমাধান করার জন্য।
এই সূত্রে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানিয়ে রাখি। |
|
১) পরীক্ষার্থীকে আগে কোয়ান্টিটেটিভ এবিলিটি ও ডেটা ইন্টারপ্রিটেশন সেকশনটাই করতে হবে।
২) প্রথম সেকশনের ৭০ মিনিট সময় শেষ হলে তবেই সে পরের সেকশনে যেতে পারবে। কারওর আগে শেষ হয়ে গেলেও সে কিন্তু পরের সেকশন অর্থাৎ ভার্বাল এবিলিটি ও লজিক্যাল রিজনিং-এর বিভাগে যেতে পারবে না।
৩) প্রথম সেকশনের পর তুমি যখন পরের সেকশনের প্রশ্নোত্তর করছ তখন আর আগের সেকশনের কোনও প্রশ্নে তুমি ফিরে যেতে পারবে না।
৪) সংশ্লিষ্ট সেকশনের জন্য প্রার্থীর হাতে আর কতটা সময় হাতে আছে সেটা বিবেচনা করার জন্য কম্পিউটার স্ক্রিনে এ বার টাইমার দেওয়া থাকবে।
৫) পরীক্ষার মধ্যে কোনও ব্রেক থাকবে না।
প্রতিটি বিভাগে মোট ত্রিশটি করে প্রশ্ন থাকবে। ঠিক উত্তরের জন্য পাওয়া যাবে তিন নম্বর, ভুল উত্তরে কাটা হবে ১ নম্বর।
পরীক্ষার শুরু হওয়ার আগে পনেরো মিনিটের যে টিউটোরিয়াল-এর কথা বললাম সেখানে ছাত্রছাত্রীদের কম্পিউটারে পরীক্ষা দেওয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে জানানো হবে। যেমন, ‘নেক্সট’, ‘প্রিভিয়াস’, ‘মার্ক’, ‘রিভিউ’ ইত্যাদি বোতামের কী ব্যবহার। যেমন ‘রিভিউ’ বোতামের সাহায্যে প্রার্থী দেখতে পাবে সে কতগুলো প্রশ্ন উত্তর করেছে, দ্বিধাগ্রস্ত বা না জানার জন্য কোন প্রশ্নকে ‘মার্ক’ করেছে আর কোনগুলি একেবারেই ধরেনি। কোনও নির্দিষ্ট প্রশ্নে যেতে হলেও তাকে এই রিভিউ বোতামটি ব্যবহার করতে হবে। কোনও প্রশ্ন উত্তর করার পর সন্দেহ থাকলে বা সেটা পরীক্ষার্থী বুঝতে না পারলে, প্রশ্নটি হাইলাইট করা যাবে ‘মার্ক’ বোতামের মাধ্যমে। এক বার ক্লিক করলেই মার্ক বোতামটির রং লাল হয়ে যাবে। ফলে ছাত্র বা ছাত্রীর মনে থাকবে যে সেই প্রশ্নটি তাকে পুনর্বিবেচনা করে দেখতে হবে।
টেস্টে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর জন্যই আলাদা আলাদা কম্পিউটার টার্মিনাল দেওয়া হবে এবং রাফ কাজ করার জন্য থাকবে সাদা পাতা। পরীক্ষার পর প্রার্থীকে সেই রাফ পাতাগুলি নিজেদের আসনেই রেখে যেতে হবে।
পরীক্ষার সময়ে যে যে জিনিস একদম ভুলবে না:
১) টেস্ট সেন্টারে আসার সময় সঙ্গে অ্যাডমিট কার্ড, ক্যাটের ভাউচার, তফসিলি জাতি/ জনজাতি হলে তার সাক্ষ্য হিসেবে কোনও বৈধ তথ্য, এবং ছবি শনাক্তকরণের কোনও জিনিস (যেমন ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, প্যান কার্ড, ভোটার আই ডি ইত্যাদি) রাখতে ভুলো না।
২) পরীক্ষার সময়ে সঙ্গে হাতঘড়ি, পেন, মোবাইল, ক্যালকুলেটর সহ কোনও ব্যক্তিগত জিনিস রাখা চলবে না।
৩) যাদের পরীক্ষা সকালে তারা অবশ্যই পরীক্ষার সেন্টারে অবশ্যই ৮:৩০-এর মধ্যে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করবে। তেমনই যারা দুপুরবেলায় পরীক্ষা দিতে আসবে তাদের ১:৪৫-র মধ্যেই ঢুকে যেতে হবে।
এ বছরের ক্যাটের ফলাফল বেরোবে ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি। এমনিতেও ক্যাট-এর ফলের সাধারণত এক বছরের স্বীকৃতি থাকত। তবে এ বছর থেকে ক্যাট-এর স্কোরের বৈধতার মেয়াদ আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু করছে আই আই এম গুলি সহ আরও ১০০টিরও বেশি বি স্কুল। যারা এ বছর পরীক্ষা দিচ্ছে তাদের ফল ৩১ ডিসেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত বিবেচ্য হবে। এর পর এই স্কোরের আরও বৈধতা থাকবে না।
|
|
|
|
|
|
|