|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
ধুঁকছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র |
শুধুই ‘রেফার’ |
দেবাশিস দাস |
ঢাকঢোল পিটিয়ে অন্তর্বিভাগের উদ্বোধন হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। কিন্তু আজও চিকিৎসা চলে শুধু বহির্বিভাগেই। রোগীদের অভিযোগ, পরিকাঠামোর অভাবে বছরের পর বছর ধুঁকছে ১২ নম্বর বরোর গড়ফা সহায়ক স্বাস্থ্যকেন্দ্র (মাতঙ্গিনী পাটোয়ারী)।
এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি এলাকায় কারও কাছে মাতঙ্গিনী পাটোয়ারী হাসপাতাল, আবার কারও কাছে কালিকাপুর হাসপাতাল নামে পরিচিত। কলকাতা পুরসভার ১০৪, ১০৫ এবং ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের অধিকাংশ বাসিন্দাই এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, কার্যত কোনও পরিকাঠামো না থাকায় রোগীর পরিস্থিতি সামান্য জটিল হলেই এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়।
|
|
এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে অ্যালোপ্যাথি ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। যক্ষ্মা রোগীদের জন্য ‘ডটস্’ চিকিৎসা পদ্ধতিরও ব্যবস্থা রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের জানান, মাসে প্রায় তিন হাজার রোগী চিকিৎসার জন্য আসেন। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে সব সময় উপযুক্ত চিকিৎসা পান না।
স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী এবং বাসিন্দাদের বিভিন্ন অভিযোগের প্রমাণ মেলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরটি ঘুরে দেখতে গিয়ে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনের ফাঁকা জমিতে জল জমে প্রায় পুকুর তৈরি হয়েছে। দেখে বোঝার উপায় নেই যে ওটা আদপে জমি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মূল ভবনটির বিভিন্ন জায়গায় খসে পড়ছে প্লাস্টার। বৃষ্টির জল জমে থইথই করছে গোটা চত্বর জুড়ে। এক মাত্র শৌচাগারটি অপরিষ্কার। একটি মাত্র কলে জল পড়ে সরু হয়ে। বেহাল দশা স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার ঘরগুলোরও। ‘ডটস’ চিকিৎসার ঘরে নেই জলের ব্যবস্থা। স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, অভাব রয়েছে বিশুদ্ধ জলের। বাইরে থেকে জল এনে কাজ করতে হয়। বিদ্যুৎ পরিষেবা ও পরিছন্নতা নিয়েও বিস্তর অভিযোগ রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, উন্মুক্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে রাতে বহিরাগতেরা ভিড় জমায়।
১৯৮০-র মার্চে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ননী ভট্টাচার্য কালিকাপুর সংলগ্ন এলাকায় মাতঙ্গিনী সহায়ক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। তখন ছিল অবিভক্ত ২৪ পরগনা। পরে ১৯৯৬-এর নভেম্বরে মাতঙ্গিনী সহায়ক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হয় গড়ফা সহায়ক স্বাস্থ্যকেন্দ্র (মাতঙ্গিনী পাটোয়ারী)। |
|
১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূলের দীপু দাসঠাকুর বলেন, “আমরা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উন্নয়নের জন্য দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা করছি। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে রাজ্যের পরিকল্পনা ও উন্নয়নমন্ত্রী এবং যাদবপুরের বিধায়ক মণীশ গুপ্ত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিদর্শন করে গিয়েছেন।” মণীশ গুপ্ত বলেন, “এখানে একটি মাঝারি মাপের হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।”
সমস্যার কথা স্বীকার করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শিখা অধিকারী বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি শহরাঞ্চলের মধ্যে রয়েছে। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য কিছু কাজ করার পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি। আশা করছি, পুজোর আগেই ওই কাজ শুরু হবে।”
|
ছবি পিন্টু মন্ডল
|
|
|
|
|
|