বন্যায় মাছচাষে এ বারও ক্ষতির সম্মুখীন খানাকুল
ফি-বছর বন্যাই বিজ্ঞানসম্মত মাছ চাষের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার মুখে ফেলছে খানাকুলের দু’টি ব্লকের মাছচাষিদের। প্রায় প্রতি বছরই বন্যা হয় এখানে এবং তাতে জলাশয়ের মাছ ভেসে যায় ব্যাপক হারে। তবু মাছকে কেন্দ্র করেই জীবিকা নির্বাহ করেন এখানকার বেশ কয়েক হাজার মানুষ।
এ বারও বন্যায় যথারীতি ক্ষতি হয়েছে মাছচাষিদের। খানাকুলের দু’টি ব্লকের মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক সুজিতকুমার নাগা জানান, খানাকুল ২ ব্লকের থেকে খানাকুল ১ ব্লকে ক্ষতির পরিমাণ কম। কিছু পুকুর অক্ষত আছে এখানে। এ ব্যাপারে জেলাস্তরে নিয়মিত খবর পাঠানো হচ্ছে।
খানাকুল ১ এবং ২ ব্লকের মধ্যে মাছ উৎপাদনে সুখ্যাতি আছে ১ ব্লকের কিশোরপুর ১ পঞ্চায়েতের নিরঞ্জনবাটি গ্রামের। পুরো গ্রামের খান কুড়ি পুকুরে মাছের চাষ করেন স্থানীয় মানুষ। কোথাও আবার গোষ্ঠী তৈরি করেও চাষের কাজ চলে। গ্রামটি গত কুড়ি দিন ধরে জলমগ্ন। রূপনারায়ণ, দ্বারকেশ্বর এবং মুণ্ডেশ্বরীর জলে প্লাবিত এই গ্রাম। যাঁর দেখানো পথে নিরঞ্জনবাটি গ্রামে মাছ চাষের রমরমা, সেই ক্ষুদিরাম বায়েনের ক্ষোভ, “ফি-বছর বন্যার ফলেই মাছ চাষে উদ্যম হারিয়ে ফেলছেন খানাকুলের মানুষ। বন্যার পরে মৎস্য দফতর নামেমাত্র কিছু মিনিকিট (মাছের) বিতরণ করে দায় সারে। অনুদান-সহ ঋণের ব্যবস্থা নেই। বন্যাকে কেন্দ্র করে মৎস্যজীবীদের জন্য বিশেষ অ্যাকশন প্ল্যান করুক সরকার।” কী ধরনের পরিকল্পনা চান ক্ষুদিরামবাবু এবং তাঁর মতো খানাকুলের আরও মৎস্যজীবী মানুষ? ক্ষুদিরাম জানান, এ ক্ষেত্রে সরকারি খরচে পুকুর সংস্কার করা হোক। বিনামূল্যে মাছের খাবার সরবরাহ করা হোক। অনুদান-সহ ঋণের ব্যবস্থা করা হোক। তা ছাড়া, বন্যার ঠিক আগে আগে পুকুরগুলি থেকে মাছ তুলে ন্যায্য মূল্যে কিনে নিক সরকার। না হলে স্থানীয় ভাবে রুইমাছও জলের দরে বিক্রি করে দিতে হয়। এই পরিস্থিতিতে প্রতি বারই মাছচাষিরা আশা করেন পুকুর ডুববে না। কিন্তু তেমনটা হয় না। ফলে বহু মাছচাষি বন্যায় সর্বস্বান্ত হন।
মাছচাষি মদন সামন্ত, দুখিরাম বায়েন, জিতেন পণ্ডিত, মাধব মান্না প্রমুখের বক্তব্য, পুকুরে বন্যার জল ঢুকে গেলে মাছ তো থাকেই না। উল্টে ক্ষতিকারক বোয়াল মাছ ঢুকে পড়ে। এই মৎস্যচাষীদের হিসেব মতো, এক বিঘা মাপের পুকুরে লক্ষাধিক টাকার মাছ থাকে। সেটা পুরোটাই লোকসান হয় বন্যায়। ক্ষুদিরামবাবু জানান, প্রতি দেড় মাস অন্তর মাছ তুলে বিক্রি করা হয়। বন্যার জলে চার মাস মাছ চাষ বন্ধ থাকে। পরে চুন প্রভৃতি দিয়ে পুকুর সংস্কার করে তবেই নতুন করে চাষ করা যায়। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেতে চাষিদের কালঘাম ছুটে যায়।সুজিতবাবু জানান, দু’টি কারণে ঋণ দিতে চায় না ব্যাঙ্ক। প্রথমত, হঠাৎ বন্যায় মাছ ভেসে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তা ছাড়া, পুকুর মালিকেরা লিখিত ভাবে বা রেজিস্ট্রি করে পুকুর ইজারা দেন না। সুজিতবাবু জানান, খানাকুলের দু’টি ব্লকে প্রায় ১৪০০ হেক্টর জলাশয়ে মাছ চাষ হয়। মাছচাষিদের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। যদিও সরকারি ঋণ প্রকল্পের আওতায় শ’পাঁচেকের বেশি আসেননি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.