|
|
|
|
অণ্ণার আন্দোলনে নিরুত্তাপ কাশ্মীর |
সাবির ইবন ইউসুফ • শ্রীনগর |
অণ্ণা হজারের আন্দোলন নিয়ে বাকি ভারতে যা-ই ঘটুক না কেন, কাশ্মীর কিন্তু উদাসীন। গুটিকয় লোক মিলে কয়েকটি হাতে গোনা মিছিল চোখে পড়লেও অণ্ণার দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলন থেকে একরকম মুখ ফিরিয়েই রেখেছে কাশ্মীর। তার মানে অবশ্য এই নয় যে কাশ্মীরে কোনও দুর্নীতি নেই বলেই মানুষ নতুন করে আন্দোলন করার প্রয়োজন বোধ করছেন না। আসল ছবিটা ঠিক এর উল্টো। ভারতের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির মধ্যে উপরের দিকে স্থান কাশ্মীরের। কিন্তু অণ্ণার দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলনে কাশ্মীরিদের কোনও হেলদোল নেই। কিন্তু কেন এই উদাসীনতা?
কারণ, কাশ্মীরের রাজনীতির সঙ্গে বাকি ভারতের রাজনীতির কোনও মিল নেই। রাজ্যের দুর্নীতি নিয়ে অবশ্যই বিচলিত কাশ্মীরবাসী। কিন্তু তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে কাশ্মীর-বিতর্ক, যা শুধু রাজ্যের নয়, গোটা উপমহাদেশেরই মাথাব্যথার কারণ। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গত দু-দশক ধরে কাশ্মীরের মানুষ হিংসা, হত্যার ভয়াবহ চিত্র দেখার পর বাকি ভারতের সমস্যা, আন্দোলন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। দিনের পর দিন প্রিয়জনের মৃত্যু, সম্পত্তির ক্ষতি দেখতে দেখতে সব কিছুই কেমন গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে তাঁদের। তাই কোনও কিছুই আর তেমন নাড়া দেয় না।
কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নূর আহমদ বাবা বলেছেন, “কাশ্মীর এবং বাকি ভারতের রাজনীতির মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক। কাশ্মীরিদের আশা-আকাঙ্খা অন্য ভারতীয়দের থেকে একেবারেই আলাদা। তাই রাতারাতি শুরু হওয়া দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলন তাঁদের স্পর্শ করেনি।” বাবা মনে করছেন, কাশ্মীর-বিতর্ক অত্যন্ত সংবেদনশীল। তার জেরে বার বার ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে কাশ্মীর। তার পাশে দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলন তেমন দাগ কাটতে পারেনি কাশ্মীরিদের মনে। তা ছাড়া কাশ্মীরিদের অভিমান, তাঁরা নিজেদের সমস্যায় পাশে পান না বাকি ভারতকে। তাই বাকি ভারতের এই আন্দোলনে শরিক হতে তাঁদের তীব্র অনীহা।
সমাজতত্ত্ববিদ ইমতিয়াজ হাসানও একই মত পোষণ করছেন। বলেছেন, “কাশ্মীরের মানুষ দেখেছেন তাঁদের সমস্যায় বাকি ভারত উদ্বিগ্ন হয় না। তাই বাকি ভারতের প্রতি সেই টান অনুভব করেন না তাঁরাও। সে জন্যই তাঁরা যোগ দিতে চাননি অণ্ণার আন্দোলনে।”
সাংবাদিকতার ছাত্র মজিদ জানিয়েছেন, “অণ্ণার আন্দোলনে যোগ দিয়ে মানুষ মত প্রকাশের স্বাধীনতা উপভোগ করছেন। কিন্তু এ ভাবে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন কাশ্মীরে দাঁড়িয়ে সম্ভবই নয়।” |
|
|
|
|
|