|
|
|
|
চিতাবাঘের দেহ উদ্ধার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আলিপুর দুয়ার |
গত দু’মাসে চিতাবাঘের হামলায় চা বাগানের ৪ জন শ্রমিক জখম হয়েছেন। চিতাবাঘ ধরতে বন দফতর থেকে চা বাগানের নানা কোণে তিনটি খাঁচা পাতা হয়েছে। গাছ থেকে চা পাতা তোলার সময়ে বনকর্মীরা বন্দুক দিয়ে পাহারা দিচ্ছেন। এমন নজরদারির মধ্যে রবিবার ডুয়ার্সের চুয়াপাড়া চা বাগান থেকে একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ চিতাবাঘের পচাগলা দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বনকর্তাদের অনুমান, চিতাবাঘটির বয়স হবে অন্ততপক্ষে দশ বছর। এদিন সকালে বাগানের ২৪ নম্বর সেকশনে স্প্রে করতে গিয়ে শ্রমিকেরা মৃতদেহ পচে যাওয়ার দুর্গন্ধ পান। খবর পেয়ে চা বাগানেই পাহারায় থাকা বনকর্মীরা সেখানে গিয়ে চিতাবাঘটির দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। চিতাবাঘের দেহে কোনও ক্ষতচিহ্ন না-মেলায় কী করে সেটির মৃত্যু হল তা নিয়ে ধন্দ সৃষ্টি হয়েছে। |
|
ছবি: নারায়ণ দে |
পরিবেশপ্রেমীদের সন্দেহ, চিতাবাঘের হামলায় অতিষ্ঠ বাসিন্দারা কেউ কীটনাশক জাতীয় খাবার খাইয়ে সেটিকে মেরে ফেলেছেন। এদিন রাজাভাতখাওয়ায় ময়নাতদন্তের সময়ে চিতাবাঘটির পেটে কোনও খাবারের চিহ্ন মেলেনি। মৃত্যুর কারণে খতিয়ে দেখতে বন দফতরের পক্ষ থেকে গুয়াহাটিতে ভিসেরা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপ ক্ষেত্র অধিকর্তা রাজেন্দ্র জাখর বলেন, “অন্তত ৪-৫ দিন আগে চিতাবাঘটির মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।তবে বাইরে থেকে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। দাঁত ও নখ অক্ষত রয়েছে। ভিসেরা রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব হবে।” চুয়াপাড়া চা বাগানের সহকারী ম্যানেজার কমর সিদ্দিকী বলেন, “শ্রমিকেরাও চিতাবাঘের মৃত্যুর খবর দেন আমাদের। তবে কী ভাবে মারা গেল সেটা বনকর্মীরাই বলতে পারবেন।” গত দু’মাস ধরে ওই চা বাগানে চিতাবাঘের হানা মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। শ্রমিকেরা চা বাগানের নির্জন এলাকায় পাতা তোলার কাজে যেতে পারছিলেন না। একা চা বাগানে কাউকে দেখলেই চিতাবাঘের হামলার ঘটনা ঘটছিল। তার বাইরে ছাগল থেকে মুরগি খোওয়া যাওয়ার ঘটনা ছিলই। এই পরিস্থিতিতে চা বাগানের কর্মীরা কাজে যেতে আপত্তি জানালে বাগান কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে বন দফতর পাহারার ব্যবস্থা করে। পানা রেঞ্জের বনকর্মীদের উপস্থিতিতে পাতা তোলার কাজ শুরু হয়। ১ অগস্ট তিনটি এলাকায় খাঁচাও পাতা হয়। তার পরেও কী করে বনকর্মীদের অগোচরে চিতাবাঘটির মৃত্যু হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত বলেন, “চা বাগানে চিতাবাঘের মৃত্যুর ঘটনা শোনা গেলেও কী কারণে চিতাবাঘগুলির মৃত্যু ঘটছে তা জানা যায়নি। চুয়াপাড়া চা বাগানে চিতাবাঘটি ধরার জন্য বনকর্মীরা কয়েক দিন ধরে নজর রাখলেও শেষ পর্যন্ত পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার হল। আমাদের সন্দেহ, চিতাবাঘের হানায় বিরক্ত হয়ে বিষাক্ত টোপ দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।” |
|
|
|
|
|