|
|
|
|
|
|
রোপওয়ে |
|
ছবি: অনিতা দত্ত |
বন, পাহাড়, নদী, ঝর্না আর চা বাগানের মিশেলে শৈলশহর দার্জিলিঙের এক অনাস্বাদিত সৌন্দর্য আর অসাধারণ অনুভূতির সাক্ষী হতে চাইলে একবার সেখানে উঠে বসতেই হবে, যার পোশাকি নাম দার্জিলিং রঙ্গিত ভ্যালি পাসেঞ্জার। সৌজন্যে ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন কনভেয়র অ্যান্ড রোপওয়ে সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড। শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে নর্থ পয়েন্টে রয়েছে ভারতের প্রথম এই যাত্রীবাহী রোপওয়ে। ২০০৩-এর অক্টোবরে কেব্ল ছিঁড়ে রোপওয়েটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। ৪০ জন যাত্রী মারা যান ও ১১ জন আহত হন। তার পর এই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। পর্যটকদের নিরাপত্তার দিকটি খতিয়ে দেখতে রাজ্যের বন দফতর ও পূর্ত বিভাগ মিলে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি জানিয়ে দেয়, এটি চলাচলের উপযুক্ত নয়। সম্প্রতি সরকারি তরফে ইঙ্গিত মিলেছে, এটি আবার চালু হতে পারে। এটির যাত্রা শুরু হয় প্রায় সাত হাজার ফুট উচ্চতায় নর্থ পয়েন্ট নামক জায়গা থেকে। সিংলাবাজারে এসে যাত্রাপথের ইতি। যেতে যেতে দেখা হয়ে যায় উপত্যকা জুড়ে পাহাড়ের ধাপে ধাপে মনোরম ঘন সবুজ চা-এর রাজ্য, ঢাল বেয়ে নেমে আসা ঝর্না-ঝোরা। নজর কাড়ে পাহাড়ের গায়ে লেপ্টে থাকা মেঘ জড়ানো গভীর অরণ্য। নীচে, অনেক নীচে রুপোলি ফিতের মতো পাহাড়ি নদী। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই যাত্রাপথে খানিক বিরতি ঘটে তাকভার এবং বার্নেশবেগ চা-বাগানে। আর হ্যাঁ, এশিয়ার মধ্যে এটিই প্রথম বাই কেব্ল প্যাসেঞ্জার রোপওয়ে। রোপওয়েটি চালু হলে পাহাড় পর্যটনে যে জোয়ার আসবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
|
বিজ্ঞান কংগ্রেস |
|
‘জাতীয় শিশু-বিজ্ঞান কংগ্রেস ২০১১’ একটি প্রকল্প-ভিত্তিক প্রতিযোগিতা। প্রতি দু’বছর একটি মূল বিষয়কে কেন্দ্র করে বিজ্ঞান কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ও আর্থিক আনুকূল্যে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতার জেলা স্তরের সমন্বয় সংস্থা জলপাইগুড়ি সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাব। এ বারের বিষয়: ‘ভূমি সম্পদ একে উন্নতির জন্য ব্যবহার করো, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাঁচিয়ে রাখো’। মূল বিষয়ের অধীন কিছু উপ-বিষয় থাকে। ১০-১৭ বছরের ছাত্রছাত্রীরা প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে যোগ দিতে পারে। মূল প্রকল্পের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রতিযোগীদের কাজ বিদ্যালয় বা নিজের বাড়ির কাছের এলাকায় ভূমি এবং পরিবেশ বিষয়ে ছোট ছোট গবেষণাপত্র নিজস্ব চিন্তা অনুযায়ী তৈরি করা। সম্প্রতি এই প্রতিযোগিতার জন্য প্রশিক্ষকদের একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিল সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাব। সংস্থার পক্ষে রাজা রাউত জানান, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং প্রশিক্ষকরা এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
|
ছোটদের নাটক |
|
