এক মাসে চুরির কিনারা
ভুল নামে সাড়া দিয়ে ফাঁদে চোর ‘সহযাত্রী’
খনও তাঁর নাম এস কে রায়। কখনও তিনি জি ডি গুপ্ত।
হাতে জলের বোতল আর ছোট একটি ব্যাগ। এ নিয়ে দূরপাল্লার ট্রেনের প্রথম শ্রেণি বাতানুকূল কামরায় চড়ে বসতেন তিনি। রাতে সহযাত্রীরা যখন ঘুমে অচেতন, তখন তাঁদের ব্যাগ হাতিয়ে নেমে পড়তেন। একের পর এক এই রকম ঘটনা ঘটিয়ে দিব্যি চলছিল তাঁর। ধরা পড়ে গেলেন ছোট্ট একটি ভুলের জন্য।
ভুলটা কী?
নাম ভাঁড়িয়ে নানা ট্রেনের টিকিট কাটলেও, সবক’টিই কেটেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর স্টেশন থেকে। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু হয়। এর পরে অভিযোগকারী কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে ছবিও আঁকানো হয় অভিযুক্তের। তদন্তে জানা যায়, ওই ব্যক্তির নাম গণজ্যোতি দত্তগুপ্ত। বছর পঁয়তাল্লিশের ওই ব্যক্তি থাকেন অশোকনগরেই। এর পরেই তাঁকে ধরার জন্য ফাঁদ পাতেন তদন্তকারীরা।
গণজ্যোতি দত্তগুপ্ত এর মধ্যে ২৭ জুলাই অশোকনগর স্টেশন থেকে মুম্বই মেলের টিকিট কেটেছিলেন গণজ্যোতি। ট্রেনটি রাত ১০টার বদলে পর দিন সকালে ছাড়ে। তাই সেই ট্রেনের টিকিট বাতিল করেন গণজ্যোতি। সে যাত্রা রক্ষা পেলেও, রবিবার ফের পুরী এক্সপ্রেসের বাতানুকূল কামরায় ‘শিকার’ খুঁজতে বেরিয়ে পড়েছিলেন গণজ্যোতি। তাঁর কাছে গিয়ে হঠাৎ তদন্তকারীরা বলেন, “কেমন আছেন মিস্টার এস কে রায়?” আচমকা প্রশ্নে ঘাবড়ে গিয়ে সাড়া দিয়ে ফেলেন গণজ্যোতি। ভুলে যান, এ বার তিনি টিকিট কেটেছিলেন জি ডি গুপ্ত নামে। এর পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জেরা করে চুরি যাওয়া দু’টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে।
যাঁর কাছে ওই ল্যাপটপ দু’টি বিক্রি করা হয়েছিল, হাবরার সেই যুবককেও পূর্ব রেলের আরপিএফ অফিসাররা গ্রেফতার করেছে। যে ভাবে গণজ্যোতিকে গ্রেফতার করা হল, তাতে রীতিমতো উৎসাহিত রেলের অফিসাররা। এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সৌমিত্র মজুমদার বলন, “অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে আমাদের দুর্নীতি দমন শাখা (কমার্শিয়াল)। দেখা যায়, প্রতি ক্ষেত্রেই ওই ব্যক্তি বেনামে টিকিট কেটে ট্রেনে সফর করতেন। সব টিকিটই অশোকনগরের রিজার্ভেশন কাউন্টার থেকে কাটার ফলেই তাঁকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়।”
সে কাজটা অবশ্য সহজে হয়নি। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের দুর্নীতি দমন শাখার ডেপুটি চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (স্পেশাল) দেবাশিস চন্দের কথায়, “দুর্নীতি দমন শাখার (কমার্শিয়াল) চিফ টিকিট ইনস্পেক্টর একে নস্করের নেতৃত্বে গত এক মাস ধরে অশোকনগর রিজার্ভেশন কাউন্টারে গিয়ে রিক্যুইজিশন স্লিপ মিলিয়ে দেখা হয়েছে। একই হাতের লেখা টিকিটের রিক্যুইজিশন স্লিপ দেখেই প্রথমে সন্দেহ হয়। এর পর বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে চিহ্নিত করা হয় ওই ব্যক্তিকে।” গণজ্যোতি জয়পুরিয়া কলেজ থেকে ইতিহাসে অনার্স নিয়ে পাশ করেছেন। বাড়িতে স্ত্রী, তিন সন্তান ও অসুস্থ মা রয়েছেন। অভাবের তাড়নায় তিনি ওই অপকর্ম করতেন বলে জেরায় তদন্তকারীদের জানিয়েছেন। যাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে ধরা হয়েছে, সেই অরিত সাউ বলেন, “রেলের অফিসাররা আমায় ফোন করে ল্যাপটপ উদ্ধারের কথা বলেছেন। ঘটনার এক মাস পরে হলেও রেল দফতরের কর্মীরা যা করেছেন, তা প্রশংসার যোগ্য।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.