|
|
|
|
আয় বাড়াতে নিজস্ব সম্পদ তৈরিতে জোর এমকেডিএ’র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই নিয়মিত অর্থের জোগান। আর এই জোগান নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই আগামী দিনে নিজস্ব সম্পদ তৈরিতে আরও বেশি করে জোর দেবে মেদিনীপুর-খড়গপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এমকেডিএ)।
সম্প্রতি, কলকাতায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা উন্নয়ন পর্ষদগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এক বৈঠক হয়। সেখানেই আয় বাড়াতে নিজস্ব সম্পদ তৈরিতে জোর দিতে বলা হয় পর্ষদগুলিকে। সেই মতো, সম্পদ বাড়ানোর পরিকল্পনা করতে শুরু করেছে এমকেডিএ। প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পর্ষদের উদ্যোগে তৈরি করা হবে একটি মার্কেট কমপ্লেক্স। এর ফলে, এক দিকে যেমন সংস্থার আয় বাড়বে, তেমনই থাকছে কর্মসংস্থান তৈরির সুযোগও। তবে এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। প্রধান বাধা জমিই। এমকেডিএ’র চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি’র কথায়, “পর্ষদের হাতে এক ছটাকও জমি নেই। তাই সমস্যা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে।”
সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে যে জমি অধিগ্রহণ করে প্রকল্প রূপায়ণ করা কঠিন, তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না পষর্দ কর্তাদেরও। তাই বিকল্প ভাবনা ভাবা হচ্ছে। এমকেডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর শহরেই জবরদখল হয়ে রয়েছে একটি সরকারি জায়গা। প্রাথমিক ভাবে এখানেই মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির কথা ভাবা হয়েছে। তবে এখনই এই জমি দখলমুক্ত করা যাবে না বলেই মনে করছে জেলা প্রশাসনের একাংশ। চেয়ারম্যান বলেন,“পর্ষদের নিজস্ব সম্পদ বাড়ানোর জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। কী কী ভাবে সংস্থার আয় বাড়ানো যায়, তাও দেখা হচ্ছে।”
কেন এই সম্পদ বাড়ানোর পরিকল্পনা? পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহর ও সংলগ্ন এলাকায় উন্নয়নের কাজ অব্যাহত রাখতে গেলে প্রয়োজন অর্থ। আবার, অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ক্ষমতা সীমিত। সে কারণেই, নিজস্ব সম্পদ তৈরিতে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে পর্যদগুলিকে। সম্পদ বাড়লে সেই অর্থে আরও এগোবে উন্নয়নের কাজ। পর্যদ সূত্রে খবর, নিজস্ব সম্পদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে পিপিপি মডেলে (সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব) প্রকল্পের কাজ করতেও অসুবিধা নেই। কারণ, এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা থেকে ঋ
ণ পাওয়া যায়। চলতি আর্থিক বছরে মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ কী কী কাজ করতে চায়, তার একটি পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্টও জমা পড়েছে পুর ও নগরোন্নন দফতরে। কর্তৃপক্ষের সবুজ সংকেত এলেই শুরু হবে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কাজ।
পর্যদ সূত্রের খবর, রাস্তা ও কালভার্ট তৈরির পাশাপাশি প্রতি শহরে চারটি করে দুই শহরে মোট আটটি শৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও, রাণী শিরোমণির স্মৃতি-বিজড়িত কর্ণগড়ে ইকো-ট্যুরিজম পার্ক গড়ার কথাও ভাবা হয়েছে। এ জন্য প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি টাকা। এমকেডিএ’র এক আধিকারিকের কথায়, “ইকো- ট্যুরিজম পার্ক হলে বহু মানুষ এখানে আসবেন। পাল্টে যাবে এলাকার পরিবেশও।”
তবে আপাতত কী ভাবে সংস্থার আয় বাড়ানো যায়, তাই এখন ভাবাচ্ছে পর্ষদ কর্তৃপক্ষকে। কারণ, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে বছরে প্রায় ৪ কোটি টাকা পায় এমকেডিএ। পর্যদের বক্তব্য, এই অর্থে পরিকল্পনা মাফিক কাজ করা অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে, একমাত্র আয় বাড়লেই পরিকল্পনা মাফিক উন্নয়নের কাজ অব্যাহত রাখা সম্ভব। এমকেডিএ সূত্রে খবর, ২০০৫-০৬ আর্থিক বর্ষে সংস্থার আয় হয়েছিল প্রায় ৬ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা। পরের অর্থবর্ষে আয় বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৪ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা। ২০০৭-০৮ আর্থিক বর্ষে সংস্থার কোষাগারে জমা পড়ে প্রায় ৩৪ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা। কিন্তু এর পরের অর্থবর্ষে আয় এক ধাক্কায় কমে হয় ১৪ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা। ২০০৯-১০ আর্থিক বছরে অবশ্য সংস্থার কোষাগারে জমা পড়ে প্রায় ৪৮ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। এমকেডিএ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সংস্থার নিজস্ব সম্পদের সংখ্যা বাড়লে এই আয়ও উত্তরোত্তর বাড়বে। সে ক্ষেত্রে উন্নয়নের কাজ চালানো যাবে ধারাবাহিকভাবে। |
|
|
|
|
|