১৮-২৫ জুন ২০১১ কোচবিহার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হল আনন্দম কালচারাল সেন্টারের ১৯তম বার্ষিক শিশু-কিশোর নাট্য কর্মশালা। শিবিরে যোগ দিয়ে এক ডজন স্কুলের ৩৪ জন ছাত্রছাত্রী কর্মশালা শেষে উপহার দিল শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত নাটক ‘লালটেম’। ১৯৮০-তে জন্ম আনন্দম-এর। ছোটদের নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে তারা চর্চা করে চলেছে নাটক ও মূকাভিনয়। ১৯৯৩-এ দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-র সহযোগিতায় গ্রীষ্মকালীন শিশু-কিশোর নাট্য কর্মশালার আয়োজন করেছিল আনন্দম। প্রতি বছর এই আয়োজন অব্যাহত। সোমনাথ ভট্টাচার্য, কিশোরনাথ চক্রবর্তী, স্বাগত পাল, দীপক চক্রবর্তী, বিমল দে সরকার এবং শংকর দত্তগুপ্ত ছিলেন প্রশিক্ষকের দায়িত্বে। পরিবেশবিদ অরূপ গুহ নিয়েছেন বিশেষ ক্লাস। শেষ দিনে ছোটদের প্রযোজনা দেখে খুশি তাদের অভিভাবক ও নাট্যকর্মীরা। খুশি সংলাপ, অভিষেক, অর্পিতা, নেহা, পূর্ণিমা, গৌরব, মহুয়া প্রমুখ খুদে অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও। লালটেমের ভূমিকায় পার্থপ্রতিম আর যক্ষের ভূমিকায় সৌম্যজিৎ, গ্রামবাসীর ভূমিকায় শ্রুবা, রিম্পিরাও আনন্দ দিয়েছে তাদের বন্ধুদের।
|
পুতুলনাচের শিল্পী |
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম তিনি শোনেননি, জানেন না পুতুল নাচের ইতিকথা-র কাহিনি। শুধু বিশ্বাস করেন কাঠের, নিষ্প্রাণ পুতুলগুলোই তাঁর প্রাণভোমরা। তিনি হিতেন বর্মন মালি। চিল্কিরহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোগডাবরি কেশরিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। বয়স ষাট ছুঁই-ছুঁই। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে পুতুল নাচের সঙ্গে যুক্ত। নিজে হাতে কাঠ দিয়ে তৈরি করেন পুতুল, তার পর সেগুলিকে সাজিয়ে উপস্থাপন করেন দর্শকদের সামনে। যখন দড়ির ওপর দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যায় তাঁর পুতুলের দল কিংবা মোটরবাইক ছুটে আসে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে তখন দর্শকরা অবাক না-হয়ে পারে না। হিতেনবাবু ‘সতিনির ব্যাটা’, ‘কাজের মাসি আমার মা’, ‘ফাঁসির মঞ্চে জননী’, এমন বেশ কয়েকটি পালাও লিখেছেন। পৌরাণিক ও প্রচলিত কাহিনি গ্রামে দর্শক টানে। কেবল পুতুল তৈরি বা নাচানোই নয়, সব চরিত্রে কণ্ঠদান, গান সবই একা সামলান তিনি। ছেলে বিশ্বজিৎ ছাড়াও সতীশ, ইন্দ্রজিৎ, কানাই, গণেশ বর্মনরা সাহায্য করেন। বাবা রাজেন বর্মন মালীর হাত ধরে কৈশোরেই পুতুলনাচে হাতেখড়ি, যত দিন শরীর বইবে, তত দিন পুতুলদের নিয়েই থাকতে চান তিনি। আজকাল চোখেও কম দেখেন, চশমা কেনার পয়সা নেই। অন্যের চশমা এনে তাতেই কাজ চালান হিতেনবাবু।
|
বাসি ফুল |
রাজবংশী-ক্ষত্রিয় আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে শশিভূষণ ফৌজদার প্রণীত বাসি ফুল প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯১৮-তে। দীর্ঘকাল দুর্লভ ছিল এই গ্রন্থটি। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক দীপককুমার রায় অসমের বঙ্গাইগাঁও-এ খুঁজে পান তার মূল পাণ্ডুলিপি। গত ১৬ জুন ময়নাগুড়ির উত্তরাংশে আমগুড়ি-চাপগড়ে উজানি সাহিত্যবাসরে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হয় দীপককুমার রায় সম্পাদিত বাসি ফুল গ্রন্থটি (প্রকাশক নরেশ রায়, উজানী প্রকাশন, আমগুড়িবাজার, জলপাইগুড়ি)। |
|
|
|
|
|