|
|
|
|
নৌকায় ভার কমাতে জোর দিচ্ছেন যাত্রীরা |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
কানায় কানায় ভরা নদী বালি। তার মধ্যে দিয়েই বিপজ্জনক ভাবে চলাচল করছে ফেরি নৌকা। তবে সাধারণ মানুষের বাধাতেই ব্যস্ত সময়ে এখন ভরা নদীতে বেশিরভাগ ফেরি ঘাটে মোটরবাইক তোলা বন্ধ হয়েছে। ভ্যান ভর্তি করে সব্জি নিয়ে যাওয়াও বন্ধ। যাত্রীসংখ্যাও নিয়ন্ত্রণ করছেন যাত্রীরাই। কিন্তু সব জায়গায় তা হচ্ছে না।
বেশিরভাগ ফেরি ঘাটেই নিত্যযাত্রীদের প্রথম বক্তব্য, নৌকার অবস্থা খুবই খারাপ। কোনও মতে জোড়াতালি দিয়ে চালানো হয় বেশিরভাগ নৌকা। তার সঙ্গে এখন নদী ভর্তি শুধু নয়, তাতে স্রোতও রয়েছে বেশ। তার মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করা খুবই বিপজ্জনক। যে সব ঘাটে গাড়িও জোড়া নৌকার পাটাতনে তুলে পার করা হয়, সেখানে বিপদ অনেক বেশি। নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, এখন প্রশাসনের উচিত, নৌকায় কত লোক উঠবে, তার উপরে কড়া নজর রাখা। অনেক নৌকায় অবৈধ ভাবে সাইকেল তোলা হয়। তা তুলতে আপত্তি করা। কিন্তু কোনও ঘাটেই সেই নজরদারি নেই। তাই বেঁধে দেওয়া সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী রোজ নৌকায় ওঠেন। তারপর ভরা নদীতে টলমল করতে করতে চলে সেই নৌকা। যাত্রীরা যেখানে নৌকায় বেশি ভার তুলতে বাধা দিচ্ছেন সেখানে স্বাভাবিক ভাবেই বিপদ অনেক কম।
জঙ্গিপুর কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস দাস বলেন, “কলেজে যাতায়াতের সময় অত্যধিক ভিড় হয়। তা এই ভরা নদীতেও হচ্ছে। মাঝখানে একবার নৌকায় যাত্রী তোলা নিয়ন্ত্রণ করা হলেও এখন আর সে সব কিছু নেই।” তাঁর কথায়, “যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে।” বস্ত্র ব্যবসায়ী জিয়ারত শেখ বলেন, “নৌকার সংখ্যা এখন কমে গিয়েছে। কিন্তু যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। অনেক সময় রেষারেষিও হয় দু’টি নৌকার মধ্যে।” গাইঘাটের যাত্রীদের বক্তব্য, যাত্রী সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কোনও চেষ্টাই নেই। যদিও পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম বলেন, “কখনও কখনও যাত্রী বেশি হয় ঠিকই, তবে আমরা নজরদারি রেখেছি।”
বেলডাঙা, নওদা, রেজিনগর, হরিহরপাড়া, কালীগঞ্জের ঘাটগুলিতে আবার কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সমস্যা শুরু হয়েছে। শক্তিপুরঘাট, গরদুয়ারাঘাট, রামনগরঘাটে যাত্রীরা অস্বাচ্ছন্দ্যে পড়ছেন। ভাগীরথীর পূর্ব পাড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক, লালগোলা শাখার রেলপথ, পশ্চিমপাড়ের রামনগর-বহরমপুর রাজ্য সড়ক ও কাটোয়া-আজিমগঞ্জ রেলপথ। দুই পাড়ে তাই নিত্য যাতায়াত রয়েছে হাজার হাজার মানুষের। কিন্তু ঘাটগুলিতে পৌঁছনোর রাস্তাই খুব খারাপ। নওদার আমতলার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষিকা সোনালি সরকার বলেন, “জল বেড়েছে কিন্তু নৌকায় উঠতে কাদা রাস্তায় খুবই বিপজ্জনক ভাবে চলাচল করতে হয়।” রেজিনগর থানার ওসি জ্যোতির্ময় বাগচি বলেন, “অনেক সময়েই আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজে নদী পারাপার করতে হয়। ঘাটে পৌঁছনোর রাস্তা খুবই খারাপ। গঙ্গায় জল বেড়েছে, তাই গাড়ি নিয়ে যাতায়াত বন্ধ। ঘাট পর্যন্ত গাড়ি চড়ে নদী পার হয়ে আবার পশ্চিম পাড়ে গিয়ে গাড়ি ওঠা।” কিন্তু নিত্যযাত্রীদের কথায়, গাড়ি নিয়ে যাওয়া বন্ধ হলেও লোক কম তোলার কথা মানা হচ্ছে না।
হরিহরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের মধুসূদন ঘোষ বলেন, “ব্লকে কয়েকটি জলপথে কিছুটা সমস্যা রয়েছে। বর্ষায় সেই সমস্যা বেড়েছে। তবে পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে অনেক রাস্তা তৈরি হয়েছে।”
|
|
|
|
|
|