সংসদ চালাতে কংগ্রেস-বিজেপি আলোচনা, বাদ পড়ে ক্ষুব্ধ বাম
ঙ্কের হিসেবে ওঁরাও বিরোধী। কিন্তু সংসদ সুষ্ঠু ভাবে চলার আর্জি নিয়ে আজ কেবল মাত্র লোকসভার প্রধান বিরোধী দল বিজেপির দ্বারস্থ হলেন লোকসভার নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায়। লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজ ও অরুণ জেটলির সঙ্গে প্রণববাবুর আজকের এই বৈঠকে ছিলেন সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী পবন বনশলও। কিন্তু বাকি বিরোধী দলগুলিকে ‘উপেক্ষা’ করে সরকারপক্ষ এ ভাবে শুধু মাত্র বিজেপির সঙ্গে কথা বলায় ক্ষুব্ধ বাম নেতারা।
বৈঠকের পরে পবন বনশল বলেন, “চলতি অধিবেশনে ৩৫টি বিল সরকারের আলোচ্যসূচিতে থাকলেও গত দু’সপ্তাহে মাত্র দু’টি বিল পাশ করা সম্ভব হয়েছে। সংসদ সচল রাখার দায়িত্ব সকলের। বিজেপি নেতাদের কাছে আমরা এ ব্যাপারে সহযোগিতা চেয়েছি। সংসদের নিয়মের মধ্যে যে কোনও বিষয়ে আমরা আলোচনায় রাজি। কিন্তু একই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, সরকারের অনেক বিল পড়ে রয়েছে। বিজেপি নেতারা আমাদের অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।” রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি বলেন, “আপাতত যে সব বিল বকেয়া রয়েছে, সেগুলির ব্যাপারে বিজেপির খুব বেশি বিরোধিতা নেই। কিন্তু যদি নতুন করে কোনও বিতর্কিত বিষয় এসে পড়ে, তখন দলের নেতারা বসে রণকৌশল স্থির করবেন।”
কিন্তু বাকি বিরোধী দলগুলিকে উপেক্ষা করে সরকারপক্ষ শুধু বিজেপির সঙ্গে বৈঠক করায় আপত্তি তুলছেন বাম নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, সরকার জানে, বেশ কয়েকটি বিলে বামেদের আপত্তি রয়েছে। তাই শুধু বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে তারা বৈতরণী পেরোতে চাইছে। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “আর্থিক সংস্কারের বিষয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে কোনও মতভেদ নেই। সরকারও তা ভাল জানে।” সিপিআই নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত বলেন, “প্রণববাবুর উচিত সব দলের সঙ্গে কথা বলা। শুধু বিজেপির সঙ্গে কথা বলে সংসদে দ্বিদলীয় ব্যবস্থা কায়েম করার চেষ্টা করছে সরকার। অথচ বিজেপি ছাড়াও বাকি বিরোধী দলের কাছে মিলিত ভাবে একশোর বেশি সাংসদ রয়েছে। দেশে বিজেপি এবং কংগ্রেস মিলেও পঞ্চাশ শতাংশ ভোট পায় না! তা হলে কীসের ভিত্তিতে এই অবস্থান নিচ্ছে সরকার?”
সরকার অবশ্য বিজেপির সঙ্গে গোপন আঁতাতের অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছে। বনশল আজ বলেন, “গোপন আঁতাতের ব্যাপারে বামেদের তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা সব দলের সঙ্গেই কথা বলি। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনার সময় বামেদের সঙ্গেও বলেছি।” তবে সরকারপক্ষ একান্তে স্বীকার করেছে, বিজেপি যে হেতু বড় দল, তাই তাদের সঙ্গে নেওয়া জরুরি। কমনওয়েলথ, গুজরাত, পুলিশের লাঠিচার্জ-সহ একাধিক বিষয়ে বিজেপির সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাত ক্রমশ বাড়ছে। সংসদের গত অধিবেশনে কাজ প্রায় হয়নি। ফলে বিলের পাহাড় জমেছে। চলতি অধিবেশনেও গত দু’সপ্তাহে ৪৩ শতাংশ সময় নষ্ট হয়েছে।
বিজেপি নেতৃত্বও সংসদ না চালানোর পক্ষপাতী নন। সংসদ শুরুর আগেই সরকারকে সেই অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ী চান, দল যখন রাস্তায় নেমে শীলা দীক্ষিত-মনমোহন সিংহ-সনিয়া গাঁধীকে আক্রমণ করছে, দুর্নীতি-বিরোধী আন্দোলনে নেমে কর্মীরা পুলিশের লাঠির শিকার হচ্ছেন, তখন সংসদের ভিতরে-বাইরে কৌশলের সামঞ্জস্য থাকা দরকার। সংসদ লাগাতার অচল না করলেও বিষয়গুলি নিয়ে একেবারে নীরব থাকাটা সঠিক নয়। যশবন্ত সিন্হা, শাহনওয়াজ হোসেন, নভজ্যোৎ সিংহ সিধু, কীর্তি আজাদের মতো একাধিক সাংসদও বিজেপির গত সংসদীয় দলের বৈঠকে সরব হন। তাঁদের বক্তব্য, যে ভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে ‘গোপন সমঝোতা’র অভিযোগ উঠছে, তা খণ্ডন করা দরকার। সেই অঙ্কেই বিজেপি আপাতত সংসদ সচল রাখার পাশাপাশি বিষয়ভিত্তিক হইচই করার কৌশল নিয়েছে। সুষমা স্বরাজ বলেন, “সংসদ অচল করা প্রতিবাদের অন্যতম ভাষা। কিন্তু তাই বলে লাগাতার সংসদ অচল রাখার পক্ষপাতী নই আমরা।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.