|
|
|
|
মিলল ২৫টি ক্ষতচিহ্ন |
গোসাবার জঙ্গলে কুমিরের কামড়ে প্রাণ গেল বাঘের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
যা সচরাচর ঘটে না, তাই ঘটল। কুমিরের কামড়ে মৃত্যু হল বাঘের। অন্তত ময়না-তদন্তের রিপোর্ট তাই বলছে। বাঘটির দেহে ছিল ২৫টি ক্ষতচিহ্ন।
মঙ্গলবার সকালে ৯টা নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার দোঁবাকি জঙ্গলের কাছে নদী থেকে ওই বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার করেন বন দফতরের কর্মীরা। দেখা যায়, বাঘটির ডান পায়ের গোড়ালির উপর থেকে কাটা। বাঁ পায়ের গোড়ালির হাড়ও নেই। দু’টি পায়েই কামড়ের স্পষ্ট দাগ রয়েছে বলে জানান ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসকেরা। এ ছাড়া বাঘটির শরীরে প্রায় ২৫টি ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। সম্ভবত কুমিরের সঙ্গে বাঘটির লড়াই হয়েছিল বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
এ দিন ভোরে মৎস্যজীবীরা বাঘটির দেহ নদীতে ভাসতে দেখেন। তাঁরাই বন দফতরের কর্মীদের খবর দেন। বাঘটির দেহ যেখানে পাওয়া যায় তার কাছাকাছি একটি কুমিরকে সাঁতরাতে দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বন দফতরের কর্মীরা। সাধারণত কুমির শিকার করার পর তা পাহারা দেয় এবং শিকারের পাশেই থাকে। শিকার ছাড়তে চায় না। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রাথমিক ভাবে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে ওই বাঘের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।” বাঘের দেহের পাশে ঘোরাফেরা করা কুমিরটিরও ছবি তোলা হয়েছে বলে জানান সুব্রতবাবু।
বনকর্তারা জানান, বর্ষায় ওই এলাকায় নদীগুলিতে কুমিরের আনাগোনা বাড়ে। বাঘটি সাঁতরে নদী পার হচ্ছিল অথবা জল খেতে এসেছিল। অসতর্ক অবস্থায় কুমির তার পা কামড়ে জলের তলায় টেনে নিয়ে যায়। এ দিন আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে তিন জন চিকিৎসকের একটি দল ওই বাঘের মৃতদেহের ময়না-তদন্ত করেন। দোবাঁকি ফরেস্ট অফিসে ওই ময়না-তদন্ত করা হয়। প্রাথমিক ভাবে কুমিরের হামলায় বাঘটির মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরাও।
এক বনকর্তা জানান, সাধারণত কুমির শিকার ধরার পর নিমেষের মধ্যে তা গভীর জলে টেনে নিয়ে যায়। তার ফলে দমবন্ধ হয়ে শিকারের মৃত্যু হয়। শিকারকে মেরে ফেলার ওটাই কায়দা কুমিরের। জলের নীচে শিকার দমবন্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পর তা ভেসে ওঠে। এ-ক্ষেত্রেও এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। মৃত বাঘটির গায়ে একাধিক ক্ষতচিহ্ন দেখে চিকিৎসকদের অনুমান, কুমিরের সঙ্গে জোর লড়াই হয়েছিল বাঘটির। তার পরেই তার মৃত্যু হয়েছে।
বন দফতর সূত্রের খবর, মৃতদেহে পচন ধরেনি। সে-ক্ষেত্রে এদিন ভোরের দিকে বা গভীর রাতে বাঘটির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে চিকিৎসকদের অনুমান।
সিআইডি সূত্রে খবর, বছর দেড়েক আগে দোবাঁকি জঙ্গলে একটি বাঘের মৃতদেহ ভাসতে দেখে কয়েক জন পর্যটক বন দফতরে খবর দিয়েছিলেন। সে বার মৃত বাঘটির ময়না-তদন্তের পর জানা যায়, তার মাথায় গুলি করা হয়েছিল। তদন্তে নেমে সিআইডি দু’জনকে গ্রেফতার করে। দোবাঁকি এলাকায় চোরাশিকারির আনাগোনা রয়েছে বলে সিআইডি কর্তারা জানিয়েছেন। এই বাঘটির ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে তা খতিয়ে দেখবে সিআইডিও। বন দফতরের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন সিআইডির গোয়েন্দারা। |
|
|
 |
|
|