|
|
|
|
পানমশলায় পলিপ্যাক বন্ধ করতে সচেতনতার অভিযান |
মিলন দত্ত • কলকাতা |
শীর্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরে ছ’মাস অতিক্রান্ত। গুটকা-খৈনি-পানমশলা এখনও প্লাস্টিক প্যাকেটেই অবাধে বিকোচ্ছে রাজ্য জুড়ে। গ্রাম-গঞ্জ-মফস্সল তো বটেই, খাস কলকাতাও বাদ নয়!
নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার রুখতে পরিবেশমন্ত্রী ইতিমধ্যেই কলকাতায় কয়েকটি বাজারে অভিযান চালিয়েছেন। তাতে অবশ্য খুব একটা কাজ হয়নি। নিষিদ্ধ পলিব্যাগের কয়েক জন উৎপাদক ও মজুতদারকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। পর্ষদের এক অফিসার বলেন, পরিত্যক্ত পলিব্যাগ বর্ষার সময়ে নর্দমায় আটকে নিকাশিকে বিপর্যস্ত করে দেয়।
এবং সেই বিপর্যয়কে আরও ঘোরালো করে তোলে গুটকা-পানমশলার ফেলে দেওয়া লক্ষ লক্ষ প্লাস্টিক পাউচ। তাই আদলতের রায় কার্যকর করতে এ বার ‘কঠোর’ ব্যবস্থা নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার পলিপাউচে গুটকা
বিক্রি বন্ধের অভিযান শুরু করতে চান কলকাতা থেকেই। তার আগে অবশ্য নির্দেশ-লঙ্ঘনকারীদের একটা সুযোগ দিতে চাইছেন তিনি। মন্ত্রীর কথায়, “ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতন করতে প্রথমে একটা সুসংহত প্রচার অভিযান চালাব।”
গুটকা, পানমশলা বা খৈনির মতো তামাকজাত নেশার দ্রব্য প্লাস্টিক প্যাকেটে ভরে বিক্রি করা যাবে না বলে গত ডিসেম্বরে রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজস্থান হাইকোর্টের এক রায়ের বিরুদ্ধে গুটকা উৎপাদকেরা সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা করেছিলেন, তার প্রেক্ষিতেই বিচারপতি জিএস সিংভি এবং বিচারপতি এ কে গঙ্গোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের এই নির্দেশ। উৎপাদকদের বক্তব্য ছিল: প্লাস্টিক পাউচ বন্ধ করে দিলে শিল্পটাই বন্ধ হয়ে যাবে। যা শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, “সেটা বরং ভাল!” গুটকার দাম বাড়লে মানুষের মঙ্গল হবে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি।
এর পরেই ডিভিশন বেঞ্চ গুটকা-খৈনি-পানমশলার বিপণনে প্লাস্টিক প্যাকেট নিষিদ্ধ করে জানিয়ে দেয়, চলতি বছরের পয়লা মার্চ থেকে নির্দেশটি কার্যকর করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের রায় পশ্চিমবঙ্গে যথাযথ ভাবে বলবৎ করতে গত ৩০ জুন একটি নির্দেশ জারি করে রাজ্য পরিবেশ দফতর। তাতে বলা হয়, কলকাতা-সহ রাজ্যের সর্বত্র গুটকা-পানমশলা-খৈনির মতো তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করতে হবে কাগজের প্যাকেটে। এ দিকে নজর রাখার জন্য দফতরের তরফে সমস্ত পুরসভা, জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েতকে বার্তা পাঠানো হয়েছে। বিধি ভাঙলে দোকানের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল, এমনকী সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় এফআইআরও করা যাবে। তার পরে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
তবে এখনও ওই নির্দেশেই থমকে রয়েছে প্রশাসনের তৎপরতা। মন্ত্রী বলছেন, “গুটকা, পানমশলা ইত্যাদির কোনওটাই পশ্চিমবঙ্গে উৎপাদিত হয় না। আমাদের তাই এ রাজ্যে ওগুলোর আমদানি ও বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। একটা সচেতনতা অভিযান চালানোর পরে সে কাজ আমরা শুরু করব।” প্লাস্টিক পাউচে গুটকা ইত্যাদি বিক্রি নিয়ন্ত্রণে উত্তরবঙ্গে অবশ্য একটা চেষ্টা হয়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভা ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের যৌথ উদ্যোগে শহরের প্রতিটি দোকান থেকে পরিত্যক্ত পাউচ সংগ্রহের ব্যবস্থা হয়। সেই সব বর্জ্য প্যাকেট পিচের সঙ্গে মিশিয়ে রাস্তা নির্মাণে কাজে লাগানো হয়েছে। |
|
|
|
|
|