|
|
|
|
বিপর্যস্ত রাঢ় বাংলা |
বিষ্ণুপুরে নদীতে ভেসে মৃত্যু বৃদ্ধার |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
ঘূর্ণাবর্তের জেরে শুক্রবার রাত থেকে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলাজুড়ে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দুই জেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে জল বেড়েছে। সোমবার সকালে বিষ্ণুপুর থানার শ্যামসুন্দরপুরে এক বৃদ্ধা বিড়াই নদীতে পড়ে গিয়ে ভেসে যান। পরে তাঁর মৃতদেহ ভেসে ওঠে। মৃতার নাম জুমন্নেষা বিবি (৬৫)। তাঁর বাড়ি বিষ্ণুপুর শহরের কুরবানতলা এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বৃদ্ধা শ্যামসুন্দরপুর গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। এ দিন সকালে নদীর পাড়ে তিনি শৌচকর্ম করতে গিয়েছিলেন। তখনই নদীর জলে পড়ে গিয়ে তিনি ভেসে যান। পরে, গ্রামবাসীরা তাঁকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ জাকিব বলেন, “মাঠে কাজ করছিলাম। বৃদ্ধা ভেসে যাচ্ছেন দেখে নদীতে লাফ দিই। উদ্ধার করার পর দেখি তিনি মারা গিয়েছেন।” বৃদ্ধার ছেলে শেখ ইয়াসিন বলেন, “মা মামার বাড়িতে গিয়েছিল। এদিন সকালে খবর পেয়ে গিয়ে দেখি মা মারা গিয়েছে। এমন ঘটনা ঘটবে ভাবতে পারিনি।” |
|
বিষ্ণুপুরে এই জায়গায় মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধার। ছবি: শুভ্র মিত্র। |
বাঁকুড়া জেলা আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত সাড়ে আটটা থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০৩.৮ মিলিমিটার। কখনও হাল্কা, কখনও ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে বাঁকুড়াবাসীর জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। দামোদর, কংসাবতী ও দ্বারকেশ্বরের মতো বড় নদীগুলিতে জল তেমন বাড়েনি। তবে, জেলার ছোট নদী গন্ধেশ্বরী, শালি ও বিড়াইয়ের জল ফুঁসছে। বাঁকুড়ার জেলাশাসক মহম্মদ গুলাম আলি আনসারি বলেন, “এ দিন পর্যন্ত বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। তবে নদ-নদীগুলিতে জল বাড়ছে। এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির মোকাবিলায় ত্রাণসামগ্রী মজুত করে রাখা হয়েছে।” |
|
বৃষ্টির মধ্যে বাড়ি ফেরা। হুড়ায় প্রদীপ মাহাতোর তোলা ছবি। |
অন্য দিকে, পুরুলিয়া জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছে, রবিবার থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৭৯.৩ মিলিমিটার। জেলার কৃষি উপঅধিকর্তা (প্রশাসন) অশ্বিনী কুণ্ডু বলেন, “এমনিতে অগস্টের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ধান রোয়ার কাজ শেষ হয়ে যায়। চলতি মরশুমে বৃষ্টি চাষের অনুকূল হলেও মাঝে বৃষ্টি কিছুদিন বন্ধ থাকায় চাষিরা দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন। এখনও পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ জমিতে রোয়ার কাজ শেষ হয়েছিল। এই ক’দিন ভালো বৃষ্টি হওয়ায় এবার তা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আমার ধারনা।” তাই এই বৃষ্টি চাষিদের মনে স্বস্তি এনেছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) হৃষিকেশ মুদি বলেন, “ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি। তবে জেলার তিনটি মহকুমায় প্রায় ৭৫০০ ত্রিপল পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি ব্লকের বিডিওদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” |
|
|
|
|
|