|
|
|
|
বনগাঁয় ফুটবল মাঠে দুই রেফারিকে বেধড়ক মার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বনগাঁ |
একটি ফুটবল ম্যাচ পরিচালনা করতে গিয়ে রবিবার বনগাঁ মহকুমা স্টেডিয়ামে প্রহৃত হলেন রেফারি এবং সহকারী রেফারি। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রেফারির একটি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে একটি দলের কর্মকর্তা এবং সদস্য-সমর্থকেরা মাঠে ঢুকে দু’জনকে ছাতা, রড, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন বলে থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। যদিও ওই দলের কর্মকর্তা হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, সমর্থকেরাই উত্তেজিত হয়ে ওই কাণ্ড ঘটায়।
প্রহৃত রেফারি সুজয় আচার্য এবং সহকারী রেফারি তরুণ বিশ্বাসকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মারের চোটে দু’জনেরই মুখ ফুলে যায়। আঘাত লাগে চোখের নীচেও। পরে অবশ্য সুজয়বাবুকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন পরিবারের লোকজন।
দিন কয়েক আগে ওই স্টেডিয়ামে বনগাঁ মহকুমা প্রথম ডিভিশন ফুটবল লিগ শুরু হয়। লিগ পরিচালনা করছে মহকুমা ফুটবল সংস্থা। রবিবার খেলা ছিল দীনবন্ধু স্মৃতি সঙ্ঘ এবং অভিযান সঙ্ঘের মধ্যে। প্রথমার্ধের খেলার কিছু ক্ষণের মধ্যেই দু’দল একটি করে গোল করে। মাঠে অনেক দর্শক থাকলে পুলিশ ছিল না। প্রথমার্ধের খেলা শেষ হওয়ার মিনিট তিনেক আগে সুজয়বাবু দীনবন্ধু স্মৃতি সঙ্ঘের বিরুদ্ধে তাদের বক্সের বাইরে ফ্রি-কিক দেন। এই সিদ্ধান্তেই উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, দীনবন্ধু স্মৃতি সঙ্ঘের কয়েক জন কর্মকর্তা এবং সদস্য মাঠে ঢুকে সুজয়বাবুর উপরে চড়াও হন। মাঠের বেড়া বেশ কয়েক জায়গায় ভাঙা। সেখান দিয়ে ওই দলের বেশ কিছু সমর্থকও ঢুকে পড়েন। তাঁরাও হামলায় সামিল হন। সুজয়বাবুকে বাঁচাতে গিয়ে প্রহৃত হন সহকারী রেফারি। তিনি মাঠেই জ্ঞান হারান।
পুলিশের কাছে দীনবন্ধু স্মৃতি সঙ্ঘের বিরুদ্ধে রেফারিদের উপরে হামলার নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে। গোলমালের পরেই সংস্থা জরুরি বৈঠক ডাকে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যত দিন না অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তত দিন প্রথম ডিভিশন লিগ বন্ধ রাখা হবে।
মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক সুনীল সরকার বলেন, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে রেফারিদের মারধর করা হয়েছে। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছি প্রশাসনের কাছে।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দীনবন্ধু স্মৃতি সঙ্ঘের সভাপতি তাপস মুখোপাধ্যায় বলেন, “রেফারিকে মারধরের ঘটনা নিন্দনীয়। আমরা সমর্থন করি না। তবে ওই ঘটনায় ক্লাবের কোনও কর্তা বা সদস্য যুক্ত নন। রেফারির কয়েকটি সিদ্ধান্ত আমাদের বিরুদ্ধে যাওয়ায় সমর্থকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন। তাঁরাই ওই কাণ্ড ঘটান।”ঘটনার পরে রেফারিরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সুজয়বাবু বলেন, “নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। আমি আর খেলা পরিচালনা করতে যাব না।” অন্য রেফারিরা খেলার দিন মাঠে পুলিশ মোতায়েন এবং বেড়া ঠিক করার দাবি জানিয়েছেন। ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, লিগের প্রতিটি ম্যাচে সম্ভব না হলেও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পুলিশ রাখা হয়। মাঠের বেড়া ঠিক করার কাজ চলছে। |
|
|
|
|
|