একে বর্ষা। তার উপরে অসহনীয় যানজট আর রিকশার লাগাম ছাড়া ভাড়ার জুলুম থেকে বহরমপুর শহরের মানুষজন নাজেহাল। এই দুর্ভোগের হাত থেকে রেহাই মেলার আশু সম্ভবনা সম্ভবত এখনও অধরাই। নিয়ম করে প্রতি বছর ২-৩ বার করে সরকারি কর্তা থেকে পুরপ্রধান পর্যন্ত প্রায় সবাই বহরমপুর শহরে যানজট ও পরিবহন সমস্যা সমাধানের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। তার পরও সমাধান আটকে থাকে সেই একই তিমিরেই। বিগত বথর গুলির মতো যেমন রয়েছে এখনও।
বহরমপুর শহরের রিকসা চালক সমিতির সভাপতি শান্তিপদ দত্ত বলেন, “সংশ্লিষ্ট সব মহলকে নিয়ে বহরমপুর পুরসভার পক্ষ থেকে সর্বসম্মত রিকশা ভাড়ার তালিকা তৈরি করা হয়েছে বছর খানেক আগে। কিন্তু এক শ্রেণির রিকশা চালকের কারণে ওই তালিকা অনুসারের সব সময় যাত্রীদের থেকে ভাড়া নেওয়া হয় না। অনেক সময় বেশি ভাড়া আদায় করা হয়। ফলে ভুগতে হয় যাত্রীদের।” তার জন্য তিনি রিকসা চালকদের একটি অংশকে দায়ি করার পাশাপাশি দায়ি করেছেন পুরসভা এবং প্রশাসনকে। শান্তিপদবাবু বলেন, “বহরমপুর শহরে পুরসভার অনুমোদনপ্রাপ্ত রিকশা রয়েছে প্রায় চার হাজার। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পঞ্চায়েতের আরও প্রায় ছয় হাজার রিকশা। সম্প্রতি লাদেন ওরফে লছিমন নামের মোটর চালিত অবৈধ ভ্যানও চলছে বহরমপুর শহরে। ফলে যানজটে জেরবার শহর। অথচ প্রশাসন ও পুরসভার কোনও হেলদোল নেই।” |
সেই সঙ্গে বহুতল বাড়ি নির্মানের ব্যবসা বেড়ে যাওয়ায় বালি ও পাথর ভর্তি লরি যখন তখন শহরের ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়ায় যানজটের সমস্যা আরও বহু গুন বেড়ে যাচ্ছে। বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, “ওই সমস্যার আংশিক সমাধানের জন্য রাতে বহরমপুর স্টেশন থেকে দু’টি শহর সার্ভিস বাস চালু করা হয়েছে। পঞ্চায়েতের রিকসা শহরের মধ্যে ঢুকবে না বলে একটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা কার্যকর করা যায়নি। শহরের মধ্যে যাত্রী পরিবহনের জন্য অটো রিকসা সার্ভিস চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হলে যানজট ও রিকসা ভাড়ার সমস্যার অনেকটাই মিটে যাবে বলে আশা করছি। ওই সব বিষয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব মহলকে নিয়ে দ্রুত মিটিং করা হবে।”
অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অজয় ঘোষ বলেন, “ওই সব সমস্যা সমাধানের বিষয়ে মিটিং করা নিয়ে মাস দেড়েক আগে পুরপ্রধানের সঙ্গে এক বার কথা হয়েছিল। তার পর ওই বিষয়ে আর কেউ আমার সঙ্গে কথা বলেননি। পুরপ্রধান চাইলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে মিটিং করে সমস্যা সমাধানের জন্য দীর্ঘ মেয়াদি ও স্বল্প মেয়াদি পরিকল্পনা করে তা কার্যকর করা হবে।” |