কালনা-মেমারি রাস্তা
পথ জুড়ে মরণফাঁদ, টানা বাস বন্ধে বিপাকে যাত্রীরা
রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পাথর। কোথাও আবার পাথর উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কালনা-মেমারি ভায়া বাঘনাপাড়া রাস্তায় সপ্তাহখানেক ধরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাস চলাচল। বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।
বছর দু’য়েক ধরে নিভুজিবাজার থেকে হরিশঙ্করপুর পর্যন্ত প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তার হাল খারাপ। গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটির সম্প্রসারণ ও সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দও হয়। বছরখানেক আগে পূর্ত দফতরের কালনা শাখা ঠিকাদার দিয়ে কাজ শুরু করতেই ঘটে বিপত্তি। হরিশঙ্করপুর, উপলতি, বেলেরহাট, বাঘনাপাড়া-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের চাষিরা দাবি করেন, প্রায় তিন দশক আগে রাস্তাটি যখন তৈরি হয়, তখন তাঁদের পরিবারও জমি দিয়েছিল। বারবার চেষ্টা সত্ত্বেও সরকারিভাবে সেই জমির দাম মেটানো হয়নি। তাঁদের দাবি ছিল, জমির দাম মিটিয়ে তারপর রাস্তা সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ করতে হবে। চাষিদের বাধায় সেই সময়ে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পূর্ত দফতরের কালনা শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে বেশ কয়েক বার ঠিকাদার সংস্থার তরফে চিঠি পাঠানো হয়। প্রতিবারই সংস্থাটি কাজ দ্রুত শুরু করার আবেদন জানায়। কিন্তু কাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে ঠিকাদার সংস্থাটি আদালতের দ্বারস্থ হয়।
কালনার বেলেডাঙা গ্রামে ছবিটি তুলেছেন কেদারনাথ ভট্টাচার্য।
দিন যত এগিয়েছে, রাস্তার অবস্থা তত খারাপ হয়েছে। তারমধ্যে সবথেকে খারাপ অবস্থা বাঘনাপাড়া থেকে হরিশঙ্করপুর পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকার। স্থানীয় বান্দিাদের অভিযোগ, প্রায় প্রতিদিনই গর্তে ভরা এই রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটছে। ভারী বৃষ্টিতে রাস্তার হাল আরও খারাপ হয়ে যায়। চালকের পক্ষে তখন আর বোঝা সম্ভব হয় না সামনের গর্ত কতটা গভীর। খানাখন্দে পড়ে প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে ভারী যানবাহনও। এই রুটের এক বাসচালক মহানন্দ অধিকারী বলেন, “খানাখন্দে ভরা রাস্তায় চাকা বসে যাওয়ার ঘটনা তো প্রায় দিনই ঘটে। যন্ত্রাংশ ভেঙে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই এই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দিতে হয়।” তাঁর দাবি, “এই রুটে গত ৮ দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ছে।” এই রুটের এক কনডাক্টর অরুণ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “রাস্তার যা অবস্থা, তাতে বাস চালালে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। কারণ কোথায় যে বাস খারাপ হয়ে যাবে কেউ জানে না।”
তবে এই রাস্তায় সরকারি বাস ও ট্রেকার চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভোগান্তি বেড়েছে আশেপাশের প্রায় ৪০টি গ্রামের বাসিন্দাদের। ভরসা কেবল যন্ত্রচালিত ভ্যান। বাঘনাপাড়ার বাসিন্দা অমিত কোলে জানান, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে হাসপাতাল, আদালত, স্কুল-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কালনা শহরে পৌঁছতে হয়। বাস না চলায় চারগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে উঠতে হচ্ছে যন্ত্রচালিত ভ্যানে। এই পরিস্থিতিতে স্মারকলিপি দিয়ে দ্রুত রাস্তা সারানোর দাবি জানানো হয়েছে। তৃণমূলের বাস ইউনিয়নের পক্ষে অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই রাস্তায় বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এক দিকে যেমন যাত্রীদের অসুবিধা হচ্ছে, তেমনই বাসকর্মীদেরও কাজ না পেয়ে বসে থাকতে হচ্ছে।” কালনার মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচির আশ্বাস, “রাস্তাটি সারানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.