|
|
|
|
ভুগছে উঃ-পূর্বাঞ্চল |
বেহাল সড়ক এলপিজি সঙ্কটের কারণ |
উত্তম সাহা • শিলচর |
জাতীয় সড়কের বেহাল দশা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তৃপক্ষ। কাছাড়ের বড়খলা বটলিং প্ল্যান্টে নিয়মিত গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তির কাজ থমকে যাবে কিনা, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কর্তৃপক্ষ। রাজ্য পূর্ত বিভাগ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বর্ষা শেষ না হলে রাস্তার হাল ফিরবে না।
উত্তর-পূর্বের প্রধান শহর গুয়াহাটির সঙ্গে বরাক উপত্যকা, মিজোরাম ও ত্রিপুরার সড়ক যোগাযোগের একমাত্র উপায় এই ৪৪ নং জাতীয় সড়ক। কিন্তু ওই সড়কে কাছাড় জেলার কালাইন থেকে মালিডহর পর্যন্ত অংশে বিটুমিনের চিহ্নমাত্র নেই। স্থানে স্থানে বিশাল গর্ত। সেগুলিও নড়বড়ে। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। সারি দিয়ে গাড়ি আটকে পড়ছে যখন তখন। গুয়াহাটি ও বড়খলা বটলিং প্ল্যান্টের মধ্যে আসা-যাওয়ায় গ্যাসবাহী গাড়িগুলির যেখানে তিন দিন সময় লাগত এখন সেখানে সাত দিন লাগে। কখনও এরও বেশি সময় সেগুলি এই রাস্তাতেই আটকে থাকে।
এই অবস্থায় বটলিং প্ল্যান্টে গ্যাসের মজুত প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। অথচ প্রতিদিন এখানে একশো মেট্রিক টনেরও বেশি গ্যাস সিলিন্ডারে ভরা হয়। ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের এরিয়া ম্যানেজার কমলেশ দেবনাথ জানান, রাস্তা নিয়ে তাদের দীর্ঘ দিন ধরেই ভুগতে হচ্ছে। ক’বছর আগে জাতীয় সড়ক থেকে প্ল্যান্ট পর্যন্ত সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এখন এর চেয়েও খারাপ অবস্থা জাতীয় সড়কের। মাস দুয়েক থেকে সমস্যা তীব্রতর হয়ে উঠেছে। এলপিজিবাহী ট্যাঙ্কারগুলির প্ল্যান্টে পৌঁছনোর অনিশ্চয়তার দরুন মাঝেমধ্যেই বটলিং বন্ধ হয়ে পড়ার উপক্রম হচ্ছে। একদিন বটলিং না-হলেই বরাক উপত্যকা, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মণিপুরের অংশবিশেষে রান্নার গ্যাসের সঙ্কট তীব্র হবে কমলবাবু জানান।
এই সঙ্কটের জন্য খারাপ রাস্তাঘাটকেই দায়ী করেছে আইওসি কর্তৃপক্ষ। দুই-আড়াই লেনের সড়কে ১৭.৫ মেট্রিক টন এলপিজিবাহী ট্যাঙ্কার চালানো সম্ভব নয় বলে শিলচরে আসে ৭ মেট্রিক টনের ট্যাঙ্কার। কমলবাবুর কথায়, ২০০৪ সাল থেকেই শিলচর-সৌরাষ্ট্র ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের কথা চলছে বলে ট্যাঙ্কার মালিকরা ৭ মেট্রিক টনের ট্যাঙ্কারের সংখ্যা বাড়াতে আগ্রহী নয়। কারণ ওই সড়ক তৈরি হয়ে গেলে ছোট ট্যাঙ্কার পুরোপুরি বাতিল হয়ে যাবে। এখন গোদের উপর বিষফোড়ার মতোই যোগ হয়েছে ৪৪ নং জাতীয় সড়কের বেহাল অবস্থা। রাজ্য সরকারের পক্ষে পূর্ত (জাতীয় সড়ক) বিভাগের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রণব সিংহ জানিয়েছেন, এই সড়ক সারাইয়ের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির জন্য তা থমকে আছে। ২০১২ সালের মধ্যে কালাইন-মালিডহর অংশের সমস্যা মিটে যাবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালে বড়খলা বটলিং প্ল্যান্ট তৈরি হয়। বছরে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বটলিংয়ের ক্ষমতা রয়েছে এর। এত দিন ম্যানুয়্যাল ফিলিং হলেও এখন ইলেকট্রনিক ফিলিং হচ্ছে। আরও আধুনিকীকরণের কাজ চলছে। তখন বছরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন এলপিজি সিলিন্ডার-বন্দি করা সম্ভব হবে। |
|
|
|
|
|