নিজস্ব সংবাদদাতা • রানিগঞ্জ ও দুর্গাপুর |
বেহাল রাস্তা সংস্কারের দাবিতে শনিবার রানিগঞ্জ, পাণ্ডবেশ্বর, উখড়া এবং জামুড়িয়া থেকে সমস্ত রুটের ৯৯টি মিনিবাস চলাচল বন্ধ রাখলেন পরিবহণ কর্মীরা। শুক্রবারই মিনিবাস ও ট্রেকার চালানো বন্ধ রেখে জামুড়িয়া-রানিগঞ্জ রাস্তাঅবরোধ করেন কর্মীরা। শনিবার একই রকম ভাবে রানিগঞ্জ থেকে উখড়া, পাণ্ডবেশ্বর, জামুড়িয়া রুটে, জামুড়িয়া থেকে আসানসোল, দোমহানি এবং হরিপুর রুটে কোনও বাস বা ট্রেকার চলাচল বন্ধ রাখেন পরিবহণ কর্মীরা। এর জেরে বিপাকে পড়েন যাত্রীরা।
৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের রানিগঞ্জ-সিউড়ি অংশে আমরাসোতা মোড় থেকে বেহাল দশা। হরিপুর, তপসি লেভেল ক্রশিং সংলগ্ন এলাকায় রাস্তা প্রায় ডোবায় পরিণত হয়েছে। শোনপুর বাজারি প্রকল্প এলাকায় তিন কিলোমিটার রাস্তা মাস চারেক আগে সংস্কার হয়েছিল। এখন তা-ও ভেঙেচুরে একাকার। রানিগঞ্জ থেকে উখড়া যাওয়ার রাস্তায় গাইঘাটা মোড়, শঙ্করপুর মোড়, কেন্দা এরিয়া কার্যালয়ের সামনের রাস্তা ছোট-বড় খন্দে ভরা। আসানসোল-জামুড়িয়া রাস্তায় চাঁদা মোড় থেকে আকলপুর পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার অংশে অনেক জায়গাতেই পিচ উধাও। জামুড়িয়া-হরিপুর রুটে সাত কিলোমিটার রাস্তারও প্রায় একই অবস্থা। সব থেকে বিপজ্জনক দশা ইকড়া সেতু এলাকা। সিঙ্গারন নদীর উপরে এই সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পরে গত ৯ মাস ধরে গড়ার কাজ চলছে। বোল্ডার ও মোরাম ফেলে অস্থায়ী রাস্তা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির জেরে তার করুণ দশা। |
বাস ও ট্রেকার চালকদের অভিযোগ, খারাপ রাস্তার জন্য গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। দুর্ঘটনা ঘটলে জনরোষের মুখে পড়ছেন কর্মীরা। আসানসোল মহকুমা মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় জানান, শনিবার সন্ধ্যায় পরিবহণ কর্মীদের সঙ্গে তাঁরা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক ও মহকুমাশাসককে কর্মীদের বাস চালানোর ব্যাপারে অনীহার কথা জানানো হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক বিশ্বজিৎ দত্ত জানান, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও পূর্ত দফতরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আপাতত কাজ চালানোর মতো সংস্কারের কথা ভাবা হয়েছে। পরে পদ্ধতি মেনে সংস্কার করা হবে। রবিবার যথারীতি মিনিবাসগুলি চলাচল করেছে।
এ দিকে, বেতন বৃদ্ধি, ইএসআই, পিএফ-সহ বিভিন্ন দাবিতে বাসকর্মীরা আইএনটিটিইউসি-র নেতৃত্বে কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় একটি বেসরকারি বাস সংস্থার দুর্গাপুর-কলকাতা রুটের ১০টি বাস শনিবার সকাল থেকে বন্ধ হয়ে যায়। বিপাকে পড়েন আগাম টিকিট কেটে বাস ধরতে আসা যাত্রীরা। অবিলম্বে দাবিপূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে আইএনটিটিইউসি। বাস সংস্থার চেয়ারম্যান কালীদাস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, টায়ার, তেলের দাম, বিমা বাবদ খরচ বেড়ে যাওয়ায় সংস্থাটি গত এক বছর ধরে লোকসানে চলছে। কর্মীদের তাঁরা সেকথা জানিয়ে সহযোগিতা চেয়েছেন। কালীদাসবাবু বলেন, “ডিএসপিতে ১১টি বাস চলে। এ ছাড়া টুরিস্ট বাস রয়েছে ৭টি। সেগুলিও বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন কর্মীরা।” আইএনটিটিইউসি নেতা নিখিল কীর্তনীয়ার অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে বাসকর্মীদের বেতন বৃদ্ধি হচ্ছে না। অনেকেরই পিএফ ও ইএসআইয়ের সুবিধা নেই। |