|
|
|
|
ঘাটালে দু’শোরও বেশি গ্রাম প্লাবিত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। শুক্রবার সকালে ঘাটালের একাধিক গ্রাম নতুন করে জলমগ্ন হয়েছে। পুরোপুরি জলের তলায় চলে গিয়েছে ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়ক। একই রকম ভাবে জলমগ্ন হয়েছে ঘাটাল-মেদিনীপুর (ভায়া নাড়াজোল) সড়কও। ফলে ঘাটালের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা এখন সেই নৌকাই।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে খবর, টানা বৃষ্টির জেরে ঘাটাল মহকুমায় ২২০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তার মধ্যে ঘাটাল শহরের ১২টি ওয়ার্ড-সহ ব্লকের দশটি পঞ্চায়েতের ১৭০টি গ্রামের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এ দিকে শুক্রবার সকালে কংসাবতী ব্যারেজ থেকে নতুন করে জল ছাড়া হয়েছে বলেও প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। ওই ব্যারেজের জলও সরাসরি ঘাটালেই ঢোকে। এ দিকে ঘাটাল মহকুমার সব ক’টি নদীর জলই বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে বলে জানা গিয়েছে।
তা ছাড়াও ডিভিসির ছাড়া জলে রূপনারায়ণ নদীর জলও চরম বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। উল্লেখ্য, ঘাটাল মহকুমার ঝুমি, শিলাবতী, কেঠিয়া-সহ বিভিন্ন নদীর জল রূপনারায়ণে গিয়েই পড়ে। রূপনারায়ণের জল নামতে না পারলে ঝুমি, শিলাবতী, কেঠিয়ার জলও সরবে না। আরও বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা থাকবে ঘাটালে। |
|
নিজস্ব চিত্র। |
স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন প্রশাসন। জলের চাপে দুর্বল নদীবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। ঘাটালের মহকুমাশাসক অংশুমান অধিকারীর বক্তব্য, “বৃষ্টি এখনও বন্ধ হয়নি। তার উপর কংসাবতী ব্যারেজ থেকেও জল ছাড়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। শনিবার সেই জল ঘাটালে এসে পড়লে পরিস্থিতি খুব খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে বন্যা মোকাবিলায় প্রশাসনও যথাসাধ্য প্রস্তুতি নিয়েছে।”
ঘাটালের পাশাপাশি কেশপুর, ডেবরা, খড়্গপুর-১ ও ২, নারায়ণগড়, পিংলা, সবং এলাকাতেও বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল থেকেই কংসাবতী ব্যারেজের জল ছাড়া শুরু হয়েছে। প্রথমে ২০ হাজার কিউসেক করে জল ছাড়া হচ্ছে। তবে রাতের দিকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়বে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, ‘‘বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকায় প্রতিটি এলাকাতেই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ত্রাণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ভোরেই কংসাবতী জলাধারের জল জেলায় পৌঁছবে। বৃষ্টির জলের সঙ্গে জলাধারের জল মিশলেই খাল-বিল-পুকুর ভাসিয়ে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, টানা বৃষ্টিতে এমনিতেই চারিদিক জলময়। নদীতেও জল রয়েছে। শুক্রবারও প্রবল বর্ষণ হয়েছে। এই কারণেই বিশেষত, নিচু এলাকার মানুষদের অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় সরে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছে প্রশাসন। এ নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির সঙ্গে বৈঠকও করেছেন বিডিও-রা। ব্লকে ব্লকে কিছু ত্রাণও পৌঁছে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। বাকি ত্রাণ স্থানীয় ভাবে কিনে নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। পরিস্থিতির উপরে নজর রেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে। |
|
|
|
|
|