|
|
|
|
জিটি রোড নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • চুঁচুড়া |
শের শাহ বেঁচে থাকলে নির্ঘাৎ কষ্ট পেতেন। ‘অযত্নে-অবহেলায়’ তাঁর তৈরি রাজপথের বেহাল দশা দেখলে তাঁর নিশ্চয়ই সুখানুভূতি হত না।
রাস্তাটির নাম জিটি রোড (গ্র্যান্ড ট্র্যাঙ্ক রোড)। আরও একটি পোশাকি নাম আছে ‘শের শাহ সুরি রোড’। উত্তরপাড়া থেকে কোন্নগর, রিষড়া থেকে শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটি থেকে চন্দননগর অথবা ব্যাণ্ডেল, সপ্তগ্রাম হুগলিতে জিটি রোড ধরে যেখানেই যাওয়া যাক, খানাখন্দে ঠোক্কর খেতে হবে। গাড়ি চালকদের কাছে বিভীষিকা রাস্তাটি। একই হাল পথচারীর। |
|
রবিবার রাস্তা সংস্কারের ছবিটি তুলেছেন প্রকাশ পাল। |
কিছু জায়গায় পরিস্থিতি এমনই যে, পাড়াগাঁয়ের মোরাম বিছানো রাস্তার হালও এর থেকে ভাল। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তাটি সারাইয়ের দাবিতে আন্দোলন হয়েছে। কিন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ‘চোখ বুজে’ থাকেন বলে অভিযোগ। সাধারণ মানুষ কর্তৃপক্ষের দীর্ঘসূত্রতায় বিরক্ত, ক্ষুব্ধ। ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে বেড়ে চলেছে যানজটও। তা ছাড়া, রাস্তার দু’পাশে অগুনতি অবৈধ নির্মাণের কারণে অনেক জায়গায় অপরিসর হয়ে পড়েছে রাস্তাটি। কাগজ-কলমে রাস্তাটি সারানোর দায়িত্ব রাজ্যের পূর্ত দফতরের। প্রশাসনের আধিকারিকেরাও অনেক ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হন। কিন্তু মানুষের হয়রানি সত্ত্বেও দিনের পর দিন খারাপ থেকে আরও খারাপ হচ্ছে জিটি রোডের হাল।
মগরার ভেড়িকুঠি থেকে হোয়েরা পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তা বেহাল দীর্ঘদিন। উত্তরপাড়া, কোতরং, রিষড়ার বাগখালেও জিটি রোডের অবস্থাও তথৈবচ। একই পরিস্থিতি চন্দননগরের গঞ্জের বাজার থেকে জ্যোতির মোড় কিংবা ব্যাণ্ডেল, কেওটা, সপ্তগ্রামের বিস্তীর্ণ রাস্তা জুড়েও। বৈদ্যবাটি পুরসভার অধীনে নওগাঁর মোড় থেকে বৈদ্যবাটি রেলগেট পর্যন্ত রাস্তা জুড়ে অসংখ্য ছোটবড় গর্ত। রাস্তা সংস্কারের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা বারে বারেই পূর্ত দফতর, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অধীন কেএমডব্লুএসএ এবং স্থানীয় পুরসভাকে চিঠি দেন। এর মাঝে অবশ্য রাজ্যের ক্ষমতা হস্তান্তর হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জিটি রোডে পিচের প্রলেপ পড়েনি নতুন করে। রবিবার তৃণমূলের তরফে ইট, সুরকি-সহ নানা জিনিস ফেলে খানাখন্দ বোজানো হয় শেওড়াফুলি স্টেশনের কাছ থেকে বৈদ্যবাটি স্টেশনের সামনে পর্যন্ত। চন্দননগরের এক ফিজিওথেরাপিস্টও নিজের উদ্যোগে জোড়াতালি দেওয়ার চেষ্টা করেন জিটি রোডে। দিনমজুরদের কাজে লাগিয়ে তিনি হুগলি মোড় থেকে বৈদ্যবাটি পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তায় ঘেঁষ ফেলেন রাস্তার খানাখন্দে।
পূর্ত দফতরের জেলার নির্বাহী বাস্তুকার পার্থপ্রতিম সিংহের দাবি, “জিটি রোড সংস্কারের প্রক্রিয়া চলছে। বর্ষা শেষে কাজ শুরু হবে।” তবে, দফতরের কর্তাদের মতে, “যে কেউ নিজের মতো করে সরকারি রাস্তা সারাইয়ের কাজ করতে পারেন না।” তাঁদের বক্তব্য, “নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে কাজ করতে হয়। এ জন্য কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে এটা ঠিক।”আপাতত সংস্কারের অপেক্ষায় দিন গুনছে সম্রাট শের শাহের স্মৃতিবিজড়িত রাজপথ। |
|
|
|
|
|