|
|
|
|
পর্যাপ্ত ত্রাণ মেলেনি, সুতিতে ক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সুতি |
বহুতালির কিছু জায়গায় জল কমতে শুরু করলেও আহিরণ, বংশবাটী পঞ্চায়েতের বেশ কিছু জায়গায় জল বেড়েছে শুক্রবার। পরিস্থিতির তাই বড় কোনও উন্নতি হয়নি। মাঠপাড়া, পাপেয়া, ঘোষপাড়া, রামডোবা সহ সব গ্রামেই জল ঢুকে পড়ায় ঘরবাড়ি ছেড়ে দুর্গত মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন জাতীয় সড়কের পাশে।
আহিরণ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মমতাজ বেগম বলেন, “এখনও পর্যন্ত কোনও ত্রাণ সামগ্রী পঞ্চায়েতের হাতে আসেনি। ১৫০টি ত্রিপল বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু খাবার কোনও বরাদ্দ হয়নি। ফলে বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ দেওয়া যাচ্ছে না।” সুতি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি রূপারানি হালদার বলেন, “জল বহুতালি এলাকায় কমলেও হারুয়া পঞ্চায়েতের প্রায় সব গ্রামই জলে ডুবে রয়েছে এখনও। ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মীয়মাণ ২১ কিলোমিটার সড়কটির বেশির ভাগ অংশ এখনও ৩ ফুট জলের তলায়। ত্রাণের অবস্থাও সে ভাবে করা যায়নি। মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। বিশেষ করে পারাইপুর, শোভারঘাট, কানাইঘাট, গোপালপুর, বটতলা প্রভৃতি গ্রামের মানুষজন এখনও জলের মধ্যে বাস করছেন। বহু ঘরবাড়ি পড়ে গিয়েছে।” তিনি বলেন, “তবে এই দিন জল নেমেছে বহুতালি সড়ক থেকে। ফলে ওই সড়ক দিয়ে বীরভূমের সঙ্গে যোগাযোগ আবার চালু করা সম্ভব হয়েছে।” |
|
আশ্রয় জাতীয় সড়ক। মুর্শিদাবাদের সুতিতে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায় |
জঙ্গিপুরের চারটি ব্লকে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। জঙ্গিপুরের মহকুমা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মহকুমা আধিকারিক মহম্মদ জাহিরুদ্দিন বলেন, “জঙ্গিপুর মহকুমার বন্যা কবলিত ৪টি ব্লকেই জল নামতে শুরু করেছে। তবে ওই চার ব্লকের মোট ১০০টি গ্রামের মধ্যে ৫৯,৭৯৭ জন মানুষ এখনও জলবন্দি। এ পর্যন্ত ২২২৮টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” তিনি বলেন, “তবে ৬০ হাজার মানুষ এখন বন্যা দুর্গত হলেও কোথাও একটিও ত্রাণ শিবির খোলা হয়নি। কারণ অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে চাননি। নিজেরাই স্কুলে বা মাদ্রাসায় আশ্রয় নিয়েছেন।” ত্রাণ নিয়েও যে সমস্যা রয়েছে, তা স্বীকার করে তাঁর বক্তব্য, “৪টি ব্লকে যে পরিমাণ ত্রাণ দরকার, আমাদের কাছে তার এক চতুর্থাংশ মজুত রয়েছে। ফলে ত্রাণের অভাব রয়েছে। পরিস্থিতির কথা জানিয়ে ত্রিপল ও ত্রাণ সামগ্রী চেয়ে পাঠানো হয়েছে জেলার ত্রাণ দফতর থেকে।”
এই দিন আহিরণের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে আশ্রয় নেওয়া বন্যার্তদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্রী সানিয়ার খাতুন। আহিরণ হেমাঙ্গিনী বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সানিয়ারা বলেন, “হঠাৎ করে এই ভাবে বাড়িতে জল ঢুকতে দেখিনি কখনও। বইপত্র আসবাব উনুন সব ভিজে গিয়েছে।” |
|
রেনু বেওয়া বলেন, “দু’দিন থেকে না খেয়ে রয়েছি। শেষ পর্যন্ত সোনার দুল বিক্রি করে আহিরণ বাজার থেকে খাবার কিনে এনেছি।’’ ফুজু শেখের কথায়, “আহিরণ মাঠপাড়ায় এত জল আসেনি কখনও। তাই সে ভাবে বন্যার জন্য তৈরি ছিলাম না। রাত থেকে যা পেরেছি, তাই নিয়েই সড়কের উপরে আশ্রয় নিয়েছি খোলা আকাশের নীচে। বৃষ্টিটা বন্ধ হওয়ায় আপাতত রক্ষে।” |
|
|
|
|
|