ত্রাণ নিয়ে অসন্তোষ বেড়েই চলেছে হাওড়ায়
ন্যার পরে ১৩ দিন কেটে গেলেও এখনও জল নামছে না হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা ২ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়। ত্রাণও অপ্রতুল। সব মিলিয়ে শোচনীয় অবস্থায় জলবন্দি মানুষ।
ডিভিসি দফায় দফায় জল ছাড়ার ফলে উদয়নারায়ণপুরের বিভিন্ন এলাকায় দামোদরের বাঁধ ভেঙে গিয়ে উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা ২ ব্লকের মোট ১৭টি পঞ্চায়েত এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ডিভিসি এখনও জল ছাড়ছে। ফলে দামোদরের ভাঙা বাঁধ থেকে জল এসে তা এই সব এলাকায় জমে যাচ্ছে। যার জেরে জল নামছে না বলে বন্যা দুর্গত এলাকাগুলির বাসিন্দারা জানিয়েছেন। উদয়নারায়ণপুরের কুর্চি-শিবপুর, সিংটি, ভবানীপুর বিধিচন্দ্রপুর, কানুপাট-মনসুকা, সোনাতলা গড় ভবানীপুর, আরডিএ প্রভৃতি পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও রাস্তাঘাট ডুবে রয়েছে। জল দাঁড়িয়ে রয়েছে বাড়ির দাওয়া পর্যন্ত। নিচু এলাকাগুলিতে আবার কোথাও কোথাও এক কোমর পর্যন্ত জল রয়েছে। ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে এই ব্লকের সর্বত্র।
একই অবস্থা আমতা ২ ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতের। তাদের মধ্যে আবার থলিয়া এবং বিকেবাটি পঞ্চায়েত দু’টির অবস্থা শোচনীয়। দামোদরের জল উদয়নারায়ণপুর হয়ে গড়িয়ে এই দু’টি পঞ্চায়েত এলাকায় চলে আসছে। এর পরে তা এক দিকে রামপুর খাল এবং অন্য দিকে শর্টকার্ট চ্যানেলের বাঁধে আটকে যাচ্ছে। ফলে দু’টি বাঁধের ভিতরে ত্রিভুজের মতো এলাকায় জল বন্দি হয়ে পড়েছেন থলিয়া এবং বিকেবাটি এলাকার বাসিন্দারা। সিহাগড়ি, থলিয়া এবং ভাতেঘড়ি থলিয়া পঞ্চায়েতের এই তিনটি গ্রামে এসে দেখা গেল ৬ থেকে ৮ ফুট জল দাঁড়িয়ে পড়েছে। এই তিনটি গ্রামের ৩৩০০ পরিবার জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। সিহাগড়ি সেতুতে কিছু পরিবার তাঁদের গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয় নিলেও বেশিরভাগ বাসিন্দা রয়েছেন নিজেদের একতলা বাড়ির ছাদে জলবন্দি হয়ে। এই পঞ্চায়েত এলাকার জন্য ব্লক প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছে ১৩টি নৌকার। তাদের কাজ হল জলবন্দি মানুষদের সিহাগড়ি সেতু-সংলগ্ন বাজারে আনা। সেখান থেকে তাঁরা কিছু জিনিসপত্র কেনাকাটা করার পরে ফের তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু মাত্র ১৩টি নৌকায় করে তাঁদের নিয়ে আসা এবং পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তার উপরে সরকারি ত্রাণ মেলেনি এক ফোঁটাও। ফলে অনেকেই কার্যত অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
আমতা ২ ব্লকের ত্রাণ কমিটির বিধায়ক প্রতিনিধি দাশুরথী দির্ঘাঙ্গী বলেন, “আমরা ব্লক স্তরে ছ’সদস্যের কমিটি গড়েছি পঞ্চায়েতে ত্রাণ পাঠানোর জন্য। পঞ্চায়েত থেকে ফের সাত সদস্যের কমিটি বন্যা দুর্গত এলাকায় সরাসরি গিয়ে ত্রাণ তুলে দিচ্ছেন বানভাসি পরিবারগুলির হাতে। ত্রাণ বিলির ব্যবস্থায় কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি।” বিডিও পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “বন্যা দুর্গত এলাকাগুলিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে।” তা হলে মানুষগুলি ত্রাণ পাচ্ছেন না কেন? থলিয়া পঞ্চায়েতের সাত সদস্যের ত্রাণ কমিটির দুই সদস্য তাপস রায় এবং শ্রীকান্ত মাইতি বললেন, “৩৩০০ পরিবারের জন্য মাত্র ২৫ বস্তা চিঁড়ে এবং ৬ বস্তা গুড় পেয়েছি। আর চাল যা পাওয়া গিয়েছে তাতে মাত্র ৪০০ পরিবারকে এক বাটি করে চাল দেওয়া সম্ভব। এত কম ত্রাণ নিয়ে কী করব? বিলি করতে গেলে তো মারপিট বাধবে। তাই রেখে দিয়েছে। আরও ত্রাণসামগ্রী এলে এক সঙ্গে তা বিলি করা হবে।” ত্রাণের পরিমাণ যে বেশ কম তা জানিয়ে আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র বলেন, “আমি আরও ত্রাণ পাঠানোর জন্য বিভিন্ন মহলে নিরন্তর আবেদন করছি। একে জল কমেনি, তারউপরে ত্রাণ নেই।”আমতা ২ ব্লকের ভাটোরা এবং ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান পঞ্চায়েত এলাকাতেও এক চিত্র। পর্যাপ্ত ত্রাণ না মেলায় অসন্তোষ বাড়ছে। বিডিও বলেন, “জল না কমার জন্যই সমস্যা গুরুতর হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আরও ত্রাণসামগ্রী চেয়ে পাঠানো হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.