|
|
|
|
বৈঠকে বললেন মানস |
মালদহ নিয়ে উদ্বেগে মুখ্যমন্ত্রীও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মালদহ |
বৈঠক চলাকালীন রাজ্যের সেচ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়াকে ফোন করে মালদহের ভাঙন ও বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিলেন উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার মালদহে গিয়ে সেচ মন্ত্রী দফতরের ইঞ্জিনিয়রদের পাশাপাশি মালদহে জেলার বিধায়ক এবং সাংসদদের নিয়ে বৈঠক করেন। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলা ওই বৈঠকে ভাঙন রোধে কমিটি গঠন থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। তবে জেলার বন্যা ও ভাঙন পরিস্থিতি ভয়ানক জেনেও দুর্গতদের এলাকায় যাননি। ওই ঘটনার জেরে বিরোধীদের সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় তাঁকে। বামেদের অভিযোগ, দুর্গতদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হবে, এই ভয়ে সেচ মন্ত্রী ভাঙন কবলিত এলাকায় যাননি। এই ব্যাপারে সেচ মন্ত্রীর বক্তব্য, “বেলা ১১টা থেকে চার ঘন্টা ধরে বৈঠক চলেছে। সেই কারণে ভাঙন কবলিত এলাকা দেখতে যেতে পারিনি। শীঘ্রই আমি আবার মালদহে এসে ভাঙন কবলিত এলাকায় যাব।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, “সেচমন্ত্রী তাঁদের দুর্ভোগের কথা শুনতে আসবেন সেই আশায় সকাল থেকেই মানিকচক, রতুয়ার ভাঙন ও বন্যা দুর্গতরা বসেছিলেন। সেচমন্ত্রী না-যাওয়ায় দুর্গতরা হতাশ। ভয়াবহ ভাঙন ও বন্যা পরিস্থিতির কথা জানার পরেও তা দেখতে না-যাওয়ার আমরা তীব্র নিন্দা করছি। কীভাবে ভাঙন ও বন্যা দুর্গতরা জলবন্দি হয়ে দিন কাটাচ্ছেন তা সেচ মন্ত্রীর নিজের চোখে দেখে যাওয়া উচিত ছিল।” |
|
রবিবার ছবিটি তুলেছেন মনোজ মুখোপাধ্যায়। |
সেচ মন্ত্রী জানান, মালদহের ভাঙন ও বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং উদ্বিগ্ন। মালদহের ভাঙন ও বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিতে মুখমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। ভাঙন ও বন্যা কবলিত এলাকার মানুষরা কীভাবে আছেন সেই ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নিয়েছেন। তিনি বলেন, “দফতরের ইঞ্জিনিয়ার, বিধায়ক, সাংসদ, দুই মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ও সাবিনা ইয়াসমিনদের কাছ থেকে যা শুনলাম তাতে মালদহ জেলায় বন্যা ও নদী বাঁধের হাল সংকটজনক। এই পরিস্থিতিতে কী করণীয় সেই ব্যাপারে বৈঠক হয়। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ভাঙন রোধ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ পৌঁছে দিয়ে উদ্ধার করার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” এ দিন বৈঠকের পর সেচমন্ত্রীও স্বীকার করেন, মালদহ ও মুশির্দাবাদের ভাঙন সমস্যা একা রাজ্যের পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। এটা জাতীয় স্তরের সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে দিল্লির কাছে দরবার করবে রাজ্য সরকার। তিনি বলেন, “আমরা চাই নদী ভাঙন সমস্যার সমাধানে কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ শতাংশ সাহায্য করুক। সেই জন্য রাজ্যের সমস্ত বিধায়ক, সাংসদদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করা হবে।” এ দিনের বৈঠকে ফরাক্কা ব্যারাজ প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষ হাজির না হওয়ায় বিরক্ত সেচমন্ত্রী বলেন, “ডাকার পরেও কেন আজকের বৈঠকে ফরাক্কা ব্যারাজ প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষ আসেনি তার খোঁজ নেব।” মালদহ জেলায় ভাঙন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে ইঞ্জিনিয়ার, জেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের মধে সমন্বয়ের অভাবের কথা স্বীকার করে সেচমন্ত্রী বলেন, “মালদহ জেলায় ভাঙন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে একটি সমণ্বয় কমিটি গড়া হল। এই কমিটি ১৫ দিন পর পর বৈঠকে বসবে।” দফতরের ইঞ্জিনিয়রদের সর্তক করে সেচমন্ত্রী বলেন, “যারা চুরি করছে, সেই চোর আমি ধরবই। কাউকে ছাড়ব না। ৩৪ বছর ধরে অনেক উল্টোপাল্টা কাজ হয়েছে। দফতরের কাজ নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে।” |
|
|
|
|
|