এক পরিবার রয়েছে উদ্বেগে, অন্য বাড়ি বিচারের আশায়
ক পরিবার আশঙ্কায়। ঘরের ছেলে যে এ ভাবে গ্রেফতার হবে, ভাবতেই পারেনি। আর এক পরিবার বিচার চাইছে। শাস্তির দাবি তুলছে খুনে জড়িতদের।
হাড়গোড়-কাণ্ডে সুশান্ত ঘোষের গ্রেফতারের পরদিন, শুক্রবার দুই চিত্র-- চন্দ্রকোনা রোডের বেনাচাপড়া আর কেশপুরের খেতুয়ার দুই বাড়িতে।
বেনাচাপড়ায় প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম বিধায়কের আদিবাড়ির অদূরে দাসেরবাঁধ থেকেই জুনের গোড়ায় হাড়গোড় উদ্ধার হয়। অভিযোগ, ন’বছর আগে খুন করে পাঁচ তৃণমূল কর্মীর দেহ এখানে পোঁতা হয়েছিল। ওই ঘটনায় জড়িয়েই সুশান্তবাবু গ্রেফতার হন। বৃহস্পতিবার রাতে টিভির খবরেই সে কথা জানতে পারেন সুশান্তবাবুর জেঠিমা মায়া ঘোষ। এ দিন বেনাচাপড়ার বাড়িতে বসে মায়াদেবী বলেন, “ও তো সব সময়ে মানুষের পাশেই থাকত। কত ভাল কাজ করেছে। এ ভাবে যে ওকে গ্রেফতার হতে হবে, কেউই ভাবিনি!” বৃদ্ধা জানান, ভোটের সময়ে শেষ এখানে এসেছিলেন সুশান্তবাবু।

অজয় আচার্যর স্ত্রী সবিতা।
কেশপুরের খেড়ুয়ার বাড়িতে।
কেশপুরের খেতুয়ার ছবিটা অন্য রকম। এই খেতুয়ারই বাসিন্দা ছিলেন অজয় আচার্য। তৃণমূল করতেন। ২০০২-এর ২২ সেপ্টেম্বর পিয়াশালায় সিপিএমের হামলার পর থেকেই ‘নিখোঁজ’। জুনের গোড়ায় বেনাচাপড়ায় উদ্ধার হওয়া হাড়গোড়ের মধ্যে তাঁরও দেহাবশেষ রয়েছে বলে দাবি করে অজয়বাবুর ছেলে শ্যামল নতুন করে মামলা করেন। সেই মামলাতেই অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত সুশান্ত। খেতুয়ার আচার্য পরিবার নতুন আশায় বুধ বেঁধেছেন প্রাক্তন মন্ত্রীর গ্রেফতারের পরে।
স্বামীর দেহ যেহেতু এখনও শনাক্ত হয়নি, তাই এখনও শাঁখা পরেন অজয়বাবুর স্ত্রী সবিতা আচার্য। তাঁর কথায়, “যে চলে গিয়েছে, তাকে তো আর ফিরে পাব না। আইন ও বিচার ব্যবস্থায় আস্থা রয়েছে। আশা করি, এ বার খুনিদের শাস্তি হবেই।”
তাঁর ক্ষোভ, “স্বামীর ঠিক কী হয়েছে জানতে এত বছর বারে বারে ওই সিপিএম নেতাদের দোরে দোরে ঘুরেছি। সবাই বলেছেন, তাঁরা না কি কিছুই জানেন না। সেই নেতারা এখন কী বলবেন! এত দিন শুধু কেঁদেছি। এ বার বিচার চাই।’’
সবিতাদেবীর মতোই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদেরও চাপা থাকা ক্ষোভ ঠিকরে বেরোচ্ছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে। রাতেই সিপিএমের কেশপুর জোনাল অফিস লক্ষ করে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা ইট ছোড়েন, সিপিএমের পতাকা ছিঁড়ে দেন বলে অভিযোগ। জোনাল অফিসে সিপিএমের ঘরছাড়া ৪৫ জন কর্মী রয়েছেন। তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অবশ্য কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ পৌঁছয়। এ দিনও পুলিশ মোতায়েন ছিল। সুশান্তবাবুর গ্রেফতার নিয়ে অবশ্য মন্তব্য করতে চাননি পার্টি অফিসে আশ্রিত কোনও নেতা-কর্মীই।
কেশপুরের মতো বেনাচাপড়ায় প্রাক্তন মন্ত্রীর আদিবাড়ির এলাকাতেও বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ‘উল্লাস’ চলছে তৃণমূল কর্মীদের। শুক্রবার সকালেও সেখানে মিছিল হয়।

সুশান্ত ঘোষের জেঠিমা
মায়াদেবী, বেনাচাপড়ার
বাড়িতে।
চলে আবির খেলা। দলের কর্মীদের আচরণে যে কিছুটা ‘অস্বস্তিকর’ হচ্ছে কার্যত তা মেনেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা পবন সাউ বলেন, “এত দিনের জমা ক্ষোভ হঠাৎ বেরিয়ে এসেছে। তাই উচ্ছ্বাসও কিছুটা বাঁধভাঙা।” এই বেনাচাপড়াতেই কলেজে পড়ার সময় অবধি থাকতেন সুশান্তবাবু।
সে সময় পর্যন্ত তাঁকে যাঁরা চিনতেন, তাঁরা কিন্তু সুশান্তবাবুর প্রতি আজও কিছুটা ‘নরম’। সুশান্তবাবুর সঙ্গেই স্কুলে পড়েছেন বিজয় ঘোষ। তাঁর কথায়, “রাজনীতি করতে গিয়েই ওর বিপদ হয়েছে।” স্থানীয় বাসিন্দা চঞ্চল ঘোষের সংযোজন, “পার্টিই ওঁকে ব্যবহার করল। খারাপ কাজের দায় সুশান্তদার ঘাড়ে পড়ল।”
নিজস্ব চিত্র


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.