|
|
|
|
ঘাটালে ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
এখনও বিপর্যস্ত বন্যাপ্রবণ ঘাটাল। টানা দু’সপ্তাহ বিস্তীর্ণ এলাকায় যোগাযোগ নেই। নেই বিদ্যুৎ। ল্যান্ডফোন ও মোবাইল পরিষেবাও বিপর্যস্ত। ঘাটালের প্রধান প্রধান সড়কই শুধু নয়, জলমগ্ন বেশিরভাগ রাস্তা। স্কুল, পঞ্চায়েত অফিস, বাজার এমনকী ঘাটাল থানাও জলের তলায়। এর উপরে অধিকাংশ এলাকাতেই ত্রাণ পৌঁছয়নি এখনও। আসেনি প্রশাসন। তাই বাড়ছে ক্ষোভ।
বন্যার দুর্ভোগ ঘাটালবাসীর কাছে নতুন নয়। তবে টানা ১৩ দিন ধরে ব্লকের ১২টি পঞ্চায়েতের শতাধিক গ্রাম জলমগ্ন হয়ে থাকার ছবিটা সাম্প্রতিক অতীতে সে ভাবে দেখা যায়নি। বাঁধ ভাঙা জলে দাসপুরের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ১৯৭৬ সালের পর থেকে যেখানে বন্যার জল ঢোকেনি, সেই সব গ্রামও এ বার জলমগ্ন। দাসপুর ১ ব্লকের বিহারিচকে কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে নন্দনপুর ১ ও ২, সড়বেড়িয়া ১ ও ২ পঞ্চায়েতের শতাধিক গ্রাম জলের তলায় চলে গিয়েছে। সাত দিন কেটে গেলেও সরকারি ভাবে ত্রাণ শিবির খোলা হয়নি। অসহায় ভাবে দিন কাটাচ্ছে হাজার হাজার জলবন্দি মানুষ। সমস্যার কথা স্বীকার করে ঘাটালের মহকুমাশাসক অংশুমান অধিকারী বলেন, “ত্রিপল ও চাল পাঠানো হয়েছে। তবে নৌকার অভাবে প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে ত্রাণ পাঠাতে একটু সমস্যা হচ্ছে। দাসপুরের জলমগ্ন গ্রামগুলি থেকে বাসিন্দাদের সরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শিবির ও খাবার বিলির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
টানা বৃষ্টি ও জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলেই ঘাটাল মহকুমায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। মাস দুয়েক আগে ঘাটালে একবার বড় বন্যা হয়েছিল। তখনই সব নদী-খাল জলে ভরে গিয়েছিল। পরে লাগাতার বৃষ্টি ও জলের তোড়ে শিলাবতী, কংসাবতীর বাঁধও ভেঙে যাওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। সর্বাধিক বিপর্যস্ত ঘাটালের শীতলপুর, শুকচন্দ্রপুর, আড়গোড়া, আজবনগর, মনসুকা, চাউলি-সহ প্রায় ৭০টি গ্রাম। মনসুকার আরতি পাল, শীতলপুরের অভিরাম সামন্তদের অভিযোগ, “বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। আশ্রয় নিয়েছি নদীবাঁধে। এখনও পর্যন্ত ত্রাণ দূরের কথা, একটা ত্রিপলও পাইনি। বাড়িতে যা চাল-ডাল ছিল, তা-ও ফুরিয়ে গিয়েছে। এ বার যে কী হবে, বুঝতে পারছি না।” বন্যায় অনভ্যস্ত দাসপুরের বিহারিচক, রামচন্দ্রপুর, চকসুন্দর, বোয়ালিয়া, নন্দনপুর, পাবর্তীপুর, বাজুয়া, ধানখাল, রবিদাসপুর-সহ বহু গ্রামের মানুষের অবস্থাও শোচনীয়। বিহারিচকের বাসিন্দা অজয় মণ্ডলের বক্তব্য, “দিনমজুরি করে সংসার চলে। বন্যায় এলাকার সব জমি জলের তলায়। কোনও কাজ নেই। ত্রাণ শিবিরও চালু হয়নি।” |
|
|
|
|
|