|
|
|
|
আউশগ্রাম |
পঞ্চায়েতে দুর্নীতি, ব্যবস্থা না নেওয়ায় অভিযুক্ত বিডিও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ হওয়া সত্ত্বেও পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আউশগ্রাম ২ বিডিও-র বিরুদ্ধে। সিপিএম পরিচালিত অমরপুর পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে শুধুমাত্র সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। এ ব্যাপারে বিডিও-র বিরুদ্ধে মহকুমাশাসকের (বর্ধমান উত্তর) কাছে অভিযোগ জানিয়েছে তারা।
কংগ্রেসের আউশগ্রাম ২ ব্লক সভাপতি অশোক কোঙার গত ১২ অগস্ট মহকুমাশাসক প্রশান্ত অধিকারীর কাছে লিখিত ভাবে জানান, অমরপুর পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের কাছে দীর্ঘদিন ধরে একশো দিনের কাজে একটি পুকুর সংস্কারে দুর্নীতির অভিযোগ জানাচ্ছিলেন তাঁরা। গত ১৪ ডিসেম্বর বিডিও সনাতন সেনকে অভিযোগ জানানো হয়। এর প্রায় এক মাস পরে বিডিও পঞ্চায়েতে অভিযোগের তদন্তে যান। তবে অভিযোগকারীদের উপস্থিতি ছাড়াই এই তদন্ত হয়। অশোকবাবুর অভিযোগ, তার পরে দীর্ঘদিন কেটে গেলেও প্রশাসনের তরফে তদন্তের কোনও রিপোর্ট তাঁদের জানানো হয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি ফের মহকুমাশাসককে তদন্তের দাবি জানিয়ে চিঠি লেখেন।
এর পরে গত ৮ অগস্ট বিডিও তাঁকে একটি চিঠি পাঠান। তাতে সনাতনবাবু জানান, ওই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে একশো দিনের কাজে রাঙাবাঁধ পুকুর সংস্কারে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত হয়েছে। যে সব অনিয়ম ধরা পড়েছে, তার বিরুদ্ধে কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগের ক্ষেত্রে ঠিক কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা-ও বিডিও ওই চিঠিতে জানান।
অভিযোগ ছিল, প্রকল্পের মাস্টার রোলে সাক্ষীদের সই নকল করা হয়েছে। বিডিও জানান, সুপারভাইজারদের এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। প্রকল্পে উজ্বল ঘোষ এবং জয়ন্ত লাহা সুপারভাইজার না হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের নামে নকল সই করে টাকা তোলার অভিযোগ ছিল। বিডিও জানিয়েছেন, অন্যায় ভাবে হস্তগত করা অর্থ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে এবং পঞ্চায়েতকে সতর্ক করা হয়েছে। আরও অভিযোগ ছিল, জয়ন্ত লাহার বয়স ১৮ বছরের কম। অথচ তাকে প্রকল্পের সুপারভাইজার হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও বিডিও জানান, পঞ্চায়েতকে সুপারভাইজার নিয়োগের ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। উজ্জ্বল ঘোষ একই সঙ্গে সুপারভাইজার ও প্রকল্পের শ্রমিক হিসেবে মজুরি তুলেছেন, এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিডিও-র বক্তব্য, পঞ্চায়েতকে ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
মহকুমাশাসককে লেখা চিঠিতে অশোকবাবু জানান, আরও কয়েক জন ওই প্রকল্পে কাজ না করে মজুরি নিয়েছেন বলে জানানো হলেও বিডিও গ্রামে গিয়ে তদন্ত করেননি। অশোকবাবুর অভিযোগ, “ওই সব লোকজন আদুরিয়া ডাকঘরের মাধ্যমে মজুরির টাকা তুলে নিলেও আমাকে লেখা এই চিঠিতে বিডিও জানান, মাস্টার রোল পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে তারা কাজ করেছেন ও মজুরির টাকা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে।” তাঁর দাবি, বিডিও সিপিএম পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের দুর্নীতিকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন।
অভিযুক্ত বিডিও সনাতনবাবু বলেন, “এ ব্যাপারে যা বলার মহকুমাশাসক বলবেন।” মহকুমাশাসক (বর্ধমান উত্তর) প্রশান্ত অধিকারী বলেন, “বিডিও-র বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। আমি বিডিও-কে ওই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। তবে আপাতত যে পদক্ষেপ বিডিও করেছেন, প্রাথমিক ভাবে তা দরকার ছিল।” কিন্তু তদন্তের ফল জানাতে প্রায় আট মাস সময় লাগল কেন? মহকুমাশাসক বা বিডিও, কেউই এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি। |
|
|
|
|
|