|
|
|
|
বৃষ্টির শহরে সমাবেশ, যানজটে বাড়ল দুর্ভোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
নাগাড়ে বৃষ্টি আর মিছিলে শুক্রবার দিনভর খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলল মহানগরী। স্কুলপড়ুয়া থেকে অফিসযাত্রী সকলকেই দীর্ঘক্ষণ থমকে থাকতে হল যানজটে।
সকাল থেকেই বৃষ্টি হয়েছে কখনও ঝিরঝিরিয়ে, কখনও মুষলধারে। রাস্তায় জল জমে থাকায় এমনিতেই গাড়ির গতি ছিল শ্লথ। একটু বেলা বাড়তেই রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিতে আসা ছোট-বড় মিছিলে স্তব্ধ হয়ে পড়ে শহরের বিস্তীর্ণ অংশ।
এ দিন দুপুর ১২টা থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে অবস্থান বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল রাজ্য বামফ্রন্ট। সভায় ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-সহ সিপিএমের তাবড় নেতৃত্ব। আর সেই সমাবেশেই যোগ দিতে হাওড়া, শিয়ালদহ, বিড়লা তারামণ্ডল থেকে আসা মিছিলে স্তব্ধ হয়ে পড়ে মধ্য কলকাতা। সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকেই হাওড়া-শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলামুখী মিছিলের ফাঁসে গাড়ি প্রায় এগোতেই পারেনি। যানজটে অধৈর্য হয়ে পায়ে হেঁটেই অনেকে রওনা দেন স্টেশনের পথে। যাঁদের দূরের ট্রেন ধরার ছিল, দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাঁদেরও। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বিকেল গড়ায়। |
|
উপরে মেঘের ঘনঘটা। নীচে যানজট। শুক্রবারের মহানগর। দেশকল্যাণ চৌধুরী |
বেলা ১১টা নাগাদ হাওড়া স্টেশন থেকে বাসে ধর্মতলায় আসছিলেন সুদীপ বসু। বললেন, “রাস্তা জুড়ে মিছিলে একটুও এগোতে পারছিল না বাস। ঠায় দাঁড়ানো বাসে বসে অধৈর্য লাগছিল।”
হাওড়া সেতু থেকে নেমে ব্রেবোর্ন রোড হয়ে রানি রাসমণি রোডের দিকে মিছিল যত এগিয়েছে, ততই গাড়ির জটে অবরুদ্ধ হয়েছে মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র ডালহৌসি চত্বর। একই ছবি ছিল শিয়ালদহ স্টেশন থেকে সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোড ধরে ধর্মতলার পথের এবং মহাত্মা গাঁধী রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ হয়ে ধর্মতলা এলাকার। এর সঙ্গে জওহরলাল নেহরু রোড ধরে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের দিকে এগোতে থাকা মিছিলে তালগোল পাকিয়ে যায় গোটা কলকাতা জুড়েই। তিনটে নাগাদ রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের অবস্থান বিক্ষোভ উঠে যাওয়ার পরেও স্বাভাবিক হতে পারেনি মহানগরী। প্রায় ছ’সাত হাজার লোকের ভিড় তখন ছড়িয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন পথে। এর জেরে বিকেল চারটের পরেও রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের দু’টি রাস্তাই বন্ধ করে রাখতে হয় কলকাতা পুলিশকে। রেড রোড, ডোরিনা ক্রসিং, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে ট্রাফিক সামলাতে হিমশিম খায় পুলিশ।
মিছিল কোন পথে এগোবে, তা অজানা ছিল না। তবুও জটপাকানো গাড়ির ভিড় হাল্কা করতে কালঘাম ছুটে যায় ট্রাফিক কর্তাদের। সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, জওহরলাল নেহরু রোডের বহু গাড়ি অন্য পথে ঘুরিয়েও ভোগান্তি কমানো যায়নি বলে স্বীকার করেন পুলিশকর্তারাই। এক ট্রাফিককর্তা বলেন, “আগে থেকে অন্য পথে গাড়ি ঘুরিয়েও যানজট সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল না। সারা দিন ধরে বৃষ্টিতে গাড়ির গতি কম থাকায় দুর্ভোগ অনেকটাই বেড়েছে।”
মিছিল, বৃষ্টিতে এই ভোগান্তির পাশাপাশি রাজারহাট, নিউ টাউনের বিস্তীর্ণ এলাকায় গত সাত দিন ধরে জল জমে থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। ভিআইপি রোড ধরে নিউ টাউন রোডে ঢোকার পথে কোথাও হাঁটুজল কোথাও বা কোমর জল। কী ভাবে জল দ্রুত নামানো যায়, সে ব্যাপারে হিডকো ও রাজারহাটের চিফ ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে এ দিন বৈঠক হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বিধায়ক তথা
শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। তিনি বলেন, “রাজারহাট এলাকার বাগজোলা খালের নাব্যতা হারিয়েছে। খালটি সংস্কার করতে হবে। তবে এখনই পাম্প চালিয়ে অতিরিক্ত জল দ্রুত বাগজোলা খালে ফেলা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|