|
|
|
|
শিক্ষক সঙ্কটেও শূন্যপদ পূরণে ব্যর্থ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
চরম শিক্ষক-সঙ্কটে ভুগছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। সমস্যা সমাধানে ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) ৩৫ জন শিক্ষক নিয়োগের অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু ওই শূন্যপদ পূরণ করতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ জন্য বরাদ্দ অর্থও ফেরত যেতে চলেছে।
এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায় নেই বলেই অবশ্য দাবি রেজিস্ট্রার রণজিৎ ধরের। তিনি দুষছেন ইউজিসি ও রাজ্য সরকারকে। রণজিৎবাবুর কথায়, “২০০৭ সালের একাদশ পরিকল্পনায় শিক্ষক নিয়োগের অনুমতি দিয়েছিল ইউজিসি। কিন্তু আমাদের বিষয়টি জানানো হয় প্রায় আড়াই বছর পরে, ২০১০ সালের গোড়ায়। তার পর রাজ্য সরকারের কাছে অনুমতি চেয়ে পাঠানো হয়। অনুমতি পেতে ৬ মাসের বেশি সময় লেগে যায়। ইতিমধ্যে বিধানসভা নির্বাচন চলে আসে। নতুন সরকার গঠনের পরেই আচার্য নির্দেশ দিয়েছেন, আপাতত নতুন নিয়োগ করা যাবে না। ২০১২ সালে একাদশ পরিকল্পনার মেয়াদ শেষ। মেয়াদ শেষেও অর্থ খরচ না-হলে ইউজিসি অর্থ ফেরৎ চাইতে পারে। অর্থ ফেরত যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।”
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ২৬টি বিভাগ। এক একটি বিভাগে ৩, ৪ বা ৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। আবার রিমোট সেন্সিং অ্যান্ড জিআইএস, অ্যাকোয়া কালচার-সহ বিভিন্ন বিভাগে স্থায়ী শিক্ষক নেই। এক জন স্থায়ী শিক্ষককে কো-অর্ডিনেটর করে অস্থায়ী শিক্ষক দিয়ে কাজ চালানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, এই ধরনের বিষয়গুলি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ বেশি। অনেকেই পড়ার পর চাকরিও পাচ্ছেন। ফলে শিক্ষক না থাকলেও বিভাগ বন্ধ করা যায়নি। ইউজিসিকে এই সমস্যা বোঝানো সম্ভব হয়েছিল। তার পরেই শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের অনুমতি মেলে। কিন্তু ইউজিসি-র নিয়মে নতুন শিক্ষক নিয়োগ করতে হলে প্রথম ৫ বছর শিক্ষকের মাইনের ভার নেবে ইউজিসি। তার পর সেই দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। অর্থাৎ শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ইউজিসি’র পাশাপাশি রাজ্য সরকারেরও অনুমোদন প্রয়োজন। রেজিস্ট্রারের কথায়, “দু’টি ক্ষেত্রেই অনুমোদনের চিঠি পেতে এত দেরি হয়েছে যে, ইচ্ছে থাকলেও আমরা কিছুই করতে পারিনি।”
একাদশ পরিকল্পনার সময় ছিল ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল। এই ৫ বছর ইউজিসি-র অর্থে ৩৫ জন শিক্ষক নিয়োগ করা যেত। প্রায় প্রতিটি বিভাগেই একজন-দু’জন করে শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনাও করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পরিকল্পনার স্তরেই রয়ে গিয়েছে। এমনকী অনুমোদন কার্যকর করতে না পারায় পরবর্তী ক্ষেত্রে শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন পেতে ঝক্কি পোহাতে হতে পারে বলে আশঙ্কা। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ইউজিসিকে পুরো বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করা হবে। যাতে অনুমোদনের অর্থ ফেরত না নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে দ্বাদশ পরিকল্পনাতেও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে আরও শিক্ষক নিয়োগের অনুমতির জন্য তদ্বির করা হবে। রেজিস্ট্রার বলেন, “আমরা ইউজিসিকে যতটা সম্ভব বোঝানোর চেষ্টা করব। কিন্তু তাতে ঠিক কতটা ফল হবে বুঝতে পারছি না।” |
|
|
|
|
|