|
|
|
|
রয়ে গেল বিতর্ক |
অবশেষে বরখাস্ত এয়ার ইন্ডিয়ার সিএমডি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বিরোধীদের চাপে সরকার এয়ার ইন্ডিয়ার সিএমডি-কে বরখাস্ত করে নতুন কর্তার হাতে দায়িত্ব দিল। কিন্তু তার পরেও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের।
আজ সংসদে এয়ার ইন্ডিয়া নিয়ে হট্টগোল হওয়ার পর সন্ধ্যায় সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, অরবিন্দ যাদবকে সরিয়ে বিমান মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব রোহিত নন্দনকে এয়ার ইন্ডিয়ার সিএমডি পদে নিয়োগ করা হল। ’৮২ সালের উত্তরপ্রদেশ ক্যাডারের আইএএস অফিসার রোহিত নন্দন নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পরেই বলেন, “কর্মীদের মনোবল ফেরানো আর এয়ার ইন্ডিয়ার আর্থিক স্বাস্থ্য পুনরুজ্জীবনই আমার অগ্রাধিকার।” কিন্তু একদা ‘মহারাজা’ এয়ার ইন্ডিয়াকে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়া নিয়ে বিরোধীরা সরকারকে কোণঠাসা করার কোনও সুযোগ হাতছাড়া করেনি। সংসদে বাম-বিজেপি আজ একযোগে এই নিয়ে সরব হয়। মন্ত্রীর কাছ থেকে সঠিক জবাব না পেয়ে তারা সভাও ত্যাগ করে।
এয়ার ইন্ডিয়ার প্রাক্তন সিএমডি অরবিন্দ যাদবের অপসারণ ও সংস্থার পুনরুজ্জীবনের জন্য গত তিন মাস ধরে লাগাতার আন্দোলন চালাচ্ছেন সিপিআই নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত। অন্য দিকে প্রাক্তন বিমানমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা রাজীবপ্রতাপ রুডি ও শাহনওয়াজ হুসেনও অভিযোগ তুলছেন, প্রধানমন্ত্রীর দফতরই প্রভাব খাটিয়ে অরবিন্দ যাদবকে সিএমডি-র পদে বসিয়েছে। বিজেপির ইশারা মনমোহন সিংহের প্রাক্তন মুখ্য সচিব টি কে এ নায়ারের দিকে। বাম নেতারা অবশ্য মনে করেন, চিদম্বরমেরও যথেষ্ঠ ভূমিকা ছিল এর পিছনে। আজও শাহনওয়াজ হুসেন বলেন, “কোনও অভিজ্ঞতা ছাড়াই অরবিন্দ যাদবকে এয়ার ইন্ডিয়ার সিএমডি-র পদে বসিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। এয়ার ইন্ডিয়াকে বাঁচানোর নাম করে তিনি যথেচ্ছ টাকা নয়ছয় করেছেন। কী উদ্দেশ্যে তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীকেই তার জবাব দিতে হবে।” হুসেন বলেন, রাজীব গাঁধী ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সেরই পাইলট ছিলেন। যে রাজীবের নামে কংগ্রেস দল চালায়, তারাই এখন এয়ার ইন্ডিয়াকে ডোবাতে উঠেপড়ে লেগেছে।”
বিমানমন্ত্রী ভায়লার রবি শারীরিক অসুস্থতার জন্য আজ সংসদে বিবৃতি দিতে পারেননি। তিনি উপস্থিত থাকলেওপ্রধানমন্ত্রী দফতরের প্রতিমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী তাঁর হয়ে সরকারের বক্তব্য পেশ করেন। কিন্তু কী ভাবে এয়ার ইন্ডিয়াকে বাঁচানো যায়, সে ব্যাপারে স্পষ্ট রূপরেখা দিতে পারেননি তিনি। তবে এয়ার ইন্ডিয়াকে যে বেসরকারিকরণ করা হচ্ছে না, তা স্পষ্ট জানিয়ে দেন নারায়ণস্বামী।
কিন্তু গুরুদাস দাশগুপ্ত-শাহনওয়াজ হুসেনদের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী যে ১২০০ কোটি টাকার প্যাকেজ দিয়েছেন, তা যথেষ্ট নয়। সরকার নিজেই স্বীকার করেছে, ত্রিশ হাজার কোটি টাকার বেশি লোকসানের বোঝা নিয়ে চলছে এয়ার ইন্ডিয়া। এই লোকসানের মধ্যেই ৬৮টি নতুন বিমানের বরাত দেওয়া হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, এর ৩৮টি বিমান এখনও হাতে আসেনি। সেগুলির বরাত বাতিল করলে অনেক অর্থ বাঁচানো যায়। এর পরেই অরবিন্দ যাদবকে বরখাস্ত করে সিএমডি-র রোহিত নন্দনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। নতুন কর্তা আগের আমলের বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলি খারিজ করবেন কি না, তা স্পষ্ট হয়নি।
বিমানমন্ত্রী ভায়লার রবি পরে জানান, বুধবারই প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মন্ত্রিগোষ্ঠী এয়ার ইন্ডিয়ার পুনরুজ্জীবন নিয়ে বৈঠকে বসছে। সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য লোকসান কমানো। শুধু কর্মীদের বেতনের সমস্যাই নয়, সংস্থার সামগ্রিক আর্থিক স্বাস্থ্যের দিকটি খতিয়ে দেখা হবে এই বৈঠকে। |
|
|
|
|
|