|
|
|
|
পূর্বে প্রাথমিক শিক্ষা |
ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতে সামঞ্জস্য আনার উদ্যোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
কোথাও ১২০ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য ৯ জন শিক্ষক। কোথাও আবার ১১০ জন পড়ুয়ার জন্য মাত্র ১ শিক্ষক। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় স্তরে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের এই অসমতা দূর করতে উদ্যোগী হল জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান গোপাল সাহু বলেন, “প্রয়োজনের তুলনায় বেশি শিক্ষক রয়েছেন এমন বিদ্যালয় থেকে বদলি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের নিজেদেরই বদলির জন্য ৩১ অগস্টের মধ্যে আবেদন করতে বলা হয়েছে। তাতে ভাল সাড়াও মিলছে। ইতিমধ্যে জেলার অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকেরা স্কুলগুলিতে ‘উদ্বৃত্ত’ শিক্ষকের সংখ্যা হিসাব করছেন।”
বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের দফতরে সমস্ত শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকও করেন গোপালবাবু। ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের অসামঞ্জস্য দূর করার এই উদ্যোগকে সমর্থন করে ডানপন্থী পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক অরূপ ভৌমিক বলেন, “পঠন-পাঠনের সুবিধার্থে এই উদ্যোগকে সমর্থন করছি।” এসইউসি প্রভাবিত বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি আনন্দ হাণ্ডা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বলেন, “সংসদ যাতে স্বচ্ছতা বজায় রেখে এই কাজ করে, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।” আর বাম প্রভাবিত নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক নুরুল হকের বক্তব্য, “শিক্ষকেরা নিজেরা বদলি হতে চাইলে আপত্তির তো কিছু নেই।”
সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩২৫৩টি। মোট শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৯০১৫ জন। জেলায় আরও ৩৯২৪ জন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করার প্রক্রিয়া মাঝপথে আটকে রয়েছে। সংসদ কর্তৃপক্ষের মতে, আপাতত জেলায় বিদ্যালয়-শিক্ষকের যে অনুপাত, তাতেই গড়ে প্রায় তিন জন করে শিক্ষক থাকার কথা প্রতিটি স্কুলে। অথচ, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে শহর ও সড়ক লাগোয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যার তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা অনেক বেশি। আর অপেক্ষাকৃত প্রত্যন্ত এলাকায় পড়ুয়ার তুলনায় শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা অনেক কম। ফলে গ্রামীণ ওই স্কুলগুলিতে পঠন-পাঠন ব্যাহত হচ্ছে। যেমন, মেচেদা বাজার লাগোয়া শান্তিপুর বোর্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১২০ জন, আর এখানে শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন ৯ জন। আবার কোলাঘাটের মুকাডাঙি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী ১১০ জন, অথচ শিক্ষক মাত্র এক জন। রাজ্য বিদ্যালয় শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা অনুযায়ী, মোট ১৫০ পড়ুয়া রয়েছে এমন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩০ জন ছাত্র-ছাত্রী পিছু এক জন করে শিক্ষক থাকার কথা। আর ১৫০ জনের বেশি পড়ুয়া রয়েছে এমন স্কুলে ৪০ জন ছাত্রছাত্রী পিছু এক জন করে শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু তেমনটা নেই। তাই সংসদের এই নয়া উদ্যোগ। |
|
|
|
|
|